একটু বিবেকবান হোন, মানুষের কথা চিন্তা করেন: জেলা প্রশাসক

লেখক: স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ৯ মাস আগে

Spread the love

হঠাৎ করে পেঁয়াজের আকাশছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধির কারণে ব্যবসায়ীদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে কুমিল্লার জেলা কুশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান বলেছেন, ‘এক রাতের ব্যবধানে কী এমন ঘটলো, আপনারা পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ করে ফেললেন! এটা তো মানুষকে জিম্মি করার শামিল। সব কিছুরই একটা সীমা থাকে। আপনারা সীমা অতিক্রম করেছেন। তা কিছুতেই হতে পারে না। সামনে নির্বাচন, মানুষ এখন ভোটমুখী। এর মধ্যেই পেঁয়াজ নিয়ে একটা অরাজকতা তৈরি হলো। আপনাদের কার কাছে কতটুকু পেঁয়াজ মজুত আছে, আমাদের কাছে সব তথ্য আছে। পাইকারী এবং খুচরা যারাই পেঁয়াজ বিক্রি করবেন, তাদের কাছে রশিদ থাকতে হবে। এরপর ন্যায্যমূল্যে বিক্রি না করলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। অভিযানে শুধু জরিমানাই করা হবে না। আইনে অন্য যে যে শাস্তির বিধান রয়েছে, তা প্রয়োগ করা হবে। সোমবার (১১ ডিসেম্বর) কুমিল্লা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে কুমিল্লার পেঁয়াজ ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন বাজারের সভাপতি-সম্পাদকসহ নেতৃস্থানীয়দের সাথে মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক এসব কথা বলেন। এ সময় কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পঙ্কজ বড়–য়া, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সামসুল তাবরিজ, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কুমিল্লা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোঃ আসাদুল ইসলাম, কুমিল্লা দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্লাহ খোকন, আলহাজ্ব ছানাউল হক, চকবাজার মার্চেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি আলী আশরাফসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় জেলা প্রশাসক বলেন, আপনারা নিশ্চয়ই কেউ সরকারের চাইতে শক্তিশালী নন। আপনারা যারা এখানে আছেন, তাদেরকে ‘জিরু’ বানাতে সরকারের এক মিনিটও লাগবে না। এমন একটা সময়ে এই অরাজকতা তৈরি করলেন, যখন সরকার নির্বাচনমুখী। এই সুযোগাটাকে কাজে লাগিয়ে একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার জন্য এ কাজটা করেছেন। এক রাতের ব্যবধানে কী এমন ঘটে গেলো, আপনারা ১ শ’ টাকা জিনিস ২ শ’ টাকা বিক্রি করছেন! নিজের বিবেকের কাছে প্রশ্ন করেন। অর্থের প্রয়োজন সকলেরই আছে। কিন্তু এ বিনিময়ে মানুষের যে অভিশাপ নিচ্ছেন তার কী হবে। একটু বিবেকবান হোন, মানুষের কথা চিন্তা করেন, দেশের কথা চিন্তা করেন। সভায় অভিযোগ ওঠে কুমিল্লার বিভিন্ন বাজারের ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি করলেও কাউকে রশিদ দিচ্ছেন না। মূলত দাম বেশির নেওয়ার কারণেই এ কাজটি করা হচ্ছে। এর জবাবে ব্যবসায়ীরা বলেন, গত দুইদিন যাবৎ তারা বেশি দামে যেখান থেকে পেঁয়াজ কিনছেন, সেখান থেকেই কোনো রশিদ দেওয়া হচ্ছে না। পরে সভায় সিদ্ধান্ত জানানো হয়, পেঁয়াজের মূল্য যৌক্তিক ও সহনশীল পর্যায়ে রাখতে হবে। না হলে অভিযান চালিয়ে কোনো অনিয়ম পাওয়া গেলে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। এসময় ব্যবসায়ীরা নির্দেশনা না মানলে প্রশাসনকে ‘হার্ডলাইনে’ যাওয়ার পরামর্শ দেন দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্লাহ খোকন। তিনি বলেন, সহ্যের সীমা অতিক্রম হয়ে গেছে। যা হওয়ার হয়েছে, এখন শুধরে যান। আপনাদের কারণে লজ্জায় পড়তে হয়। মানুষজন প্রশ্ন করে, পরিবারের লোকজনও প্রশ্ন করে, কেন এমন পরিস্থিতি? কোনো জবাব দিতে পারি না।

  • কুমিল্লা