ব্রাহ্মণপাড়ায় স্ত্রীর মামলায় স্বামী কারাগারে

লেখক: হারুন অর রশিদ
প্রকাশ: ৩ মাস আগে

Spread the love

কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় স্ত্রীর দায়ের করা নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় স্বামীকে গ্রেফতার করে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। গত ১৬ আগষ্ট শুক্রবার দুপুরে ব্রাহ্মণপাড়া থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে নিজ বাড়ী মনির খাঁন চৌধূরীকে গ্রেপ্তার করেছে এবং গত ১৭ আগষ্ট শনিবার সকালে কুমিল্লা জেল হাজতে প্রেরণ করেছে। গ্রেপ্তারকৃত মনির খাঁন চৌধুরী (৪৫) উপজেলার সদর ইউনিয়নের ধান্যদৌল চৌধুরী বাড়ীর মোঃ ইসলাম খাঁন চৌধুরীর ছেলে। পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ বছর আগে উপজেলার সদর ইউনিয়নের ধান্যদৌল চৌধুরী বাড়ীর মোঃ ইসলাম খান চৌধুরীর ছেলের সাথে পার্শ্ববর্তী ব্রাহ্মণবাড়ীয় জেলার কসবা উপজেলার কুটি ইউনিয়নের বেলতলী গ্রামের আব্দুল মান্নানের মেয়ে রাবেয়া খানম চৌধুরী (৩৬) এর পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে ৯ বছর এবং ৫ বছরের দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন সময় যৌতুকের জন্য রাবেয়া আক্তারের উপর অমানুসিক নির্যাতন চলতে থাকে। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে বিয়ের সময় স্বর্ণালংকার ও আসবাবপত্রসহ প্রায় ৮ লক্ষ টাকা বাবা আব্দুল মান্নান ইসলাম খানকে প্রদান করে। বিয়ের ২ মাস পর স্বামী মনির খাঁন চৌধূরী বিদেশ যাবার জন্য যৌতুক দাবী করলে মেয়ের সুখের চিন্তা করে আরো ৪ লক্ষ টাকা বাবা আব্দুল মান্নান বহু কষ্টে জোগাড় করে দেয়। কিন্তু মনির খাঁন চৌধূরী বিদেশ না গিয়ে যৌতুকের ৪ লক্ষ টাকা বন্ধুদের সাথে জুয়া ও মাদক সেবন করে খরচ করে ফেলে। ছোট ছেলে জন্মের পর শ্বশুর ইসলাম খাঁন চৌধুরী যৌতুকের জন্য রাবেয়া আক্তারকে বিভিন্নভাবে আবারও শারীরিক, মানসিক নির্যাতন ও মারধর করলে মেয়ের সুখ-শান্তির কথা চিন্তা করে পর্যায়ক্রমে আরো ৯/১০ লক্ষ টাকা প্রদান করেন। কিন্ত স্বামী মনির খাঁন চৌধুরী মাদক, জুয়া সেবন করে নিয়ে ব্যস্ত থাকে। কোন কাজকর্ম করে না। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৩ আগস্ট (মঙ্গলবার) বিকালে স্ত্রীকে যৌতুকের জন্য আরো ২ লক্ষ টাকা আনার কথা বললে স্ত্রী রাবেয়ার প্রতিবাদ জানালে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মনির খাঁন চৌধুরী স্ত্রীর তলপেটে লাথি দিলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে কান্না করতে থাকে। এসময় মনির খাঁন চৌধুরী তার ঘরে থাকা হকিস্টিক দিয়ে এলোপাতারি পিটিয়ে স্ত্রীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। তার চিৎকারে বিবাদী মনির খাঁন চৌধুরী আরো ক্ষিপ্ত হয়ে আয়রন করার ইস্ত্রী দিয়ে কারেন্টের মাধ্যমে রাবেয়া আক্তারের শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। এসব নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে রাবেয়া খানম চৌধুরী বাদী হয়ে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করলে শুক্রবার দুপুরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে মনির খান চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করে কুমিল্লা জেল হাজতে প্রেরণ করে। ব্রাহ্মণপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম আতিক উল্ল্যাহ সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

  • ব্রাহ্মণপাড়া