৩ মাসেও দেশে আসেনি প্রবাসীর লাশ, অপেক্ষা ফুরায় না পরিবারের

লেখক: আতাউর রহমান
প্রকাশ: ১০ মাস আগে

Spread the love

সৌদি আরবের নাজরানের ইয়াদামা শহরের মরুভূমিতে গত ১৪ আগস্ট রহস্যজনকভাবে নিহত কাজী সালাউদ্দিন হিমন (৪৮) নামের এক বাংলাদেশী ব্যক্তির ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করেছিল সৌদি পুলিশ। মরদেহ উদ্ধারের তিন মাস পেরিয়ে গেলেও আজও দেশে আসেনি ওই প্রবাসীর লাশ। কবে তার লাশ দেশে আসবে জানেন না স্বজনরা। লাশ ফিরে পেতে তারা মাসের পর মাস আহাজারি করে যাচ্ছেন। নিহতের মরামুখ একবার দেখার আকুতি পরিবারের। নিহত হিমন কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার ষাইটশালা গ্রামের মৃত কাজী নাছির উদ্দিনের ছেলে। নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ভাগ্য বদলের স্বপ্ন নিয়ে কাজী সালাহউদ্দিন হিমন ২০১৯ সালের নভেম্বরে সৌদি আরবে যান। তারপর সৌদির বিখ্যাত কোম্পানি ব্রাঞ্চ ইসসাম অ্যান্ড কোম্পানিতে কাজে যোগ দেন। সবকিছু ঠিক-ঠাকই চলছিল। ঘটনার দিন গত ১৪ আগস্ট সৌদির নাজরানের ইয়াদামা শহরের মরুভূমিতে পাওয়া যায় প্রবাসী কাজী সালাউদ্দিন হিমনের ক্ষতবিক্ষত লাশ। তা দেখে সহকর্মীদের একজন তাঁর বড় মেয়ে ইলিনা আক্তার ইভাকে জানান। ছবি দেখে নিহতের মেয়ে ও পরিবারের সদস্যরা শনাক্ত করেন যে এটি কাজী সালাহউদ্দিন হিমনেরই মরদেহ। তারপর থেকে নিহতের লাশ দেশে ফিরিয়ে আনার নানারকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন নিহতের পরিবার। এদিকে তিনমাস গত হলেও এখনও বাংলাদেশে আসেনি প্রবাসীর লাশ। পরিবারের পক্ষ থেকে দফায় দফায় সৌদিতে বাংলাদেশ দূতাবাসে যোগাযোগ করা হলে ‘হিমনের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশি তদন্ত চলছে’—এর বেশি কিছু জানাতে পারেননি সৌদিতে অবস্থানরত বাংলাদেশী দূতাবাস । এ ব্যপারে নিহতের পরিবার আরও জানান, সৌদিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তা এমদাদুল হকের সঙ্গে কথা হয় পরিবারের। তিনি তাঁদের বলেন, ‘ সালাউদ্দিন হিমনের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশি তদন্ত চলছে। কিছুদিন পর আবারও তার সাথে যোগাযোগ করা হলে এমদাদুল হক বলেন, তিনি এখন আর সৌদি আরবে নেই। ইসলাম মোহাম্মদ নামের অন্য একজন এখন তাঁর দায়িত্বে আছেন। পরে ইসলাম মোহাম্মদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি নিহতের পরিবারকে বলেন, ‘আমরা পুলিশের প্রতিবেদন পাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছি। পুলিশ দূতাবাসের কর্মকর্তাদের নাজরানে যেতে বলেছে। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে সবকিছু পরিষ্কার হওয়া যাবে।’ এরপর থেকে অনেকদিন কেটে গেছে। পরে গত কিছুদিন আগে দূতাবাস নিহতের পরিবারকে জানায় সৌদি পুলিশি তদন্তে জানা গেছে হিমনের মৃত্যু স্বাভাবিক নয় তাকে হত্যা করা হয়েছে। হিমনের মরদেহ কবে ফিরবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে দূতাবাস নিহতের পরিবারকে জানায় হত্যাকারী শনাক্ত হওয়ার পর নিহতের লাশ পাঠানো হবে। এ নিয়ে নিহতের পরিবার প্রহর গুনছে লাশ ফেরত পাবার আশায়। তাদের এই অপেক্ষা যেন ফুরচ্ছে না। তারা এক অনিশ্চয়তায় মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। মুঠোফোনে কথা হয় নিহতের স্ত্রী ইয়াসমিন বেগম ও মেয়ে ইলিনা’র সাথে। তারা জানান, সৌদিআরব প্রবাসী কাজী সালাউদ্দিন হিমন নিহত হয়েছেন তিন মাসেরও বেশি দিন আগে। তার মৃত্যু স্বাভাবিক ছিল না, তাই পুলিশি তদন্তের কারণে এখনও তার মরদেহ দেশে পাঠানো হয়নি। তবে গত দশদিন আগে সৌদিআরবের বাংলাদশী দূতাবাস তাদের জানিয়েছে, সৌদি পুলিশ তদন্ত করে পেয়েছে ওই দেশে হিমনকে কে বা কারা হত্যা করেছে। তার মৃত্যু স্বাভাবিক ছিল না। হত্যাকারী শনাক্ত হওয়ার পরই লাশ দেশে পাঠানো হবে বলেও জানায় দূতাবাস।

  • ব্রাহ্মণপাড়া