রাজনীতির ক্ষমতা না থাকলে কাউকে সরাসরি সহযোগিতা করা যায় না….শওকত মাহমুদ

লেখক: স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১০ মাস আগে

Spread the love

সাংবাদিকতায় আসাটা কোন দূর্ঘটনা নয়। টাকার বিনিময় অন্যের ক্রোড়পত্র লিখে দিতাম। আমার লেখাটায় কাজ হতো। আমার লেখায় ভালো হাত ছিল। মুজিবুর রহমান খা সাহেব সকালে পত্রিকা পড়তেন আমি তাকে পত্রিকা পড়ে শুনাতাম। আমার ডাক নাম ছিল নিজাম। তিনি বলতেন নিজাম পত্রিকা পড়ো। সেই থেকে পত্রিকা পড়তে পড়তে আমার লেখালিখের প্রতি একটা আগ্রহ সৃষ্টি হয়। রিপোর্টের গঠন বিন্যাস এগুলো আমাকে খুব আকৃষ্ট করতো। সেই থেকে সাংবাদিকতার প্রতি আমার ঝোক। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অনার্সের প্রথম ব্যাচের ছাত্র। অনার্স ব্যাচের তখন আসন সংখ্যা ছিল ১৮টি। এই ১৮টি আসনের বিপরীতে ১৮শত ছাত্র ভর্তি পরিক্ষা দিয়েছিল। আমি ১৮শ ছাত্রের মধ্যে প্রথম হই। আমার পিতা আমাকে সাংবাদিকতায় পড়া লেখা করতে অনুৎসাহিত করতেন। তিনি আমাকে বললেন, তুমি অর্থনীতি নিয়ে পড়ালেখা করো। পড়ালেখা শেষ করে চাকুরী করতে পারবে। সাংবাদিক বিভাগের চেয়ারম্যান শাখাওয়াত আলী খান। তিনি একদিন অর্থনীতি বিভাগে এসে আমাকে খুঁজে বের করলেন এবং বললেন, তুমি তো আমাদের ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হয়েছ। আমরা ভর্তি পরীক্ষার প্রথম হওয়া ছাত্র ছাড়া আমাদের অনার্স কোর্স চালু করতে চাই না। আমি বললাম, আমার আব্বা তো রাজি হচ্ছে না। তিনি বললেন, আমি তোমার আব্বার সাথে কথা বলবো। তিনি আর বলেন নি। আমি গোপনেই সাংবাদিকতা বিভাগে ভর্তি হয়ে যাই। বাসায় পড়া লেখা করতে গেলে সাংবাদিকতার বই আব্বা দেখে ফেলেন, তাই আমি হোস্টেলে চলে আসলাম। আমি সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে অনার্সে ফাস্ট ক্লাশ ফাষ্ট হলাম। ১৯৮৩ সালে মাস্টার্সের পড়ার সময় আমার পিতা অসুস্থ হয়ে মারা যান। তখন আর পড়া লেখা হয় নাই। এমএ পরিক্ষা না দিয়ে সাংবাদিকতায় কাজ শুরু করে দেই। আমার ব্যাচের আমিই সাংবাদিকতায় এসেছি। আর কেউ সাংবাদিকতায় আসে নাই। আমার শিক্ষকরা আমাকে বললেন আমি এমএ পরীক্ষা দিলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকুরীটা হয়ে যাবে। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হবো না বলেই এমএ পরীক্ষা দেই নাই। সেই কারণে আমি এমএ পরীক্ষা থেকে এড়িয়ে যাই। তখন থেকেই আমার সাংবাদিকতা শুরু। তখন বুনেদি পরিবারের লোকেরা সাংবাদিকতায় আসতো। ন্যায়ের পক্ষে কাজ করা যায়। সাংবাদিকতা বিশ্বের একটি মহান পেশা হিসেবে উল্লেখ করা হয়। তাই আমি সাংবাদিকতায় আসা। ১৯৭৮ সালে সাপ্তাহিক বিচিত্রায় লেখা শুরু করি। সাপ্তাহিক রোববারে লিখি। বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি পত্রিকা বের করেছিলাম। সেটা আমি সম্পাদক ছিলাম। তারপর সংবাদে যোগদান করি। আহমেদুল কবিরের কাছ থেকে আমি অনেক কাজ শিখেছি। তাকে আমি বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ সম্পাদক হিসেবে গন্য করি। এ ভাবে আমার সাংবাদিকতা থেকে যাওয়া। ঐ সময়ের সাংবাদিকতা আর এখনের সাংবাদিকতায় অনেক পার্থক্য রয়েছে। তখন সাংবাদিকতা করতে হলে সাহিত্যর সাথে সর্ম্পক থাকতে হবে। সাহিত্য না জানলে সাংবাদিকতা করতে পারবে না। আর দেখা হতো ঘটনাটি কতটুকু অবিকৃত ভাবে তুলে আনতে পেরেছে। বই পড়লে বুঝতে পারা যে কোন শব্দটি কোথায় বসবে। বর্তমানের সাংবাদিকার সাথে সাহিত্যর কোন সর্ম্পক নেই। তখনকার সময় দারিদ্রতা ছিল সাংবাদিকতার একটি অংশ। আমরা অনেক সাংবাদিকের চিকিৎসার টাকা দিতে পারি নাই। প্রেসক্লাবের সাংবাদিকের লাশ আনা হয়েছে কিন্ত কাফনের কাপড়ের টাকা নেই। এখনকার সাংবাদিকরা অবশ্য অনেক টাকার মালিক। আমাদের দেশের কোন কোন সাংবাদিকের মাসিক বেতন ১০ লক্ষ টাকা। তারা তাদের জন্মদিন সোঁনারগাও এর মতো পাচ তারকা হোটলে উদযাপন করেন। এরা হঠাৎ করেই বড় লোক হয়ে যায়। সাংবাদিকতার কারণে রাজনীতির প্রতি আমার আগ্রহ সৃষ্টি হয়।রাজনীতির ক্ষমতা না থাকলে কাউকে সরাসরি সহযোগীতা করা যায় না। আমি হয়তো একটি রিপোর্ট করলাম তখন তার ভাগ্যভালো হলে সহযোগীতা পেতে পারে। আমি যদি রাজনীতির ক্ষমতায় থাকি হলে তাকে আমি সরাসরি সহযোগীতা করতে পারবো। মানুষের উপকার করার জন্য মানুষের সেবা করার জন্য আমার রাজনীতিতে আসার আগ্রহ জন্মে। ১৯৮২ সাল থেকে বেগম খালেদা জিয়ার সাথে আমার ঘনিষ্ঠ সর্ম্পক ছিল। ২০০১ এ আমার প্রেসক্লাবের মেয়াদ শেষ হলে তিনি আমাকে রাজনীতিতে আসার জন্য আমন্ত্রণ করেন। এই নির্বাচনী ট্রেনটি একতরফা। যেহেতু বিরোধী দলটি নির্বাচনে নেই। সরকারী দল বিরোধী দলকে নির্বাচনে আনার জন্য চেষ্টা করে নাই। সরকার এটা ফিল করে নাই যে বিরোধী দল নির্বাচনে আসুক। বিএনপিও মনে করেছে নির্বাচনে যাওয়াটা ঠিক হবে না। ২০১৪,২০১৮ সালে নির্বাচন থেকে একটি খারাপ অভিজ্ঞতা হয়েছে। বিদেশীরা নির্বাচন নিয়ে তৃতীয় আম্পিয়ারের দায়িত্ব পালন করছে। সাধারণ জনগণের কথা ভেবে এবং এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন করার সংকল্প নিয়ে আমি নির্বাচনে এসেছি। আশা করি জনগণ আমাকে সঠিক মূল্যায়ন করে তাদের খেদমত করার সুযোগ করে দিবে।

  • ব্রাহ্মণপাড়া