কুমিল্লা জেলার বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার বিভিন্ন হাঁট-বাজার সংলগ্ন এলাকায় সড়কের উপর সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ড করে ইজারা প্রদানের মাধ্যমে জিপি’র চাঁদা উঠানো হয়। এই জিপি’র চাঁদা আদায়ের ফলে সাধারণ যাত্রীদের কাছে চালকরা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে। এতে প্রতিনিয়তই চালক ও যাত্রীদের মধ্যে কথা কাটাকাটিসহ কোন কোন সময় হাতাহাতির ঘটনা ঘটে থাকে। কুমিল্লা-মীরপর সড়কের নিত্যদিনের চিত্র এগুলো। একটু বৃষ্টি হলে কিংবা কিছু যাত্রী বেশি হলে অথবা সন্ধ্যা হলেই ক্রমান্বয়ে ভাড়া বৃদ্ধি পেতে থাকে। এতে স্কুল কলেজগামী ছাত্রছাত্রী এবং শ্রমজীবি মানুষ ও চাকুরিজীবিদের ভোগান্তি বৃদ্ধি পায়। স্থানীয় প্রশাসন মাঝে মধ্যে ভ্রাম্যমান অভিযান পরিচালনা করে চালকদের জরিমানা করলেও থেমে থাকে না ভাড়া বৃদ্ধির দৌরাত্ম। প্রশাসনের লোকজন চলে গেলে যেই লাউ সেই কদু হয়ে যায়। স্থানীয় চালকদের অভিযোগ কুমিল্লা শহর এলাকার চালকরা বিভিন্ন সময় অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে, কিন্ত তার প্রভাব স্থানীয় চালকদের উপর বর্তায়। তাছাড়া সড়কের উপর সিএনজি অটোরিকশা স্টেন্ড স্থাপনের ফলে প্রতিনিয়তই যানজটের সৃষ্টি হয়। কুমিল্লা মীরপুর সড়কের ভরাসার বাজার সড়কের উপর সিএনজি অটোরিক্সা স্টেন্ডের ফলে যানজটের সৃষ্টি হয়। বুড়িচং বাজারে সড়কের উপর রয়েছে একাধিক সিএনজি চালিত অটোরিক্সা স্টেন্ড। এতে বুড়িচং বাজারে যানজট লেগেই থাকে। বুড়িচং বাজারে রয়েছে খাড়াতাইয়া-গাজীপুর ও শিকারপুর অটোরিক্সা স্টেন্ড, রামপুর পোষ্ট অফিস সিএনজি অটোরিক্সা স্টেন্ড, পীরযাত্রাপুর সিএনজি অটোরিক্সা স্টেন্ড, কালিকাপুর সিএনজি অটোরিক্সা স্টেন্ড, রাজাপুর সিএনজি অটোরিক্সা স্টেন্ড, জগতপুর-সাদকপুর অটোরিক্সা ও সিএনজি চালিত অটোরিক্সা স্টেন্ড, বারেশ্বর চৌমুহনি সিএনজি চালিত অটোরিক্সা স্টেন্ড, সাহেবাবাদ অটোরিক্সা স্টেন্ড, ব্রাহ্মণপাড়া সদর বাজার সিএনজি অটো রিক্সার স্ট্যান্ড, দুলালপুর অটোরিক্সা ও সিএনজি চালিত অটোরিক্সা স্টেন্ড, বড়ধুশিয়া বাজার সিএনজি চালিত অটোরিক্সা স্টেন্ড, চান্দলা বাজার সিএনজি চালিত অটোরিক্সা ও অটোরিক্সা স্টেন্ড, মীরপুর সিএনজি চালিত অটোরিক্সা স্টেন্ড। কুমিল্লা-বাগড়া সড়কের ফকিরবাজার অটোরিক্সা ও সিএনজি চালিত অটোরিক্সা স্টেন্ড, কালীকাপুর বাজার অটোরিক্সা স্টেন্ড, শংকুচাইল বাজার অটোরিক্সা ও সিএনজি চালিত অটোরিক্সা স্টেন্ডগুলো সড়কের উপর স্থাপন করা হয়েছে। এ স্টেন্ডগুলোর জন্য নির্দিষ্ট কোন জায়গা নেই, কিন্ত স্টেন্ডের নামে ইজারা প্রদান করা লক্ষ লক্ষ টাকা ভাগ বাটোয়ারার অভিযোগ রয়েছে। এদের নির্দিষ্ট কোন স্টেন্ড নেই, কিন্ত স্টেন্ডের নামে ইজারা প্রদান করে বৈধ উপায়ে জিপি নামক অবৈধ চাঁদা উঠানো হচ্ছে। এই জিপির চাঁদা ড্রাইভারদের কল্যাণে কোন কাজে আসে না আবার যাত্রীদের কোন প্রকার কাজেও আসে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিএনজি চালিত অটোরিক্সা চালক দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের চালকদের কথা কেউ চিন্তা করে না। আমাদের দুঃখ দেখার মতো কেউ নেই। আমরা সড়কে উঠলেই জিপির চাঁদা দেওয়া শুরু করতে হয়। বিভিন্ন জায়গায় জিপির চাঁদা দিয়ে এবং গ্যাসের টাকা প্রদান ও মালিকের জমা প্রদান করে নিজের পকেটে আর কিছুই থাকে না। বউ বাচ্চা নিয়ে ভাত খেয়ে বেঁচে থাকাই দায় হয়ে পড়েছে। যাত্রীরা বলেন, কুমিল্লা-মীরপুর সড়কের মতো যাত্রীদের হয়রানী শিকার বাংলাদেশের আর কোথাও হয় না। এই সড়কে সবচেয়ে বেশি যাত্রীরা হয়রানীর শিকার হয়। সচেতন মহল মনে করেন- যে জিপির টাকা চালকদের কোন কাজে ব্যবহার করা হয় না এবং যাত্রীদের কোন উপকারে আসে না তাহলে কার স্বার্থে এই জিপি নামক চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। অপর দিকে সড়কের উপর স্টেশন থাকার কারণে সড়কগুলোতে যানজট লেগেই থাকে। অতি দ্রæত যানজট নিরশনের লক্ষ্যে সড়কের উপর থেকে স্টেন্ডগুলো অন্য স্থানে স্থানান্তর করা প্রয়োজন। এতে একদিকে যাত্রীদের সময় বাঁচবে ও অন্যদিকে যাত্রী হয়রানীও কমবে।