রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। ভাইরাসজনিত এ মারাত্মক রোগের কারণে শঙ্কা বাড়ছে মানুষের মনে। তবে শুরু থেকে সচেতন থাকলে জটিলতা অনেকটাই এড়ানো সম্ভব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এরই ধারাবাহিকতায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে সক্রিয় ও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাঠে নেমে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু হাসনাত মোঃ মহিউদ্দিন মুবিন। শনিবার (১৫ জুলাই) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের মধ্যে ও উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ডেঙ্গুবিষয়ক সচেতনতামূলক এ কার্যক্রম চালান তিনি। এসময় তিনি বলেন, এ বছর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দিয়েছে। ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলাকে ডেঙ্গু মুক্ত রাখতে কী করতে হবে তা সবার জানা দরকার, বোঝা দরকার যে ডেঙ্গু কতটা ভয়ংকর হতে পারে। যতক্ষণ না পর্যন্ত আমরা সঠিকভাবে জানতে পারব আমাদের কী করা উচিত, কোনো লাভ হবে না। শুধু শুনলাম কিন্তু বুঝলাম না বা যা করা দরকার সে কাজটা করলাম না, তাহলে কিন্তু লাভ হবে না। স্ব স্ব অবস্থান থেকে সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমেই এই সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব। এলাকার সচেতন সমাজকে ডেঙ্গু সচেতনতামূলক কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হওয়া জরুরি বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘ডেঙ্গু কোনো ছোঁয়াচে রোগ নয়। এটা একধরনের ভাইরাসজনিত মারাত্মক রোগ, যা কেবল এডিস মশার কামড়ের মাধ্যমে মানব দেহে প্রবেশ করে এবং মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়। এই ভয়ংকর রোগ থেকে নিজেদের ও পরিবারের সদস্যদের বাঁচাতে নিজেদের আশপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। এডিস মশা নিধন এবং এডিশ মশা যাতে জন্মাতে না পারে সে বিষয়গুলোর উপর সজাগদৃষ্টি রাখতে হবে। ডেঙ্গু রোধ করার জন্য কোনো ভ্যাকসিন নেই। মশার কামড় থেকে বাঁচা এবং মশার সংখ্যা হ্রাস করাই এ রোগ থেকে রক্ষার সর্বোত্তম পদ্ধতি। এখন বর্ষাকাল, থেমে থেমে প্রায়ই বৃষ্টি হচ্ছে। এ জন্যে কোনো জায়গায় পানি জমে রয়েছে কিনা দেখা বা পানি জমতে পারে এমন জায়গার দিকে নজর দিতে হবে। ফুলদানি, ক্যান এই জাতীয় জিনিস নিয়মিত পরীক্ষা করা, খালি করা বা পরিবর্তন করতে হবে। বাড়ির আশেপাশে জমা পানি থাকলে পরিষ্কার করতে হবে। মশার কামড় এড়াতে লম্বা হাতা শার্ট এবং প্যান্ট ও মোজা পরতে হবে, খোলা জানালায় মসকিউটো নেট লাগাতে হবে, রাত্রে ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহার করতে হবে, মশা তাড়ানো ক্রিম বা ধুপ ব্যাবহার করা যেতে পারে। মনে রাখতে হবে এডিশ মশার বংশবিস্তার রোধই ভাইরাসজনিত এই মারাত্মক রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার এরকম উপায়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ, অত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. শঙ্খজিৎ সমাজপতি, ডা. অরুপ সিংহ, ডা. তরেকা রায়হানা জুঁই, ডা. তাসনোভা আজিজ নোভা, ইউনানি মেডিকেল অফিসার ডা. সোহেল রানা, উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক মোঃ শাহ আলম, উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মহিউদ্দিন, এ এইচ রকিব প্রমুখ।