চলতি বছর বন্যার কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফসলের মাঠ ও খামার। এ কারণে আলু, পেঁয়াজ ও ডিমের ওপর শুল্ক কমানোর সুপারিশ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ট্যারিফ কমিশন।
ট্যারিফ কমিশনের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে আলু ও পেঁয়াজের ওপর বিদ্যমান শুল্ক-কর কমানো হয়। সে সময় ডিমের ওপর প্রযোজ্য শুল্ক প্রত্যাহারেরও সুপারিশ করা হয়েছিল। তবে তা বাস্তবায়ন হয়নি।
এমন অবস্থায় ডিমের দাম ডজনপ্রতি বেড়ে ১৮০-১৮৫ টাকা হয়েছে। এতে ফের ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণে শুল্ক প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে ট্যারিফ কমিশন। ডিম আমদানিতে বর্তমানে ৩৩ শতাংশ শুল্ক-কর দিতে হয়।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) প্রতিষ্ঠানের বাণিজ্যনীতি বিভাগ থেকে দেওয়া এক চিঠিতে এনবিআরকে আবারও অনুরোধ করা হয়েছে বলে এনবিআর সূত্রে জানা গেছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ২৯ আগস্ট বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন থেকে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য পেঁয়াজ, আলু ও ডিম আমদানিতে শুল্ক-করাদি হ্রাসকরণ বিষয়ে একটি বিশ্লেষণাত্মক প্রতিবেদন এনবিআরে পাঠানো হয়। সুপারিশ অনুযায়ী ৪ সেপ্টেম্বর এনবিআর থেকে আলু ও পেঁয়াজ আমদানিতে শুল্ক হ্রাস করা হয়েছে। এতে স্থানীয় বাজারে এ দুটো পণ্যের মূল্যে স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে বলে দেখা গেছে।
অন্যদিকে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ডিম আমদানিতে কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী শুল্ক ছাড়ের বিষয়ে এখনো কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। সম্প্রতি স্থানীয় বাজারে ডিমের পর্যাপ্ত সরবরাহে ঘাটতিজনিত কারণে এর দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে। টিসিবির হিসাব অনুযায়ী, গত এক মাসে ডিমের স্থানীয় মূল্য ১৫ শতাংশ এবং ১ বছরে ২০ দশমিক ৪১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন জেলায় সাম্প্রতিক বন্যার কারণে পোলট্রি শিল্পের ক্ষতি হওয়ায় এবং পরিপূরক অন্য খাদ্য পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ায় বাজারে ডিমের সরবরাহ ব্যবস্থায় এক ধরনের চাপ সৃষ্টি হয়েছে।
এ অবস্থায় স্থানীয় বাজারে সরবরাহ বৃদ্ধির জন্য দেশের পোলট্রি শিল্পে সুরক্ষা বিবেচনায় সুনির্দিষ্ট মেয়াদে শুল্ক ছাড়ের মাধ্যমে ডিম আমদানির অনুমতি প্রদান করা হলে পোলট্রি শিল্পের ওপর নেতিবাচক প্রভাবের সম্ভাবনা কম। শর্ত সাপেক্ষে আমদানিযোগ্য পণ্য হওয়ায় সরকারের অনুমতি ছাড়া ডিম আমদানি করা যায় না।
গত বছরগুলোতে ডিম আমদানি না হওয়ার কারণে স্বল্প মেয়াদে এই শুল্ক-করাদি ছাড়ের ফলে সরকারের রাজস্ব ক্ষতিরও আশঙ্কা নেই। বর্তমানে ডিম আমদানিতে ৩৩ শতাংশ শুল্ক-কর অব্যাহত রয়েছে। কমিশন মনে করে, আমদানি পর্যায়ে ডিমের ওপর শুদ্ধ-করাদি স্বল্প সময়ের জন্য প্রত্যাহার করা হলে সাধারণ জনগণ স্বস্তির জায়গা খুঁজে পাবে। এ অবস্থায় স্থানীয় বাজারে উচ্চ মূল্যের প্রবণতা রোধে এবং বৃহৎ জনস্বার্থে উপর্যুক্ত সূত্রে প্রেরিত প্রতিবেদন অনুযায়ী অত্যাবশ্যকীয় খাদ্য হিসেবে স্বীকৃত ডিমের উপর সুনির্দিষ্ট মেয়াদে শুল্ক-কর প্রত্যাহার করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুনরায় অনুরোধ করা যাচ্ছে।সূত্র: জাগো নিউজ