বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়ায় দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা

লেখক: মোঃ বাছির উদ্দিন
প্রকাশ: ১ বছর আগে

Spread the love

কুমিল্লা জেলার বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ছোট বড় হাটবাজারে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা দিনদিন আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। দারিদ্রতা, দ্রব্যমূল্যের উর্ব্ধগতি ফলে লেখা-পড়া ছেড়ে সংসারের আয়-রোজগার বৃদ্ধির জন্য অল্প বয়সেই জড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন দোকান-পাট, রেস্টুরেন্ট, ফেরি ব্যবসা, ইট ভাটার কাজ, ওয়ার্কসপের কাজে। শিশু শ্রমিকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে বৃদ্ধি পাচ্ছে মাদকসেবীর সংখ্যা। অল্প বয়সে টাকার নেশায় বিভোর হওয়া শিশুরা বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ছে। যে বয়সে শিশুদের বইখাতা, কলম হাতে নিয়ে বিদ্যালয়ের যাওয়ার কথা সেই বয়সে শিশুরা হাতে তুলে নিয়েছে বাদামের ঝুড়ি, পাউরুটির ডালি, চায়ের কাপ, পাথর ভাঙ্গা হাতুড়ী ও ওয়েল্ডিংয়ের কাজ। আবার কেউ কেউ হোটেল বয়, রাজমিত্রীর সহকর্মী, মোটর গ্যারেজ, মুদি দোকানে পেটে ভাতে কাজ করছে। তাছাড়া অনেকেই ধানের কলের ধান মাড়াই, গৃহস্থালীর সকল কাজের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে জীবনের স্বপ্ন দেখছে। সরেজমিন মঙ্গলবার উপজেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে। আর্ন্তজাতিক নীতিমালা অনুযায়ী শিশু শ্রম সম্পূর্ন ভাবে নিষিদ্ধ থাকলেও প্রাকৃতিক বিপর্যয়, বন্যা, অনাবৃষ্টি, নদী ভাঙ্গন, কৃষি উপকরণ ও দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি, অর্থনৈতিক সংকট, দারিদ্র ও জনসংখ্যাবৃদ্ধির ফলে শিশুগণ তাদের শ্রম বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। অপর দিকে যে সমস্ত শিশু আজ জীবিকার সন্ধানে জীবন যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়ে হাড়ভাঙ্গা শ্রম দিচ্ছে তাদের বেশির ভাগই শিশুই বিভিন্ন কারণে নির্যাতিত নিপীড়িত হচ্ছে। শিশু শ্রম সর্ম্পকে কয়েকজন সমাজ সচেতন নাগরিকের সাথে আলাপ করলে তারা বলেন যে, শিশু শ্রমিকের বেতন তুলনামুলকভাবে কম হওয়ায় এবং কাজে কোন ফাঁকি না থাকায় সকলেই এদের কাজে নিয়োগ করতে আগ্রহী। পেটের দায়ে শিশুরা ১২-১৬ ঘন্টা শ্রম দেয়। জীবনে বাঁচার তাগিতে এসব শিশু শ্রমিকরা ১২/১৬ ঘন্টা শ্রম বিক্রি করে ভবিষ্যৎ কর্মদক্ষতা নষ্ট করে ফেলছে। অল্প বয়সে পরিশ্রম করার ফলে অনেকেই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এবং বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ কাজে সম্পৃক্ত থাকার ফরে কেউ কেউ অন্ধত্ব বা পঙ্গত্ব বরণ করছে। এমনকি আবার অনেকেই মৃত্যুবরণ করছে। বর্তমানে যে হারে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা বাড়ছে তাতে মনে হয় আগামীতে এই শিশু শ্রমক ও শিশুদের সমস্যা আরো প্রকট হয়ে দেখা দেবে। বর্তমান সরকার প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করেছেন এবং শিশুরা যেন বিদ্যালয় থেকে ঝড়ে না পড়ে সে জন্য উপবৃত্তি চালু করেছে। তাতেও বন্ধ হয়নি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু ঝড়ে পড়া। অভিভাবকদের সচেতনতার অভাবে এবং দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের তদারকীর অভাব ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঠিক ভাবে খোঁজ খবর না নেওয়ার ফলে শিশুরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠাণ থেকে ঝড়ে পড়ছে বলে সচেতন মহল মনে করেন।

  • বুড়িচং
  • ব্রাহ্মণপাড়া