‘সামান্য বৃষ্টিতেই জলাশয়’ জনদূর্ভোগের অপর নাম কুমিল্লা-বুড়িচং-মীরপুর সড়ক

লেখক: স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ৪ মাস আগে

Spread the love

কুমিল্লার বুড়িচং বাজার যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের সাথে মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের গভীর সর্ম্পক রয়েছে। যে অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা যত উন্নত সে অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার মান তত উন্নত। সড়ক পথের উন্নয়নের পূর্বে মানুষ নৌ-পথে চলাচল করতো। মালামাল আনা-নেওয়া থেকে শুরু করে একস্থান থেকে অন্যস্থানে যাতায়াতের জন্য নদী পথই একমাত্র মাধ্যম ছিল। তখন নৌ-ঘাট এলাকায় বেশি জনবসতি গড়ে উঠেছে এবং বিভিন্ন হাট- বাজার এবং গঞ্জের গোড়াপত্তন হয়েছিল। সময়ের বিবর্তনের সাথে সাথে যানবাহনে টেকনোলজির উন্নতির ফলে সড়ক পথের বিকাশ ঘটে। ফলশ্রæতিতে অনেক হাট- বাজার এবং গঞ্জের বিলুপ্তি ঘটেছে। হাট- বাজার গুলো সড়ক ও মহাসড়কের পাশে গড়ে উঠতে থাকে এবং কলকারখানার বিস্তার ঘটে। কলকারখানার বিস্তার হওয়ায় এবং হাট-বাজার স্থাপিত হওয়ার ফলে সড়কের পাশে ক্রামান্বয়ে জনবসতি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠতে থাকে। তাই বর্তমান সময়ে সড়ক পথের গুরুত্ব অত্যাধিক। কুমিল্লা শাসনগাছা থেকে বুড়িচং ব্রাহ্মণপাড়া হয়ে মীরপুর এম এ গণি সড়কটি বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া দুই উপজেলার মানুষের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন প্রতিকূলতার কারণে এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি এখন জনদূর্ভোগে পরিনত হয়েছে। বিভিন্ন বাজারে অটোরিক্সা ও সিএনজি চালিত অটোরিক্সা স্ট্যান্ড স্থাপন করায় এবং ফুটপাতগুলো দখল হয়ে যাওয়ায় যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে ঘন্টার পর ঘন্টা দূর্ভোগ পোহাতে হয়। বিশেষ করে ভরাসার বাজার, বুড়িচং বাজার, সাহেবাবাদ বাজার, ব্রাহ্মণপাড়া সদর বাজার চান্দলা বাজারসহ বিভিন্ন বাজারগুলোর সড়কের উপর থেকে স্ট্যান্ডগুলো অন্যত্র সরিয়ে ফেললে এবং ফুটপাত থেকে হকারদের উঠানোর ব্যবস্থা করলে হয়তো যানজটের কবল থেকে দুই উপজেলার মানুষ মুক্তি পেত। তবে সবচেয়ে বেশি দূর্গতি পোহাতে হয় বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া বাজারটি পার হতে। বুড়িচং বাজারের কলেজ গেইট থেকে শুরু করে হাসপাতাল গেইট পর্যন্ত সড়কের বিভিন্ন স্থানে খানা খন্দকের সৃস্টি হয়ে আছে।সামান্য একটু বৃষ্টি আসলে সড়কগুলো যেন জলাশয়ে পরিনত হয়। পানি নিঃষ্কাশনের ড্রেনগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ায় উপজেলা আওয়ামীলীগ অফিসের সামনে প্রায় সময় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। তাছাড়া বুড়িচং উত্তর বাজার এলাকার সড়কটিতে বারোমাসই পানি লেগে থাকে। বাজারের মাছ ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন এলাকা থেকে পিকআপ ও ট্রাকে করে মাছ আনে এবং ময়লা পানি দীর্ঘ দিন ধরে সড়কের উপর ফেলার কারণে বড় বড় গর্তে পরিনত হয়ে সব সময় কর্দমাক্ত হয়ে থাকে। এতে প্রায় সময় দূর্ঘটনা ঘটতে দেখা যায়। স্থানীয় ভোক্তভোগীরা জানায়, এই সমস্যা সমাধানের জন্য বাজার কমিটি ও উপজেলা প্রশাসনের নিকট বার বার আবেদন করেও সুষ্ঠ সমাধান পাওয়া যায় নি। তারা দিনের পর দিন আশ্বাস প্রদান করে যাচ্ছেন, তবে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। বুড়িচং বাজারের যানজট থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য বাজারের পশ্চিম পাশ দিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ অফিস থেকে কলেজ গেইট পর্যন্ত বাইপাস সড়ক করার ব্যাপারে দীর্ঘদিন দাবী জানিয়ে আসছে ভোক্তভোগী যাত্রীরা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-৫ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মুহাম্মদ আবু জাহের নির্বাচিত হওয়ার কয়েকদিন পর বাইপাস সড়ক নির্মাণ করার জন্য বুড়িচং বাজারের পশ্চিম পাশে দিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ অফিস হতে কলেজ গেইট এলাকাটি পরিদর্শন করেন এবং অচিরেই বাইপাস সড়কের ঘোষণা দিলেও আজও তা বাস্তবায়নের কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। অপর দিকে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা সদরের প্রবেশ পথ ভিশন হসপিটাল এলাকায় দীর্ঘ দিন বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হতো। পরবর্তীতে এই স্থানে ইটের সলিং করা হয় কিন্ত পানি নিঃষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় ইটের সলিংয়ের দুই মাথায় বৃষ্টি পানি জমাট বেঁধে থাকে। এতে যানবাহন চলাচলে ব্যাপক দূর্ভোগ পোহাতে হয়। সাধারণ যাত্রীরা জানান, জনপ্রতিনিধিরা ভোটের সময় কত হাজার প্রতিশ্রæতি প্রদান করে কিন্ত পাশ করার পর তাদের দেখা পাওয়াই মুশকিল হয়ে যায়। বুড়িচং বাজার এবং ব্রাহ্মণপাড়া বাজারের সড়কের খানা খন্দক ও বৃষ্টির পানিগুলো জমাট বাধার চিত্র তাদের চোখে পড়ে না। তাই দীর্ঘদিন ধরে জনদুর্ভোগ পোহালেও তার সঠিক কোন সমাধান হচ্ছে না। অপর দিকে কুমিল্লা-৫ আসনের এমপি’র নির্দেশক্রমে জিপির চাঁদা বন্ধ করা হলেও মাঝে মধ্যে সিএনজি অটোরিকশা চালকরা সিন্ডিকেট করে যাত্রীদের হয়রানী করে। সন্ধ্যা হলে কিংবা একটু বৃষ্টি হলে আগের মতোই অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করতে থাকে। কখনো কখনো শুক্রবার ও শনিবার বেশি যাত্রী দেখলেই ভাড়া দ্বিগুণ তিনগুণ করে ফেলে। তাই এই সড়কের সাধারণ যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘব করতে হলে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের দৃষ্টি প্রদান করা জরুরী হয়ে পড়েছে বলে সচেতন মহল মনে করেন।

  • বুড়িচং
  • ব্রাহ্মণপাড়া