বুড়িচংয়ে সুদখোর আব্বাসের অত্যাচারে অতিষ্ঠ কয়েক গ্রামের মানুষ

লেখক: স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ৭ মাস আগে

Spread the love

কাবুলিওয়ালারা বিদায় হলেও তাদের প্রেত্মারা রয়েছে বাংলাদেশের বিভিন্ন গ্রামে-গঞ্জে। তারা গ্রামের সহজ সরল গরীব অসহায় মানুষদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে টাকা সুদে বিনিয়োগ করে। পরবর্তীতে বিভিন্ন নির্যাতন নিপীড়নে মাধ্যমে কয়েকগুণ লাভসহ মূলটাকা আদায় করে। বছরের পর বছর সুদের টাকার জন্য শারিরিক ও মানুসিক নির্যাতন করে থাকে। নব্য কাবুলিওয়ালাদের টাকার জোরের কাছে সবাই নতজানু হয়ে থাকে। তাই তাদের নির্যাতন নিপীড়ন ভোক্তভোগিরা নিরুপায় হয়ে হজম করে। এমনই এক নব্য কাবুলিওয়ালা বুড়িচং উপজেলার পীরযাত্রাপুর ইউনিয়নের গোপীনাথপুর গ্রামের আক্তার আলী চেয়ারম্যান বাড়ীর মোঃ ইউনুস মিয়ার ছেলে আব্বাস আলীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ কয়েক গ্রামের সাধারণ মানুষ। গ্রামের সহজ সরল মানুষের অভাবের সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন ডুকুমেন্টের মাধ্যমে মোটা অংকের সুদে টাকা বিনিয়োগ করে। পরবর্তীতে উক্ত টাকার জন্য শারীরিক ও মানুসিক নির্যাতন করার অভিযোগ রয়েছে। গত ১৪ ফেব্রæয়ারী গোপিনাথপুর গ্রামের মৌসুমি আক্তার নামে এক নারী বুড়িচং থানায় আব্বাস আলীর নামে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। ভুক্তভোগী মৌসুমি আক্তারের বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, বিগত ২০১৭ সালে মৌসুমি আক্তারের দেবর রেজাউল করিম আব্বাস আলীর কাছ থেকে ৩ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা ধারে আনে। রেজাউল করিম তার ভাবি মৌসুমী আক্তারকে জামিনদার করে। আব্বাস আলী ৩ লক্ষ ৭০ টাকার সুদে আসলে ৫ লক্ষ টাকার ডকুমেন্টে জামিনদার হিসেবে মৌসুমি আক্তারের স্বাক্ষর নেন। মৌসুমি আক্তার বিগত ৫ বছর ধরে প্রতি বছর আব্বাস আলীকে ১লক্ষ ৭০ হাজার টাকা করে লাভ দেওয়ার পরে বিগত ২০২২সালে একসাথে মুলটাকা ৩ লক্ষ ৭০ হাজার টাকাসহ ৪ লক্ষ টাকা পরিশোধ করে। সুদে আসলে সমস্ত টাকা পরিশোধ করার পরেও আব্বাস আলী মৌসুমি আক্তার ও তার পরিবারকে বিভিন্ন হয়রানি করছে ও হুমকি ধমকি দিয়ে আসছে। আব্বাস আলীর জুলুম ও নির্যাতন থেকে বাঁচতে মৌসুমী আক্তার বুড়িচং থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। ভুক্তভোগী মৌসুমি আক্তার বলেন, আমার দেবর রেজাউল আব্বাসের কাছ থেকে ৩ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা আনে। আমি উক্ত টাকার জামিনদার ছিলাম। পরবর্তীতে আমি লাভসহ সকল টাকা পরিশোধ করার পরেও সে আমাদেরকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করছে। তাকে যে টাকা দিয়েছি, এটার স্বাক্ষ প্রমাণসহ আছে। কিছু দিন আগে সে আমার গায়ে হাত তুলছে। টাকা না দিলে নাকি মেরে ফেলবে। আবার স্বামীকে বলেছে- তুর বৌয়েরে তালাক দিয়া দিলে টাকা লাগবে না। তুর বৌ থাকলে টাকা দিতে হবে। আমার এখন আত্মহত্যা ছাড়া কোন রাস্তা নাই। তাই আমি বুড়িচং থানায় একটি অভিযোগ করেছি। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আব্বাস আলীদের অনেক বড় গোষ্ঠি। তাই সে গ্রামের গরীব ও অসহায় মানুষদের নিকট টাকা সুদে লাগায়। পরবর্তীতে টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে তাদের উপর শারিরিক ও মানুসিক নির্যাতন চালিয়ে টাকা আদায় করে। একই গ্রামের আবদুল কুদ্দুস নামের ব্যক্তি আব্বাসের কাছ থেকে ৩ লক্ষ টাকা সুদে নিয়ে ছিল। সেই এই ৩লক্ষ টাকার বিনিময়ে সুদে-আসলে ১১ লক্ষ টাকা পরিশোধ করতে বাধ্য হয়েছে। তাছাড়া কন্ঠনগর গ্রামের সুলতান আহম্মদ ও ওষুধ ব্যবসায়ী জামাল হোসেনকে সুদের টাকার জন্য মারধর করেছে। এই রকম অনেক পরিবার আব্বাস আলীর নির্যাতনের কারণে ধ্বংস হয়ে গেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুদখোর আব্বাস আলী বলেন, সুদ কোন এলাকায় খায় না? আর যারা অভিযোগ করছে তারা দি আমারে বাপ ডাকতাছে শেষ করা জন্য। ধুর এটা কোন বিষয়ই না! বুড়িচং থানার এস আই নুরুল ইসলাম বলেন, অভিযোগের পরে ওসি স্যার তাদেরকে থানায় ডেকে এনে বলে দিয়েছে যদি টাকা পাওনা থাকে তাহলে তারা যেন কোর্টে গিয়ে মামলা করে। আর সুদের টাকা নিয়ে এলাকায় ঝামেলা করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

  • বুড়িচং