নিজস্ব প্রতিবেদক।।
কুমিল্লার মুরাদনগরে অভাবের তাড়নায় পারভীন আক্তার (৪৫) ও তার মেয়ে মীম আক্তার (১৩) আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গেছে। শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) ভোর রাতে উপজেলার ধামঘর ইউনিয়নের পরমতলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা রুজু করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পারভীন আক্তারের স্বামী ইব্রাহিম মিয়া দেড় বছর পূর্বে মারা গেছেন। তাদের সংসারে দুই ছেলে ও মানসিক ভারসাম্যহীন মীম আক্তার নামে একটি মেয়ে রয়েছে। চরম অভাব অনটনের মধ্যদিয়ে দিন কাটছিল তাদের সংসার। গত ৩ বছর ধার-দেনা করে একমাত্র মেয়েকে সুস্থ্য করে তুলতে চিকিৎসা চালিয়ে যান মা পারভীন আক্তার। দীর্ঘদিন চিকিৎসার পরেও মেয়ে মীম সুস্থ না হওয়ায় আত্মহত্যার পথ বেছে নেন তিনি। শনিবার ভোরে মীম আক্তারের চিৎকারে আশ-পাশের লোকজন এসে দেখে দু’জনেই বিষপানরত অবস্থায় মৃত্যুর যন্ত্রণায় ছটফট করছে। তখন তাদেরকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর নিয়ে যাওয়ার পথে রাস্তায় মা পারভীন আক্তার মারা যান। পরে দুপুর ১২টার দিকে মীম আক্তার কুমিল্লার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
পারভীন আক্তারের বড় ছেলে শাহপরানের স্ত্রী জান্নাত আক্তার বলেন, প্রতিদিনের মতো পরিবারের সবাই রাতে খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। ভোর রাত আনুমানিক ৪টার দিকে আমার ননদ মীম আক্তারের চিৎকারে ঘুম ভাঙ্গলে দৌড়ে গিয়ে দেখি তারা দু’জনে মৃত্যুর যন্ত্রণায় ছটফট করছে। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় চিকিৎসার জন্য তাদেরকে হাসপাতালে পাঠাই।
নিহত পারভিন আক্তারের প্রতিবেশী দেবর তাজু মিয়া জানান, মেয়ের চিকিৎসা করাতে গিয়ে ৭৮ হাজার টাকা ঋণ করেছে। টাকা পাওনাদার কয়েকজন বাড়িতে এসে টাকার জন্য চাপ দিয়ে গেছে।
ধামঘর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের জানান, এ অসহায় পরিবারটির নামে একটি ভিজিডি কার্ড করে দেওয়া হয়েছে। জানুয়ারি মাস থেকে এ সুবিধা ভোগ করতে পারতো।
মুরাদনগর থানার ওসি কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে সূরতহালপূর্বক লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত করার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।