“সঠিক সেবা থেকে বঞ্চিত এলাকাবাসী” বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়ায় একজন বন কর্মকর্তা

লেখক: Sohel Islam
প্রকাশ: ১ বছর আগে

Spread the love

কুমিল্লা জেলার বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া দুই উপজেলার পূর্ব পাশে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য অবস্থিত। এই দুই উপজেলার ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকায় অনেক পাহাড়-টিলা রয়েছে। এই সকল পাহাড় টিলার বেশির ভাগই সরকারী খাস ভূমি। বুড়িচং উপজেলার বাকশীমূল ইউনিয়ন, রাজাপুর ইউনিয়ন এবং ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার শশীদল ইউনিয়নসহ তিনটি ইউনিয়ন ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকায় পাহাড়-টিলায় অনেক বন ভূমি রয়েছে। এই সকল বনভূমিগুলো রক্ষা এবং বিভিন্ন রাস্তাসহ বিভিন্ন স্থানে সামাজিক বনায়ন সৃষ্টির জন্য দুই উপজেলায় মাত্র একজন কর্মকর্তা রয়েছেন। তার সহযোগী হিসেবে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় একজন এবং বুড়িচং উপজেলায় ১জন কর্মী রয়েছেন। তাছাড়া বুড়িচং উপজেলার বাকশীমূল ইউনিয়নের কালিকৃষ্ণনগর এলাকায় সামাজিক বনায়নের গাছ বনখেকুদের হাত থেকে রক্ষার দায়িত্বে রয়েছেন ৩জন কর্মী। একজন বন কর্মকর্তার দায়িত্ব হলো সরকারী প্রান্তিক, নতুন জেগে উঠঅ ভূমি,খাস ভূমি এবং অশ্রেণীভুক্ত বনে দ্রæত বর্ধন ও উচ্চ ফলনশীল প্রজাতির গণমুখী বনায়ন কার্যক্রমের মাধ্যমে বৃক্ষাচ্ছাদন সম্প্রসারণ করা। সরকারী ও বেসরকারী পর্যায়ের বনায়নের প্রতি সহায়তা ও উৎসাহ প্রদান করা। বৃক্ষরোপণ এবং বনায়নের বিষয়ে কারিগরি উপদেশ ও সহায়তা প্রদান করা। বন জঙ্গলে কর্তৃপক্ষ ব্যতীত বনে অন্য কাউকে প্রবেশ করতে না দেওয়া, বনের ভিতরে কেউ কোন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে কিনা তা তদারকি করা।বন নিধন করা হচ্ছে কিনা তার তদারী করা, বিনা অনুমতিতে ফরেষ্টে কেউ আসা যাওয়া করে কি না ; তার খোঁজ খবর রাখা। বনে মধ্যে কোন ধরনের অনৈতিক কর্ম হচ্ছে কিনা, কেউ বনের গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে কি না এবং বনের পশু পাখিদের কোন ধরনের ক্ষতির কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে কি না; তা পর্যবেক্ষণ করা। বুড়িচং উপজেলার আয়তন প্রায় ১৬৩.৭৬ বর্গকিলোমিটার এবং ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার আয়তন প্রায় ১২৮.৯ বর্গকিলোমিটার। দুই উপজেলার মোট আয়তন ২৯২.৬৬ বর্গকিলোমিটার। দুই উপজেলায় প্রায় কয়েকশত করাত কল রয়েছে। অনেক করাত কলের লাইসেন্স নেই। দুই উপজেলায় একজন কর্মকর্তা থাকার ফলে করাতকলগুলোতে যথাযথ ভাবে নজরদারী করা যাচ্ছে না। ফলে সামাজিক বনায়নের গাছ চুরি করে কেটে করাতগুলোর মাধ্যমে বিভিন্ন ফার্নিচার বানিয়ে বিক্রয় করছে।ফলে সামাজিক বনায়নের প্রকৃত সুবিধা ভোগীরা তাদের সঠিক প্রাপ্ত অংশ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার বন কর্মকর্তার কার্যালয়ের জনবল কম থাকায় বন ও পাহাড় খেকুদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ভূমিকা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী এলাকায় পাহাড়ের মাটি কাটা এবং রাতের আধারে সামাজিক বনায়নের গাছ কাটার একটি সক্রিয় সিন্ডিকেট রয়েছে। এই সিন্ডিকেটের সদস্যরা বণকর্মকর্তা ও তার সহযোগীদের উপর নজর রাখে এবং সুযোগ পেলেই গাছ ও পাহাড় কাটা শুরু করে। এতে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। দুই উপজেলার একজন কর্মকর্তা থাকায় নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যাহত হচ্ছে। স্থানীয় সুবিধাভোগীদের অভিযোগ সামাজিক বনায়নের গাছগুলো দায়িত্ব প্রাপ্ত রক্ষীদের সাথে যোগসাজসে বন খেকুর সিন্ডিকেট সামাজিক বনায়নের গাছ কেটে নিচ্ছে। সীমান্তবর্তী এলাকায় বিভিন্ন করাত কলগুলোতে অভিযান পরিচালনা করলেই সামাজিক বনায়নের গাছ দেখতে পাওয়া যাবে। এতে ক্রমান্বয়ে বনাঞ্চলের পরিমান কমে যাচ্ছে। উপজেলা বন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়,১৯৯০-১৯৯১ সাল থেকে সামাজিক বনায়নের কার্যক্রম শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকথায় গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন রাস্তার পাশে স্থানীয়দের সহযোগীতায় বৃক্ষরোপন করা হয় এবং তাদেরকে তদারকির দায়িত্ব প্রদান করা হয়। এছাড়া বৃক্ষরোপণ কর্মসুচিসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। প্রত্যেক উপজেলায় একটি সরকারী নার্সারী স্থাপন করে চারা উৎপাদনের জন্য একজন করে লোক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যেন সাধারণ মানুষ বাড়ির আঙ্গিণাসহ পতিত ও ফসলবিহীন জায়গায় বৃক্ষরোপন করতে পারে। বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত বনকর্মকর্তা মাহাবুবুল আলম বলেন, দুই উপজেলার দায়িত্ব পালন করতে আমার কোন অসুবিধা হচ্ছে না। সরকার যেহেতু আমাকে দায়িত্ব প্রদান করেছে, আমি আমার উপর অর্পিত সকল দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করার চেষ্টা করছি।

  • বুড়িচং
  • ব্রাহ্মণপাড়া