‘চিনিতে মাছি ও মৌমাছি বসলেই মরে যায়’ “বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়ার হাট-বাজারের মুদি দোকানগুলোতে ভারতীয় বিষাক্ত চিনিতে সয়লাব”

লেখক: স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ২ মাস আগে

Spread the love

চিনি একটি সু-স্বাধু খাবার। চিনি দিয়ে তৈরী হয় পিঠা, পায়েস, সেমাই, মিষ্টি, লাড্ডু, চাসহ হরেক রকমের মুখরোচক খাবার। চিনি ছাড়া যেন কোন খাবারই জমে উঠে না। প্রতিদিন সকালে চায়ের ঝড় না তুলে কেউ কাজে মনোযোগী হয় না। অফিস, আদালত, হাট-বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, আত্মীয়-স্বজনের বাড়ী সব জায়গাতেই আপ্যায়নের প্রথম ধাপ হলো চা। চা ছাড়া আপ্যায়নের যেন অপূর্ণতা থেকেই যায়। ধনী-গরীব সকল শ্রেণীর ও পেশার মানুষ চা পানে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। চা ছাড়া কোন কথা-বার্তা, আড্ডা ও সভা চলে না। এই চায়ের প্রধান উপকরণ চিনি। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে ভারতীয় চিনির কদর বেশি থাকায় ভারত গুণগত মানহীন বিষাক্ত চিনিগুলো অবৈধ পথে বাংলাদেশে পাচার করে দিচ্ছে। বাংলাদেশের অসাধু ব্যবসায়ীরা দামে কম হওয়ায় গুণগতমান যাচাই বাছাই না করে দেদারছে ছেড়ে দিচ্ছে বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারগুলোতে। বাংলাদেশের চিনিতে বস্তা প্রতি ২০০-৩০০ টাকা কম হওয়ায় বাজারগুলোতে ভাতরীয় চিনির চাহিদা বেশি। সচেতনতার অভাবে ক্রেতারা দামে কম হওয়ায় গুণগতমানহীন ভারতীয় বিষাক্ত চিনির প্রতি আকৃষ্ট হয়ে যায়। তাই তারা যাচাই-বাছাই ছাড়াই ভারতীয় বিষাক্ত চিনি ক্রয় করছে। বুড়িচং বাজারের চা দোকানী সুমন বলেন, ইন্ডিয়া বাংলাদেশ বুঝি না ভাই। দামে যেইটা কম পাই হেইটাই কিন্না আনি। আমরা ১-২ কেজি করে কিনি। এতো যাচাই বাছাই করার দরকার মনে করি না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মুদি দোকানদার বলেন, বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার প্রত্যেকটি হাট বাজারেই রয়েছে ভারতীয় চিনির দাপট। ভারতীয় চিনিটা চাওয়া মাত্রই পাওয়া যায়। এই বাজারগুলো ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় বø্যাকে সহজে চলে আসে। বাংলাদেশের চিনি সহজে পাওয়া যায় না। আবার বাংলাদেশের চিনির চেয়ে ভারতীয় চিনি বস্তা প্রতি ২-৩শত টাকা কম আছে। তাই বাংলাদেশের চিনি থেকে ভারতের চিনি বিক্রয় করলে লাভ বেশি পাওয়া যায়। তাই আমরা ভারতীয় চিনিটা বেশি বিক্রয় করি। বুড়িচং উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের আঃ খালেক বলেন, এই বয়সে কত কিছু দেখলাম। ইন্ডিয়ার চিনিতো স্বাধীনতার পর থেকেই বিভিন্ন পথে বাংলাদেশের ভেতরে আসে। তবে বর্তমানে বাজারে ভারতীয় যে চিনি দেখতে পাওয়া যায়-সেগুলোতে কি যে মিশিয়ে দেয় আল্লাই ভালো জানে। এই গুলোতে মশা মাছি বসলেই মারা যায়। আমরা মানুষতো কোন বাছ বিছার ছাড়াই খাচ্ছি। তাই এতো রোগ বালাইতে ভোগতে হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, বর্তমান বাজারে ভারতীয় চিনিগুলো বিষের ফ্যাক্টরি। এগুলোতে মাছি বসলেও মারা যায়। মাঝে মাঝে আমরা ভারতীয় চিনির বস্তা আটক করে থানায় নিয়ে গিয়ে রাখার পরে দেখতে পাওয়া যায় বস্তার পাশে মাছি মরে পড়ে আছে। এই বিষাক্ত চিনি থেকে দেশের মানুষকে রক্ষা করা উচিত। ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সাহেবাবাদ বাজারের মুদি দোকানদার কবির আহমেদ বলেন, আমরা ভারতীয় চিনি বিক্রয় করি না। ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স ম আজহারুল ইসলাম বলেন, আমরা বাজারগুলো থেকে চিনি ও লবণসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের কিছু নমুনা সংগ্রহ পরীক্ষার জন্য পাঠাবো। এতে কোন বিষাক্ত জিনিস আছে কি না দেখবো। যদি থাকে তাহলে সংশ্লিষ্ট দোকানগুলোকে সিলগালা করে দেব।

  • বুড়িচং
  • ব্রাহ্মণপাড়া