কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার খাড়াতাইয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসার তিন তলার ছাদ থেকে গলায় ফাঁস অবস্থায় জয়নাল আবেদীন জয় নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটে ৩ অক্টোবর মঙ্গলবার সকাল ১০ ঘটিকায় উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের খাড়াতাইয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসায়। জয়নাল আবেদীন জয় মাদ্রাসাটিতে নাজেরা বিভাগের ছাত্র ছিল। মৃত্যুর আগে পবিত্র কোরআন শরিফের পাঁচ পাড়া হেফজ হয়েছিল তার। নিহত মাদ্রাসার ছাত্র খাড়াতাইয়া গ্রামের রাজমিস্ত্রি আনোয়ার হোসেনের ছেলে।স্থানীয়রা জানায় ছাত্র জয়নাল আবেদীন জয়ের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। তবে মাদ্রাসার কর্তৃপক্ষ এটিকে দুর্ঘটনা বললেও তা মানতে নারাজ নিহতের বাবা আনোয়ার হোসেন ও মা ঝরনা আক্তার। মাদ্রসার প্রধান শিক্ষক হাফেজ রবিউল হাসান জানান, ওই দিন সকাল ১০টায় মাদ্রসার সকল শিক্ষার্থীকে খাবার খাওয়ানোর পর সবার সাথে ঘুমাতে যায় জয়নাল আবেদীন জয়। সহপাঠীদের ফাঁকি দিয়ে ছাদে উঠে কাপড় পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। এর আগের দিন তার মা ঝরনা আক্তার মারধর করে হাসপাতালে দিয়ে যায়। তবে কি কারণে আত্মহত্যা করেছে তা আমরা বলতে পারিনি। মাদ্রসার ছাত্র আলী আকবর প্রথমে ছাদে গিয়ে তাকে ফাঁস অবস্থায় দেখতে পায়। এই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক রবিউল হাসান, সহকারী শিক্ষক হাফেজ মোঃ হামজাদ, হাফেজ মোঃ হেলাল হোসেনের দাবী ছাত্র আত্মহত্যা করেছে।ওই ছাত্রকে আমাদের নিজ সন্তানের মতোই দেখিতাম। ঘটনার খবর শুনে বুড়িচং থানার পুলিশ এস আই মিঠুন ও সঙ্গীয় ফোর্স মাদ্রাসায় গিয়ে জয়নাল আবেদীন জয়কে দেখতে না পেয়ে হাসপাতালে যায়, সেখান থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে। নিহত জয়ের বাবা আনোয়ার হোসেন ও মা ঝরনা আক্তার বলেন, মাদ্রাসার শিক্ষকরা আমার ছেলেকে মেরে ফেলেছে। মৃত্যুর আসল ঘটনা তারা লুকানো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মৃত্যুর কারণ সুষ্ঠু তদন্ত করে সঠিক বিচার চাই। মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ডাক্তার আব্দুল লতিফ ও সভাপতি প্রফেসর ড.মুহাম্মদ সোলায়মান জানান, আমরা বিষয়টি শুনে মাদ্রাসায় গিয়ে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। শিক্ষকদের অবেহেলা থাকলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বুড়িচং থানা পুলিশ মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক হাফেজ রবিউল হাসানকে আটক করলেও রহস্যজনক কারণে ছেড়ে দিয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহতের পরিবারের লোকজন গরীব হওয়ায় বিষয়টি দামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক হাফেজ রবিউল হাসানকে পুলিশ আটক করে আনলেও রহস্যজনক কারণে ছেড়ে দিয়েছে। এই ব্যাপারে বুড়িচং থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কবির হোসেন বলেন, বুড়িচং স্বাস্থ্য কমপ্রেক্স থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে মূল ঘটনা বের করার চেষ্টা করছি। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত আরও তথ্য জানা যাবে।