কোটা সংস্কারের দাবিতে শুরু হওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রূপ বদলে দাঁড়ায় এক দফার আন্দোলনে। এতে স্বৈরশাসক হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। সরকার পতনের খবরে সারাদেশে সহিংস ঘটনা ঘটতে থাকে। যার ফলে সারাদেশে আইনশৃংখলা পরিস্থতির অবনতি ঘটে। এতে ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হওয়ায় জনজীবনে নেমে আসে স্থবিরতা। তবে অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনের পর থেকে সারাদেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে উঠছে। এরই ধারাবাহিকতায় কুমিল্লার বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়ায় প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা মাঠে সরব থাকায় উপজেলার সাধারণ মানুষের মধ্যে ফিরে এসেছে প্রাণচাঞ্চল্য এবং কর্মচাঞ্চল্যতা। নিয়মানুযায়ী চলছে সরকারি বেসরকারি অফিস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। মানুষ তাদের নিত্যদিনের কাজ কর্মে স্বাভাবিক ভাবে আসা যাওয়া করছে। সরেজমিন স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, টানা বন্ধ ও আন্দোলনের শেষে অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনের পর প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যৌথ মহড়ায় উপজেলার সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। সড়কগুলোতে বেড়েছে যানবাহনের সংখ্যা। নির্ভয়ে যে যার কাজে বের হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। নিয়মানুযায়ী চলছে সরকারি বেসরকারি অফিস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। দোকানপাটে বেড়েছে ক্রেতার সংখ্যা। স্কুল ও কলেজ ব্যাগ কাঁধে শিক্ষার্থীরা ছুটছেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। সরবরাহ বাড়ায় কাঁচাবাজারে ফিরছে স্বস্থি। দলীয় বিশৃঙ্খলা না থাকায় নেই রাজনৈতিক অস্থিরতাও। স্থানীয় বাসিন্দা মো. নাজমুল হাসান বলেন, সরকার পতনের পর পর সারাদেশের মতো বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়ার পরিবেশেও একধরনের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার শপথ নেওয়ার পর প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও পুলিশের সমন্বয়ে এ উপজেলার সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্থি ফিরেছে। স্থানীয় বাসিন্দা আলমগীর হোসেন বলেন, সরকার পতনের পর সারাদেশে আইনশৃংখলা পরিস্থতির অবনতি ঘটে। এতে সাধারণ মানুষ এক ভীতিকর পরিস্থিতি পড়ে। তবে বর্তমানে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এ উপজেলায় অবস্থান নিলে ও স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করায় উপজেলার সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেরার ভরসা ফিরে আসে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স ম আজহারুল ইসলাম বলেন, সারাদেশের বিভিন্ন এলাকার ন্যায় ব্রাহ্মণপাড়ায় তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি। তবু সারাদেশের সহিংসতার ঘটনার খবরে সাধারণ মানুষের মধ্যে একধরনের শঙ্কার সৃষ্টি হয়েছিল। তবে গত কয়েকদিনে আমরা উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যৌথ মহড়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্থি ফিরেছে। সবাই এখন যার যার কাজে যোগ দিয়েছেন। পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাহিদা আক্তার বলেন, বুড়িচং উপজেলায় তেমন বড় ধরনের কোন ক্ষয়ক্ষতি হয় নাই। আমরা শুরু থেকেই নিয়মিত অফিস করতে পেরেছি। সেনাবাহিনী ও পুলিশবাহিনীর যৌথ সহযোগীতায় স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু রয়েছে। সেনাবাহিনী তাদের ক্যাম্প আমাদের এখানে নিয়ে আসতেছে। আশা রাখি আগামী দিনগুলোতেও কোন ধরনে সমস্যা হবে না। সাধারণ মানুষ নির্বিঘ্নে সকল প্রকার সেবা গ্রহন করতে পারবেন।