“উপজেলা পরিষদ নির্বাচন” বুড়িচংয়ে গোমতীর দু’পাড়ে এবং ব্রাহ্মণপাড়ায় নবীন-প্রবীনের মধ্যে জয়-পরাজয়ের লড়াই

লেখক: স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ৫ মাস আগে

Spread the love

আগামী ২৯ মে তৃতীয় ধাপে কুমিল্লা জেলার বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এরই আলোকে ২৭ মে দুই উপজেলায় প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণার শেষ দিন। আগামীকাল রাত পর্যন্ত বিভিন্ন পদের প্রার্থীরা তাদের প্রচার-প্রচারণার কাজ চালাতে পারবে। গত ১৩ মে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতিক বরাদ্ধ দেওয়ার পর থেকে দুই উপজেলার বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় উঠান বৈঠক ও গনসংযোগের মাধ্যমে ভোটারদের নিকট নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করার চেষ্টা করেছে। ভোটারদেরকে বিভিন্ন প্রতিশ্রæতি প্রদান মাধ্যমে জনপ্রিয়তা অর্জনের জন্য সকল প্রার্থী নিজেদের কর্মী সমর্থক নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছে। বুড়িচং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রার্থী রয়েছে। গোমতী নদীর কারণে উপজেলাটি দুটি ভাগে বিভক্ত রয়েছে। দুই পাড়ের মানুষের মধ্যে আলাদা ইজম কাজ করছে। গোমতীর পশ্চিম পাড়ে রয়েছেন আপন দুই ভাই প্রার্থী। গোমতী নদীর পূর্ব পাড়ে রয়েছেন ২ জন প্রার্থী। তাই বুড়িচং উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে গোমতী নদীর দু’পাড়ে জয়-পরাজয়ের লড়াই চলছে। বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা আখলাক হায়দার তার কর্মী সমর্থকদের নিয়ে গোমতীর দুই পাড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। প্রত্যেকটি ইউনিয়নের রয়েছে তার কর্মী ও সমর্থক। অপর দিকে ছাত্রলীগের বুড়িচং উপজেলার সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার বাছির খান। দীর্ঘ দিন ধরে আখলাক হায়দারের সাথে মিলে মিশে রাজনীতি করেছেন। তাদের দুইজনের মধ্যে জামাই শ্বশুড়ের সর্ম্পক রয়েছে। নবীন রাজনীতিবিদ হিসেবে ইঞ্জিনিয়ার বাছির খান তার কর্মী সমর্থক নিয়ে উপজেলার প্রত্যেকটি গ্রাম-মহল্লা চষে বেড়াচ্ছেন। তাছাড়া সাবেক কুমিল্লা জেলা পরিষদের সদস্য হাজী তারেক হায়দার বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আখলাক হায়দারের আপন ছোট ভাই। কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন স্বপনের সমর্থনে হাজী তারেক হায়দার উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে সমান তালে প্রচার প্রচারণার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট রেজাউল করিম পূর্ব অভিজ্ঞতার আলোকে জয়ের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। গোমতী নদীর পূর্ব পাড়ে ভোটারদের ভাষ্য মতে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার বাছির খান তরুণ প্রজন্মের আইকন হিসেবে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এতে সাবেক উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট রেজাউল করিমের ভোট ব্যাংকে হানা দিয়েছে। অপর দিকে গোমতীর নদীর পশ্চিম পাড়ে বর্তমান চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা আখলাক হায়দারের ভোট ব্যাংকে হানা দিয়েছে তারই আপন ছোট ভাই কুমিল্লা জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য হাজী তারেক হায়দার। তাই ভোটারদের মধ্যে জল্পনা কল্পণার সৃষ্টি হয়েছে যে আগামী ৫ বছর বুড়িচং উপজেলা পরিষদের অভিভাবক হিসেবে কে জয়লাভ করবে। গোমতী নদীর পূর্ব পাড়ের প্রার্থীরা না গোমতী নদীর পশ্চিম পাড়ের প্রার্থীরা। এদিকে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা পরিষদের ৪ জন প্রার্থীর মধ্যে বর্তমান এমপির আপন ভাতিজা ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আবু তৈয়ব অপি এবং উপজেলা আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী ব্যারিষ্টার সোহরাব খান চৌধূরীর মধ্যে হাড্ডা হাড্ডি লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিভিন্ন কারণে ব্রাহ্মণপাড়া সদর ইউনিয়নের সাবেক ৩ বারের সফল চেয়ারম্যান হাজী জসিম উদ্দিন তার প্রার্থীতা প্রত্যাহার করায় ব্যরিষ্টার সোহরাব খানের কিছুটা সুবিধা হয়েছে বলে জানা যায়। তবে স্থানীয় এমপি আলহাজ্ব মুহাম্মদ আবু জাহের যদি নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে তবে ভোটের হিসাব নিকাশ হবে হাড্ডা হাড্ডি লড়াই এর মাধ্যমে আর যদি নিজের ভাতিজাকে জয়ী করতে হস্তক্ষেপ করে তাহলে ভোটের হিসাব নিকাশ হবে অন্যরকম। তারপরেও আবু তৈয়ব অপি ও ব্যরিষ্টার সোহরাব খান চৌধূরী ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের পাড়া মহল্লায় ভোটারদের মধ্যে আস্থা সৃষ্টি করতে পেরেছেন। অপর দিকে থেমে নেই বর্তমান ভারপ্রাপ্ত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম সুজন এবং বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা সাহেবাবাদ ডিগ্রি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি থেকে বহিস্কৃত ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সাধারণ সম্পাদক সরকার জহিরুল হক মিঠুন। বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে ভোটারদের নিকট সরকার জহিরুল হক মিঠুনের রয়েছে অন্যরকম আস্থা। দলীয় নেতা কর্মীদের সমর্থন ও সহযোগীতা পেলে হয়তো তিনিও হতে পারেন আগামী দিনের ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা পরিষদের অভিভাবক। স্থানীয় ভোটারদের ভাষ্যমতে আগামী ২৯ মে নবীন ও প্রবীনের মধ্যে চুড়ান্ত লড়াই হবে বলে মনে করছেন সাধারণ জনগণ।

  • বুড়িচং
  • ব্রাহ্মণপাড়া