কুমিল্লা-ব্রাহ্মণপাড়া-মীরপুর সড়কের ব্রাহ্মণপাড়া বাসস্ট্যান্ডের পূর্ব পাশে ময়লা আবর্জনার বিশাল স্তূপ। ময়লার ভাগার থেকে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। এতে করে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে স্থানীয় শিক্ষার্থীসহ পথচারীরা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধের কারণে সড়কটি দিয়ে চলাচল করতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বসবাসরত বাসিন্দা, এলাকাবাসী, পথচারী, শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ীসহ হাজারো মানুষকে। দিন যত যাচ্ছে রাস্তার পাশে ময়লা আবর্জনার ভাগার ততই বাড়ছে। কাঁচা বাজারের নষ্ট হওয়া শাকসবজি, হোটেলের পঁচা-বাসি খাবার, মুরগির নাড়িভুঁড়ি এবং বাসাবাড়ির ময়লা-আবর্জনা ও গরুর ভুঁড়িসহ সব ধরনের আবর্জনা ফেলা হচ্ছে এখানে। ফলে অল্প সময়ের মধ্যেই এগুলো পচে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হচ্ছে। কাপড় দিয়ে নাক চেপে ধরে চলাচল করতে হচ্ছে। এতে ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে ওই এলাকার পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য। এরপরও স্কুলের পাশে প্রতিদিন ময়লা ফেলা শিক্ষার্থীদের মনে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীরা জানায়, এ এলাকায় এক সাথে অনেক গুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশে ময়লা থাকায় আমরা ঠিক মত পাঠদান করতে পাড়ি না। ময়লার দুর্গন্ধে অনেক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। এতে আমাদেরকে প্রতিনিয়ত স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যেই শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করতে হচ্ছে। বিদ্যালয়ে আসা একজন অভিভাবক জানান, এতগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখানে। কিভাবে ময়লা আবর্জনা ফেলছে আমাদের বুঝে আসে না। প্রশাসন কি করছে? ভগবান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, মোশাররফ হোসেন খান চৌধুরী বিশ্ব বিদ্যালয়, প্রাথমিক বিদ্যালয় ও জামে মসজিদ পাশে ময়লার স্তূপ। এতে কোমলমতি বাচ্চাদের খুবই অসুবিধা হচ্ছে। স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, মীরপুর-কুমিল্লা সড়কের মধ্যে একমাত্র ব্যস্ততম সড়ক এটি। সড়কের পাশে ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধে নাক চেপে ধরতে হয়। ডাস্টবিন না থাকায় যত্রতত্র সবাই ময়লা ফেলায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তাই নির্দিষ্ট স্থানে ডাস্টবিন তৈরি করে ময়লা ফেলার ব্যবস্থা করলে এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে। মাইক্রোবাসে চলাচলকারী যাত্রীরা বলেন, ময়লার অংশটুকু পার হতে গেলেই দুর্গন্ধ গাড়ির মধ্যে ঢুকে। এতে অনেক সময় বৃদ্ধ ও শিশুরা গাড়ির মধ্যে বমি করে ফেলে। স্কুল পড়ুয়া দশম শ্রেনীর ছাত্র বলেন, আমরা এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন স্কুলে যাই। পশ্চিম পাশে স্কুল আর পূর্ব পাশে ময়লা আবর্জনা। ময়লার দুর্গন্ধ অনেক খারাপ লাগে। এখানে এসেই নাক মুখ চেপে ধরে রাস্তা পার হই। ইকরামুল হোসেন নামের এক কলেজ শিক্ষার্থী জানান, ময়লার স্তূপের কারণে এই সড়ক দিয়ে আমাদের যাতায়াত করা এখন কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই অতি দ্রæত এখান থেকে ময়লা অপসারণ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ইউএনও স্যারের নিকট জোর অনুরোধ জানাচ্ছি। এখানে বাসা বাড়িতে বসবাসকারী এক বাসিন্দা জানান, এখানে বর্জ্য ফেলার কারণে আমরা বাসাতে বসবাস করতে পারছি না। তীব্র দুর্গন্ধ, মশা-মাছির উপদ্রবে আমাদের জীবন অতিষ্ঠ। রুমের দরজা-জানালা বন্ধ করেও থাকা যায় না। এলাকাবাসীর স্বাস্থ্যের বিষয়টি বিবেচনা করে অবিলম্বে এখানে বর্জ্য ফেলা বন্ধ করা উচিত বলেও দাবি করেন তিনি। ব্রাহ্মণপাড়ার বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম বলেন, শুনেছি ডিসি সাহেব নাকি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা স্যারকে বলছেন ব্যবস্থা নেওয়া জন্য। কিন্তু কেন তিনি ব্যবস্থা নিচ্ছে না তিনিই ভালো জানেন। রাস্তা দিয়ে দুর্গন্ধের কারণে সকলের চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। লোকালয় থেকে দূরে কোথাও এই ময়লা পরিবেশসম্মত উপায়ে সংরক্ষণ করা উচিত। এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার স ম আজহারুল ইসলাম বলেন, ময়লা আবর্জনা স্কুলের পাশে ফেলা নিয়ে সকল ব্যবসায়ীকে ডাকা হবে। এছাড়া আমরা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ে একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছি। বরাদ্দ অনুমোদন হলে (জেলা পরিষদ থেকে) আমরা সদরের একটি দূরবর্তী স্থানে ময়লা ফেলার ব্যবস্থা করতে পারবো গাড়িতে করে। কিছুদিনের মধ্যেই এ প্রকল্প শুরু করা যাবে আশা করছি।