“বুড়িচং দক্ষিণ হরিপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়” খেলার মাঠে পানি, ঝুঁকিতে শিক্ষার্থীরা

কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার সদর ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের রেজিস্টার প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে জাতীয়করণকৃত দক্ষিণ হরিপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে পানি জমে থাকার কারনে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। দীর্ঘ দুই মাস যাবৎ বিদ্যালয়ের মাঠে পানি জমে আছে। শিশু শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত আতঙ্কে বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া করছে। অনেক শিক্ষার্থী ভয়ে আসা যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। বিদ্যালয়টির উত্তর পাশে, দক্ষিণ পশ্চিম পাশে এবং পূর্ব পাশে রয়েছে পুকুর। পুকুর দ্বারা বেষ্টিত বিদ্যালয়ের মাঠে সামান্য একটু বৃষ্টি হলেই পানি থৈ থৈ করতে থাকে। তখন দক্ষিণ পশ্চিম পাশের পুকুর আর বিদ্যালয়ের মাঠের মধ্যে কোন তফাৎ থাকে না। এমন ভাবে পানি জমা হয় যে বিদ্যালয়ের মাঠ কোনটি, আর পুকুরই বা কোনটি তা নির্ণয় করা কঠিন হয়ে যায়। তাই বিদ্যালয়ে আসা শিশুদের নিয়ে আতংকে থাকেন অভিভাবকরা। কখন যে কার শিশু পুকুরের পানিতে ডোবে মারা যায়। জানা যায়, দক্ষিণ হরিপুর এলাকার বিভিন্ন পুকুর ও ডোবার পানি নিঃষ্কাশনের জন্য কয়েকটি নালা ছিল। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে নতুন নতুন ঘর বাড়ি নির্মাণ হওয়ার ফলে নালাগুলো বন্ধ হয়ে যায়। সম্প্রতি হাজী আবদুর রশিদ তার মেয়েদের বাড়ী করতে গিয়ে পানিঃনিষ্কাশনের একমাত্র নালাটি ভরাট করে ফেলেন। এতেই পুকুরের পানি ও বৃষ্টির পানি নিঃষ্কাশন হতে না পারায় বিদ্যালয়ের মাঠে পানি জমে থাকছে। পানি নিঃষ্কাশনের জন্য পরিকল্পিত ভাবে ড্রেন নির্মাণ করতে হবে। অন্যথায় পানি জমাট হতে থাকবেই। তাই দ্রæত পানি সরানোর ব্যবস্থা গ্রহন করে বিদ্যালয়টিকে পড়ালেখার পরিবেশ তৈরী করতে হবে। স্থানীয়দের অভিযোগ, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ব্যাংকে চাকুরী করার কারনে সঠিক ভাবে নজরদারী করতে পারেন না এবং প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকরা কুমিল্লায় বাসা নিয়ে থাকার কারণে বিদ্যালয়টিতে ভালো পড়া লেখা হচ্ছে না। তাদের অবহেলার কারণে দীর্ঘদিন মাঠে পানি জমে আছে। এতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের লেখা পড়ায় ব্যাঘাত ঘটছে। হরিপুর গ্রামের যুবলীগ নেতা দেওয়ান স্বপন আহমেদ বলেন, পরিকল্পিত ড্রেন না থাকার কারনে দক্ষিণ হরিপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি জমে থাকে। দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ের মাঠে পানি জমে থাকায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। অনেক শিশু ভয়ে বিদ্যালয়ে যাচ্ছে না। বিদ্যালয়ের মাঠ আর পুকুর পানি জমে একাকার হয়ে আছে। দূর থেকে দেখলে মনে হবে বিদ্যালয়ের মাঠ নয় যেন জলাশয়। দক্ষিণ হরিপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা জোসনা আক্তার বলেন, আমরা সচেতনতার সাথে বাচ্চাদের আসা যাওয়া মনিটরিং করি। পানি নিঃষ্কাশনের জন্য বারবার এলাকাবাসীর সাথে মিটিং করে যাচ্ছি এবং উপজেলা শিক্ষা অফিসারের নিকট আবেদন করেছি। স্থানীয় চেয়ারম্যানকেও বিষয়টি অবহিত করেছি। আমরা পানি নিঃষ্কানের জন্য অনেক চেষ্টা করছি কিন্ত কোন সুফল পাচ্ছি না। দক্ষিণ হরিপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি এলাকাবাসীদের নিয়ে কয়েকটি মিটিং করেছি, কিন্ত পানি নিঃস্কাশনের জন্য কোন সুযোগ পাচ্ছি না। বিদ্যালয়টির চারপাশেই পুকুর। এই পুকুরের পানি নিঃষ্কাশন না হওয়ায় বিদ্যালয়ের মাঠে পানি জমে আছে। কেউ পানি নিঃষ্কাশনের জন্য জায়গা দিচ্ছে না। এ বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে অবহিত করেছি।