‘পুলিশের বিশেষ মনিটরিং টিম’ ঈদুল আযহাকে ঘিরে বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়ায় দৌরাত্ম বেড়েছে জাল নোট ও ছিনতাইকারী চক্র

লেখক: স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১ বছর আগে

Spread the love

বছর জুড়েই রাজধানীসহ সারাদেশে কমবেশি সক্রিয় থাকে জাল নোট তৈরির বেশ কয়েকটি চক্র। চলমান সব ধরনের নোট জাল করে নানা কৌশলে তা বাজারে ছাড়ছে চক্রগুলো। এছাড়া ছিনতাইকারী, পকেটমার ও নারী চোরের সক্রিয় কিছু চক্র কাজ করছে। তবে ঈদকে সামনে রেখে জাল নোট তৈরির চক্রগুলো সব থেকে বেশি সক্রিয় থাকে। যে কোনো উৎসবকে প্রাধান্য দেয় এই চক্রগুলো। এ সময় তারা নানা কৌশল অবলম্বন করে বাজারে মোটা পরিমাণে জাল নোট ছড়ানোর চেষ্টা করে। তার সাথে পাল্লা দিয়ে নারী ও পুরুষের কিছু ছিনতাইকারী এবং চোরের চক্র হাট-বাজার ও মার্কেটগুলোতে সক্রিয় হয়। এই চক্রগুলো বিভিন্ন কলা-কৌশলে সাধারণ মানুষদের টাকা-পয়সা ছিনতাই করে নিয়ে যায়। ছোট ছোট বিভিন্ন গ্রæপে ভাগ হয়ে টার্গেটকৃত ব্যক্তি অথবা প্রতিষ্ঠানের আশে পাশে ঘুর ঘুর করতে থাকে এবং সুযোগ পেলেই কার্য হাসিল করতে দেরি করে না। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতেও কিছু চক্র সক্রিয় থাকতে দেখা যায়। ব্যাংকে আসা গ্রাহকদের মধ্যে থেকে এক দুইজনকে টার্গেট করে তার আসে পাশে চক্রের সদস্যরা সুযোগ খুঁজতে থাকে। কিভাবে তাকে বোকা বানিয়ে টাকা নিয়ে লাপাত্তা হতে পারে। জাল নোট চক্রের কারণে ঈদকে সামনে রেখে আতঙ্ক বিরাজ করছে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের মধ্যে। কারণ ঈদকে সামনে রেখে বিভিন্ন মার্কেটের ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের টার্গেট করে চক্রটি। গত ২১ জুন বুধবার দুপুরে কুমিল্লায় পথচারী নারীর ব্যাগ থেকে টাকা চুরি করতে গিয়ে পুলিশের হাতে আন্তঃজেলা নারী চোর চক্রের সাত সদস্য আটক হয়। এই বিষয়ে কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান বলেন, বুধবার দুপুরে কুমিল্লা নগরীর টমসমব্রীজ এলাকায় গৃহবধু জান্নাতুল ফেরদৌসকে একা পেয়ে তার সাথে বিভিন্নভাবে কথা বলে সম্পর্ক তৈরীর চেষ্টা করেন চোর চক্রের সদস্যরা। এক পর্যায়ে ব্যাগ থেকে নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন নেয়ার চেষ্টা করলে গৃহবধু জান্নাতুল ফেরদৌস চোর বলে চিৎকার শুরু করে। পরে কোতয়ালী মডেল থানার টহল পুলিশ বোরকা পুরিহিত সাত নারীকে আটক করে। জাল টাকার চক্র এবং ছিনতাইকারীদের ধরতে বুড়িচং এবং ব্রাহ্মণপাড়া থানার পক্ষ থেকে বিভিন্ন হাট-বাজার গুলোতে পুলিশের মনিটরিং টিম মোতায়েন করা হয়েছে। মনিটরিং টিমের সদস্যরা হাট-বাজারগুলোতে টহল অব্যাহত রাখছে। যাতে করে কোন ক্রেতা কিংবা বিক্রেতা এই চক্রের হাতে সর্বশান্ত না হয়। ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে মনিটরিং জোরদার করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মোতাবেক বিভিন্ন হাট-বাজারে জাল টাকা সনাক্ত করার জন্য তাদের প্রতিনিধি ইজারাদারের রুম থাকবে। এছাড়া ব্যাংকগুলোতে যেন কোন চোর ও ছিনতাইকারী চক্র প্রবেশ করতে না পারে এবং গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা পয়সা ছিনতাই করতে না পারে সেই বিষয়েও মনিটরিং বৃদ্ধি করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন ঈদ উপলক্ষে জাল টাকার বিষয়ে ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নির্দেশনায় দেশের ৫৬টি বাণিজ্যিক ব্যাংককে আসল নোটের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সংবলিত ভিডিও চিত্র প্রদর্শনের জন্য বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক বুড়িচং শাখা ব্যবস্থাপক ও সিনিয়র এসিসস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মোঃ আতাউর রহমান বলেন,বাংলাদেশ ব্যাংকের নিদের্শনা অনুযায়ী আমরা হাট-বাজারগুলোতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছি। সেই আলোকে আমাদের টিম কাজ করবে। বুড়িচং থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ইসমাইল হোসেন জানান, বিভিন্ন হাট-বাজারের জন্য আলাদা টিম করা হয়েছে। তারা প্রত্যেকটি হাট-বাজারে নজর রাখবে এবং ঘুরে ঘুরে দেখবে, যেন ছিনতাইকারী ও জাল টাকার চক্ররা কোন ধরনের অঘটন ঘটাতে না পারে। এ ব্যাপারে পুলিশ শক্ত অবস্থানে রয়েছে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। ব্রাহ্মণপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মাহমুদুল হাসান রুবেল বলেন, ঈদুল আযহাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন হাট বাজারে আমাদের পুলিশের মনিটরিং টিম আছে এবং ব্যাংকগুলোকে বলা হয়েছে হাসিল ঘরে জাল টাকা সনাক্ত করার মেশিন নিয়ে থাকার ব্যবস্থা রাখতে।

  • বুড়িচং
  • ব্রাহ্মণপাড়া