অন্তরঙ্গ ভিডিও প্রবাসী স্বামীর নিকট পাঠানোর হুমকি: স্ত্রীর আত্মহত্যা

লেখক: স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১ বছর আগে

Spread the love

কুমিল্লায় প্রবাসী স্বামীর কাছে ভিডিও প্রকাশের হুমকি, তরুণীর আত্মহত্যা কুমিল্লার দেবিদ্বারে অন্তরঙ্গ মুর্হুতের ভিডিও প্রবাসী স্বামীর কাছে পাঠানোর হুমকি দেওয়ায় স্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে দেবিদ্বার থানা পুলিশ পৌরসভার ভুষণা এলাকার সৎ বাবার বাড়ি থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। নিহত স্বর্ণালী আক্তার (২১) মুরাদনগর উপজেলার পরমতলা গ্রামের মো. জহিরুল ইসলামের মেয়ে এবং দেবিদ্বার উপজেলার ধামতি চৌধুরী বাড়ির সৌদি প্রবাসী মো. নজরুল ইসলামের স্ত্রী। বুধবার দুপুরে ভুষণা এলাকায় সরেজমিনে গেলে স্থানীয়রা জানান, স্বর্ণালীর মা হালিমা বেগমের দ্বিতীয় বিয়ে হয় ভুষণা গ্রামের ইসমাইলের সাথে। এরপর থেকে স্বর্ণালী মাঝে মধ্যে সৎ বাবার বাড়িতে মায়ের কাছে আসত। এদিকে স্থানীয় সুলতান মিয়া নামে এক ব্যক্তির সাথে স্বর্ণালীর মা হালিমা বেগমের পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে উঠে। এই সুবাধে গত কয়েক মাস আগে স্বর্ণালী আক্তারের কাছে রাখা প্রবাসীর স্বামীর ৫ লক্ষ টাকা এনে সুলতানকে সুদে দেন হালিমা বেগম। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সুলতানের কাছে সুদের ৫লক্ষ টাকা ফেরত চাওয়ায় সুলতান দিতে গড়িমশি করে পরবর্তীতে সুদের টাকা খুঁজলে স্বর্ণালির গোপন ভিডিও তাঁর প্রবাসী স্বামী নজরুল ইসলামের কাছে পাঠাবেন বলেও হুমকি দেন। পরে স্বর্ণালি রাত ১২টার দিকে ঘরে গলায় উড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। নিহত স্বর্ণালীর মা হালিমা বেগম জানায়, সুলতানের কাছে আমরা ৫ লক্ষ টাকা পাব। ওই টাকা চাওয়ায় আমার মেয়ের গোপন ভিডিও ও ছবি তার প্রবাসী স্বামীর কাছে পাঠাবেন বলে হুমকি দেয়। এ জন্য আমার মেয়ে আত্মহত্যা করে। তিনি আরও বলেন, সুলতান আমার প্রথম সংসারের দুই মেয়ে হাবিবা ও স্বর্ণালীকে জানায়, আমি নাকি আমার নামে থাকা সব সম্পত্তি নগদ অর্থ আমার দ্বিতীয় সংসারের ছেলে মেয়ের নামে লেখে দেব। এই বলে তাদের ফুঁসলিয়ে দুই বোনকে স্বামীর বাড়ি ভাগিয়ে এনে নারায়নগঞ্জ ও চট্টগ্রামের অলংকারে ভাড়া বাসায় আত্মগোপনে রাখেন। সেখানে মোবাইলে স্বর্ণালির গোপন ভিডিও ধারণ করে সুলতান। এদিকে হালিমা বেগম একসাথে দুই মেয়ের খোঁজ না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন। ১ সপ্তাহ পর স্বর্ণালি তার মা হালিমাকে ফোন দিয়ে বলেন, তাঁরা দুই বোন সুলতানের কুপরামর্শে চট্টগ্রামের অলংকারে আত্মগোপেনে রয়েছেন। পরে হালিমা বেগম সুলতানকে চাপ প্রয়োগ করলে, গত ২ আগস্ট বুধবার সুলতানসহ চট্টগ্রামের অলংকারে গিয়ে দুই মেয়েকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসেন। এ ঘটনায় ৫ আগস্ট শনিবার রাতে স্থানীয় আবুল কালাম ও সোলেমানের উপস্থিতিতে ঘরোয়া সালিশে সুলতানের দেয়া মেয়েদের প্রলোভন ও আত্মগোপনে রাখার বিষয়টি সুরাহা হয়। সালিশের একদিন পর সুলতান তাঁর ছোট মেয়ে স্বর্ণালীকে ফোন করে ডেকে নিয়ে তার গোপন ভিডিও ও ছবি তার সৌদি প্রবাসী স্বামীর কাছে পাঠাবেন বলে হুমকি দেয়। এতে লজ্জায় মঙ্গলবার রাত ১২ টার দিকে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। সুলতানের কাছে আমার ছোট মেয়েরও কিছু গোপন ভিডিও ও ছবি আছে। নিহতের বড় বোন হাবিবা জানান, সুলতান আমার প্রবাসী স্বামীকেও বিভিন্ন কুপরামর্শ দিয়েছে। আমি আমার মায়ের কাছ থেকে টাকা না এনে দিলে আমার সাথে সংসার না করতে চাপ প্রয়োগ করে। আমি প্রথমে সুলতানের চক্রান্ত বুঝতে পারিনি। আমি তার চক্রান্তে পরে স্বর্নালীর সাথে চট্টগ্রামে যাই। পরে বুঝতে পেরে মায়ের কাছে ফিরে আসি। লম্পট সুলতান আমার অজান্তে স্বর্ণালীর গোপন ভিডিও ধারণ করে। সে ওই ভিডিও ফুটেজ তার প্রবাসী স্বামীর কাছে পাঠাবেন বলে ভয় দেখায় সে কারণে স্বর্ণালি আত্মহত্যা করে। এ বিষয়ে বুধবার বিকালে সুলতানের বাড়ি গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তার সাথে ফোনে কথা বলার চেষ্টা করলে তার ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। পরে লোকজন জানান, ঘটনার পর সুলতান এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। এ বিষয় দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কমল কৃষ্ণ ধর বলেন, নিহতের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের মা হালিমা বেগম বাদি হয়ে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করেছেন।

  • দেবিদ্বার