দায়িত্ব দিলে এই সরকারের সাথে কাজ করার অঙ্গীকার ২০১৮ সালে যারা করেছিলেন কোটা সংস্কারের রীট!

লেখক: স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ৩ মাস আগে

Spread the love

৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার বিজয়ের কথা বলতে গেলে কোটা সংস্কার আন্দোলনের কথাই চলে আসে। কোটা সংস্কার আন্দোলনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে হাইকোর্টে দায়েরকৃত একটি রীট। ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার চেয়ে দায়ের করা হয় এই রীট। যা ওই বছরের ৫ মার্চ খারিজ করে দিলে ৫ এপ্রিল আপীলের আবেদন দেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট একলাছ উদ্দিন ভুইয়া। ২৮ অক্টোবর পুনরায় আপীলের আবেদন করলে আপীলের শুনানী হয় ২০১৯ সালের ১৭ জানুয়ারী। ইত্যবসরে কোটা সংস্কারের পক্ষে গণজোয়ার তৈরি করতে পত্রিকায় ব্যাপকভাবে লেখালেখির আশ্রয় নেন রীট পিটিশনাররা। বলাই বাহুল্য, কোটা সংস্কার আন্দোলনে সেই রীট পিটিশনের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই রীটটি যারা করেছিলেন তাদের অন্যতম মোহাম্মদ আবদুল অদুদ দৈনিক ইনকিলাবে কর্মরত একজন সিনিয়র সাংবাদিক ও আল-হেরা ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের (ইংরেজি ভার্সন) প্রধান শিক্ষক।এক সময় তিনি আমেরিকা বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয়ে খন্ডকালীন শিক্ষক ছিলেন। এছাড়া তিনি ঢাকা সাব এডিটরস কাউন্সিলের দু’বার নির্বাচিত নির্বাহী সদস্য ও কুমিল্লা সাংবাদিক ফোরাম অব ঢাকার নির্বাচিত ১ নম্বর ভাইস প্রেসিডেন্ট ও জাতীয় মানবাধিকার সোসাইটির যুগ্ম মহাসচিব। তিনি বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন এসাসিয়েশনের (রেজি.) কেন্দ্রীয় মহাসচিব, ৬৪ জেলায় যার কমিটি রয়েছে। রীট দাখিলকালে তিনি আমাদের অর্থনীতিতে সিনিয়র সাব এডিটর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পিটিশনার অন্য দু’জন হলেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা, বাসসের বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ল রিপোর্টার্স ফোরাম ও কুমিল্লা সাংবাদিক ফোরামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. দিদারুল আলম ও তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, বর্তমানে ক্যামব্রিয়ান স্কুল এন্ড কলেজে উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হিসেবে কর্মরত মো. আনিসুর রহমান মীর। রীট সম্পর্কে আনিসুর রহমান মীর গণমাধ্যমকে বলেন, আমি প্রথমেই আমাদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট একলাছ উদ্দিন ভুইয়াকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই। আমরা চেয়েছিলাম কোটা সংস্কার করতে। এখন দেখছি রাষ্ট্র সংস্কার হয়ে যাচ্ছে। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের।তিনি বলেন, সেই সময়ে কোটা সংস্কারের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি করতে মোহাম্মদ আবদুল অদুদ ভাই দেশের বরেণ্য শিক্ষাবিদ-বুদ্ধিজীবি ও ছাত্র-জনতার শতাধিক সাক্ষাতকার/প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন এবং ৫ আগস্টের বিজয়ের নেপথ্যে ইনকিলাব ও তার ব্যক্তিগত ভূমিকা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। তাছাড়া দিদার ভাইয়ের ভূমিকাও অসামান্য। বাসসের বিশেষ প্রতিনিধি দিদারুল আলম বলেন, সরকারি চাকরি ক্ষেত্রে জেলা কোটার কারণে বিশেষ কিছু জেলার মেধাবী প্রার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে দেখে তার প্রতিকার চেয়ে আমরা রীট করি। এখন ভাবতেই ভালো লাগছে যে, আমরা যে রীট করেছিলাম, সেটাকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপি এত বড় একটি আন্দোলন সফল হয়েছে। রীট প্রস্তুতিতে আমাদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট একলাছ উদ্দিন ভুইয়া যে পরিশ্রম করেছেন, তার জন্য তাকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা। রীটের বাইরে আন্দোলনকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে আমার প্রিয় সহপাঠী মোহাম্মদ আবদুল অদুদ যে সময় ও শ্রম বিনিয়োগ করেছেন, রাষ্ট্রের দায়িত্ব তাকে মূল্যায়ণ করা। ইনকিলাব সাংবাদিক মোহাম্মদ আবদুল অদুদ বলেন, আজ খুবই সম্মানিতবোধ করছি।কেননা, আমাদের রীটের কারণে আন্দোলন। আন্দোলনের কারণে রাষ্ট্রকাঠামোয় ব্যাপক পরিবর্তন।অনেক রক্তের বিনিময়ে এসেছে এই পরিবর্তন। যারা জীবন দিয়েছেন আমি তাদের আত্মার মাগফিরাত ও যারা আহত তাদের দ্রæত সুস্থতা কামনা করছি। অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা, সঠিক পথে দেশটাকে পরিচালনা করুন।এমন কিছু করবেন না, যখন মানুষ মনে করবে যে আগেই ভালো ছিলাম। দেশের জনগণকে বলব, একটু সময় দিন। রাতারাতি অনেককিছু হবে না।কোটা সংস্কারের রীটকারী হিসেবে আমাদের যে কাউকে কোনো দায়িত্ব দিলে এই সরকারের সাথে কাজ করারও অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তিনি।

  • বাংলাদেশ