‘সময় বাড়লে প্রক্রিয়াকরণ ব্যয়ও বাড়বে’ বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়ায় কোরবানির পশুর চামড়া কিনে বিপাকে প্রান্তিক ব্যবসায়ীরা

লেখক: স্টাফ রিপোটার
প্রকাশ: ৫ মাস আগে

Spread the love

কুমিল্লার বুড়িচংয়ে কোরবানির পশুর চামড়া কিনে বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। লবণের মূল্যবৃদ্ধি ও ঈদুল আজহার পর থেকে ট্যানারি মালিকরা চামড়া ক্রয়ের জন্য যোগাযোগ না করায় লোকসানের আশঙ্কা করছেন তারা। ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, গরুর চামড়া কিনে বিপাকে পড়েছে খুচরা ব্যবসায়ীরা। দিন যতই যাচ্ছে সংরক্ষণ খরচ বাড়ছে। কিন্ত বিক্রয় করতে পারছে না। বুড়িচং উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের উত্তরগ্রাম এলাকায় গিয়ে চামড়া ব্যবসায়ী রুবেল, নিশাত ও শাকিলের সাথে কথা বলে জানা গেছে ঈদুল আজহার দিন বুড়িচং উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়ন,বাকশীমূল ইউনিয়ন, শশীদল ইউনিয়নসহ বিভিন্ন গ্রাম থেকে ১৮ লক্ষ টাকা দিয়ে প্রায় দশ হাজার গরুর চামড়া সংগ্রহ করেছিলেন। ঈদের ১৬ দিন পেরিয়ে গেলেও বিক্রি করা সম্ভব হয়নি তাদের সংরক্ষিত গরুর চামড়া।তাদের সাথে আরো কথা বলে জানা যায়, প্রতি বছরের মতো এবারো কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ করেছেন তারা। বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবার কম দামে চামড়া সংগ্রহ করলেও ব্যয় বেড়েছে লবণে। এবার ৫০ কেজির প্রতি বস্তা লবণে ৭০০-৮০০ টাকা অতিরিক্ত দিয়ে ১৪০০-১৫০০ টাকায় কিনতে হয়েছে। আর গরুর চামড়া প্রতিটি গড়ে ৪০০-৬০০ টাকায় ক্রয় করা হয়েছে। এ চামড়া পরিবহন ও লবণ দিয়ে প্রক্রিয়াজাত করতে আরো ৩০০ টাকা ব্যয় হয়। সব মিলিয়ে চামড়াপ্রতি খরচ হচ্ছে ৯০০-৯৫০ টাকা। প্রক্রিয়াজাত করার পরও ট্যানারি মালিক ও বড় ব্যবসায়ীরা চামড়া কিনতে এখনো যোগাযোগ করেনি। সময় বাড়লে প্রক্রিয়াকরণ ব্যয়ও বাড়বে। এ কারণে অনেক ব্যবসায়ী চামড়া ফেলেও দিয়েছেন বলে জানা যায়। যার ফলে গত বছরের মতো এবারো লোকসানের আশঙ্কায় রয়েছেন প্রান্তিক চামড়া ব্যবসায়ীরা। চামড়া ব্যবসায়ী রুবেল, নিশাদ, শাকিল বলেন, ‘অনেক কষ্ট করে এলাকায় এলাকায় ঘুরে চামড়া সংগ্রহ করি আমরা। এরপর লবণ দিয়ে প্রক্রিয়াজাত করি। পুরো প্রক্রিয়াটি খুবই জটিল। তবুও আমরা দাম পাই না। তারা অভিযোগ করে বলেন, ‘সবই বড় ব্যবসায়ী ও ট্যানারি মালিকদের পকেটে চলে যায়। এভাবে চলতে থাকলে ব্যবসা করা কঠিন হয়ে যাবে। ছয়গ্রাম ছোট হরিপুর বাসিন্দা আরিফ হোসেন বলেন, প্রান্তিক ব্যবসায়ী বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে একটি একটি করে চামড়া এলাকা থেকে কিনে লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করাসহ তাদের প্রায় ৯০০-১০০০ টাকা খরচ হয়েছে তবুও ক্রেতা না আসার কারণে চামড়া বিক্রি করতে পারছে না।ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘তারা কিছু চামড়া বাদ দেয়। নানা অজুহাত দেখায়। আবার কোরবানির ঈদ এলেই লবণের দাম বেড়ে যায়। এসব কারণে কয়েক বছর ধরে আমাদের লোকসান হচ্ছে। এবার কী হবে জানি না।’ এদিকে মাদ্রাসা শিক্ষকরা বলছেন, এতিমদের জন্য সংগ্রহ করা চামড়ারও তেমন দাম মিলছে না। এতিম শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া স্বাভাবিক রাখতে সঠিক মূল্যে চামড়া বিক্রির নিশ্চয়তা চান এ শিক্ষকরা। অন্যান্য ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, বড় ব্যবসায়ীদের কাছে নিয়ে গেলে সিন্ডিকেট করে কম দামে প্রক্রিয়াজাত করা চামড়া কেনেন ব্যবসায়ীরা। যার ফলে প্রতি বছর চামড়ার ব্যবসায় লোকসান হচ্ছে। চামড়া শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতার দাবি জানান প্রান্তিক ব্যবসায়ীরা। মাওলানা তৌহিদুর রহমান জিহাদী বলেন, চামড়ার মূল্যে কমে যাওয়ায় সাধারনত অসহায় গরীব মিসকিন এবং এতিমখানার শিক্ষার্থীদের বেশি ক্ষতি হয়েছে। চামড়া বিক্রির টাকার কিছু অংশ গরীব মিসকিন পেত আবার কিছু অংশ এতিমখানায় প্রদান করা হতো।
এ বিষয়ে বুড়িচং নির্বাহী অফিসার ইউএনও সাহিদা আক্তার বলেন, আমি এই মাত্র শুনেছি।তবুও আমি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি চামড়া গুলো কিছু করা যায় কিনা।

  • বুড়িচং
  • ব্রাহ্মণপাড়া