বিলুপ্তির পথে মুরাদনগরে বাঁশ নির্ভর কুটির শিল্প। বাঁশের দাম বৃদ্ধি, অর্থের অভাব, তৈরি জিনিসের দাম কম, প্লাস্টিক সামগ্রীর সহজলভ্যতা সবমিলিয়ে বন্ধ হতে চলেছে বাঁশ নির্ভর কুটির শিল্প। বাপ-দাদার এ পেশা ছেড়ে সংসার চালাতে অন্য পেশার দিকে ঝুঁকছে অনেকে। কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার টনকি ইউনিয়নের মাজুর গ্রাম ও রামচন্দ্রপুর উত্তর ইউনিয়নের মাহুতি কান্দা গ্রামের প্রায় ২শতাধিক পরিবারগুলো বাপ-দাদার আমল থেকে এ পেশায় নিয়োজিত। বাঁশ দিয়ে গৃহস্থলির বিভিন্ন উপকরণ তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করে তারা। বাঁশশিল্পীরা জানায়, কৃষিকাজে ব্যবহৃত এসব উপকরণের মধ্যে কুলা, ডালি, টুপরি, ঠালা, চালনা, চাঁটাই, ডোল, বের, ঝাড়ু ইত্যাদি পণ্য তৈরি করে স্থানীয় মুরাদনগর, রামচন্দ্রপুর, কোম্পানীগঞ্জ, বাঙ্গরা, যাত্রাপুর, গাজীরহাটসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি করে স্বাছন্দ্যে চলতো তাদের সংসার। মাঝে মধ্যে জেলার বাইরে যেত তাদের নিপুণ হাতে বোনা এসব পণ্য। বর্তমানে বাঁশের দাম বৃদ্ধি বাঁশের জায়গায় প্লাস্টিক সামগ্রীর স্থান দখল কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের। এ পেশায় আগের মতো আয় না আসায় চলছে না তাদের সংসারের চাকা। তাই বাধ্য হয়েই দিনমজুরের কাজ নিয়েছে অনেকে। অন্য কাজ পারে না এমন পুরুষ, নারী এবং স্কুল বয়সী ছেলেমেয়েরা পেটের দায়ে চালিয়ে যাচ্ছে এ কাজ। ধানের মৌসুমে এসব পণ্যের চাহিদা বেশি হলেও এবারে চাহিদা তুলনামূলক কম। ধানের দাম কম হওয়ায় এসব পণ্যের চাহিদাও কম। বাঁশশিল্পীরা আরও জানায়, বাঁশের কাজে আগের মতো আর লাভ হয় না। একটি বাঁশ ২শত থেকে ৩শত ৫০টাকায় কিনে দুদিন খেটে যে পন্য তৈরি করা হয় তার বাজার দামে অনেক লোকসান হয়। এ শিল্পের বিকাশিত ও মান উন্নয়ন প্রয়োজনে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার অনুদান, প্রশিক্ষণ এবং পৃষ্ঠপোষকতা দরকার রয়েছে বলে জানায় তারা।