কুমিল্লা জেলার অন্যতম একটি সড়ক কুমিল্লা-বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া- মীরপুর এম এ গণি সড়ক। এ সড়কে প্রতিদিন সিএনজি চালিত অটোরিক্সা, ইজিবাইক, বাস, ট্রাক, মাইক্রো, মটর সাইকেলসহ হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে। কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের বিকল্প সড়ক হিসেবে অনেকেই এ সড়কে যাতায়াত করে থাকে। কুমিল্লা- সিলেট সড়কের মীরপুর থেকে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা সদর এবং বুড়িচং উপজেলা সদর হয়ে এ সড়কটি জেলা সদরের সাথে সংযুক্ত হয়েছে। বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার ২৩৭টি গ্রামের মধ্যে প্রায় ২০০টি গ্রামের লোকজন এ সড়ক ব্যাবহার করে বিভিন্ন কাজে জেলা শহরে আসা-যাওয়া করে থাকে। তাছাড়া বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষক, সরকারী চাকুরিজীবি, ছাত্র-ছাত্রী এবং ব্যবসায়ীরা প্রতিদিনই এ সড়কের মাধ্যমে বিভিন্ন যানবাহনে চলাচল করে। তাই এ দু’ উপজেলার জনগণের জন্য কুমিল্লা-মীরপুর সড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘদিন যাবৎ এ সড়কের বুড়িচং সদর বাজার এলাকায় রাস্তার দু-পাশে অঘোষিত সিএনজি অটোরিক্সা ও ইজিবাইক স্ট্যান্ড গড়ে উঠায় এবং সড়কের দু’পাশে সিএনজি অটোরিক্সা ও ইজিবাইক যত্রতত্র ফেলে রাখার কারনে প্রতিদিনই যানজটের সৃষ্টি হয়। এছাড়া বুড়িচং বাজার,ভরাসার বাজারে দিনের বেলায় বিভিন্ন মালবাহী ট্রাক্টর প্রবেশ করার ফলে আরো বেশি যানঝটের সৃষ্টি হয়। ফলে যাত্রীদের দুর্ভোগের শেষ থাকে না। কোন জরুরী কাজে যাতায়াতে দীর্ঘসময় যানজটে পরে থাকতে হয়। দু’ উপজেলায় দুটি সরকারী হাসপাতাল ও বেশ কয়েকটি বেসরকারী হাসপাতাল রয়েছে। এসব হাসপাতাল থেকে আশংকাজনক অবস্থায় কোন রোগীকে জরুরী ভিত্তিতে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কিংবা সদর হাসপাতালে নেওয়ার সময় অনেক ভোগান্তির সৃষ্টি হয় এবং যানজটের কারণে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকতে হয়। এতে রোগীদের অবস্থা আরোও খারাপ হয়ে কোন কোন সময় মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। বিশেষ করে বুড়িচং ও ভরাসার বাজারেই সবচেয়ে বেশি যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে এ সড়কের যাত্রীদের দুর্ভোগের অন্ত থাকে না। সচেতন মহল মনে করেন, যানজট মুক্ত করতে হলে হয় সড়কের উপর থেকে সিএনজি অটোরিক্সা স্ট্যান্ড গুলো অন্যত্র সরিয়ে ফেলতে হবে অথবা কলেজ গেইট হতে হাসপাতালের উত্তর মোড় পর্যন্ত বাইপাস সড়ক নির্মাণ করতে হবে। কখনো যদি একটি বড় বাস অথবা মালবাহী ট্রাক আসে-তাহলেই তো দুর্ভোগের আর শেষ থাকে না। বুড়িচং উত্তর বাজার থেকে দক্ষিণ বাজার পর্যন্ত সড়কের উপরে কয়েক শত সিএনজি ও অটোরিক্সা পার্কিং করা থাকে। এতে দুটি গাড়ী চলাচল করতে সমস্যা হয় এবং কোন কোন সময় হাটা চলা করাও অসম্ভব হয়ে যায়। তাছাড়া এ ভাবে খাড়াতাইয়া গাজীপুর, বুড়িচং সদর, বারেশ্বর, সাহেবাবাবাদ, ব্রাহ্মণপাড়া সদর, বড়ধুশিয়া, চান্দলা বাজারগুলোতে কোন নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে সিএনজি অটোরিক্সা পার্কিং করায় জনগণের দুর্ভোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। সড়কের দু’পাশে যত্রতত্র সিএনজি ও অটোরিক্সা পার্কিং করার ফলে যানজট যেন কুমিল্লা-মিরপুর এম এ গণি সড়কের নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে দাড়িয়েছে। ফলে নির্দিষ্ট সময়ে কেহই গন্তব্য পৌঁছাতে পারছেন না। সড়কের দু’পাশে সিএনজি অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার যত্রতত্র পার্কিংয়ের কারণেই এ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে বলে অভিযোগ ভোক্তভোগীদের। আবার কেউ কেউ বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সংশ্লিষ্ট দায়িত্বে অবহেলা ও তদারকির অভাব এবং উদাসীনতাকেও দায়ী করছেন। বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া ঘুরে দেখা যায়, সিএনজি অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালকরা ইচ্ছে মতো যেখানে খুশি সেখানে যাত্রীদের নামিয়ে দিচ্ছেন আবার সড়কের মধ্যেই গাড়ি থামিয়ে যাত্রীদের তুলছেন। এতে যেমন যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে, তেমনি ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা সদরসহ কিছু বাজারে যানজট নিরসনের জন্য লোক থাকলেও যানজট নিরসনের তারা হিমশিম খাচ্ছে। বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া সড়কের বিভিন্ন দোকানের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জানা যায়, দোকানের সামনে দাঁড় করিয়ে সিএনজি অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় যাত্রীদেরকে উঠানামা করা হয়। তখন তাদেরকে কিছু বললে চালক উল্টো গালমন্দসহ খারাপ আচরণ করে। তাছাড়া সন্ধ্যা হওয়ার সাথে সাথে চলে তিলোসমতি কারবার। যতই সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসে ততই ভাড়া বাড়তে থাকে। যাত্রীরা যেন সিএনজি অটোরিকশা ড্রাইভারদের হাতে জিম্মি রয়েছে। সিএনজি ড্রাইভাররা তাদের ইচ্ছে মতো ভাড়া বাড়ায় এবং আবার ইচ্ছে মতো কমায়। কোন যাত্রী এই নিয়ে প্রতিবাদ করলে লাঞ্চিত হতে হয়। এলাকার সচেতন মহল মনে করেন, যানজট নিরশনে প্রশাসন কঠোর হলে জনগন ভোগান্তি থেকে রক্ষা পাবে।