গত কয়েকদিনের মৃদু শৈত্যপ্রবাহের প্রভাবে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় জেঁকে বসেছে শীত। কোথাও কোথাও মাঝারি ও গাঢ় কুয়াশা দেখতে পাওয়া গেছে। এতে গত কয়েকদিন ধরে তুলনামূলকভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে অতিমাত্রায় শীত অনুভূত হচ্ছে। ফলে জনজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা। তবে এরকম পরিস্থিতি থেকে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়ার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তর। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত কয়েক রাত থেকেই ভারী কুয়াশা পড়ার কারণে রাত থেকেই তাপমাত্রা কমতে শুরু করে। ভোরের দিকে এর তীব্রতা আরও বাড়ে। ভোর থেকে সূর্য না ওঠার কারণে বেলা বাড়লেও তাপমাত্রার তেমন তারতম্য ঘটে না। ফলে জনজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা। সকালের দিকে চায়ের দোকানগুলোতে কিছু লোক দেখা গেলেও রাস্তাঘাটে লোকসমাগম তেমন একটা দেখা যায় না। বেলা বাড়লে লোকসমাগম কিছুটা বাড়লেও উল্লেখযোগ্য হারে কম। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউই ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। রাতে ও দিনে খড়কুটো বা গাছের মরা ডালপালা জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন শীতার্তরা। ঘটন কুয়াশা, তীব্র শীত ও উত্তরের হিমেল বাতাসে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জনজীবন। এতে শীতজনিত রোগবালাই বাড়ছে। এদিকে তীব্র শীতের কারণে কাজকর্ম কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। গত কয়েকদিনের কনকনে শীতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন দরিদ্র ও হতদরিদ্র পরিবারের সদস্যরা। দিনে সূর্যের আলো না দেখা যাওয়ায় ও প্রচন্ড শীতের কারণে স্বাভাবিক কাজকর্মেও ব্যাঘাত ঘটছে। মাঠে খেটে-খাওয়া মানুষ পড়েছেন বিপাকে। স্থানীয় বাসিন্দা আবু কাউসার বলেন, গত কয়েকদিন ধরে ঘন কুয়াশার রাতে টিনের চালে বৃষ্টির ফোটার মতো শিশির ঝারার শব্দ শোনা যায়। গায়ে থাকা গরম কাপড়ও যেনো ঠান্ডা হয়ে আসে।সারাদিন সূর্যের উপস্থিতি তেমন একটা না থাকায় এ ক’দিন শীতের তীব্রতা অনেক বেড়েছে। জীবিকার তাগিদে বের হওয়া অটোরিকশা চালক ফিরোজ মিয়া বলেন, গত কয়েকদিন যাবত অনেক শীত পড়ছে। আজকে আরও কনকনে শীত। হিম শীতের মধ্যেই গাড়ি চালাতে বের হয়েছি। শীতে হাত-পা অবশ হয়ে আসছে। কিন্তু কী করবো জীবিকার তাগিদে কাজ করতে হচ্ছে। এদিকে এরকম শীতে স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু হাসনাত মোঃ মহিউদ্দিন মুবিন বলেন, শীত মৌসুমে শীতজনিত রোগ থেকে সুরক্ষা পেতে প্রয়োজন মত গরম কাপড় পরতে হবে। বিশেষ করে তীব্র শীতের সময় কান ঢাকা টুপি এবং গলায় মাফলার বা গলা ঢাকার মতো গরম কাপড় ব্যবহার করতে হবে। তাজা, পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ এবং পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। এসব খাবার দেহকে সতেজ রাখবে এবং রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করবে। তিনি আরও বলেন, এ সময়টাতে বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করাই শীতজনিত রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। এ জন্য শিশু ও বয়স্কদের দিকে বিশেষ যতœবান হতে হবে। এ ছাড়াও সব বয়সের মানুষকেই এই শীত মৌসুমে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।