কুবিতে জুনিয়রদের ক্লাসরুমে যাওয়া নিয়ে মারামারি

লেখক: স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১ বছর আগে

Spread the love

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) জুনিয়রদের ক্লাসরুমে যাওয়াকে কেন্দ্র করে ইংরেজি বিভাগের দুই শিক্ষার্থীর মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় এক সাংবাদিককে হেনস্তা করা হয়েছে। সোমবার (২৯ মে) দুপুরে ইংরেজি বিভাগের করিডোরে এ মারামারির ঘটনা ঘটে। সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হেনস্তার শিকার হন দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি রুদ্র ইকবাল। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১৬তম ব্যাচের ক্লাসরুমে যাওয়াকে কেন্দ্র করে ইংরেজি বিভাগের ১৫তম ব্যাচের দুই শিক্ষার্থী হীরা মিয়া ও আরমান উদ্দিনের মাঝে মারামারির হয়। যা মীমাংসা করে দেয় বিভাগ।কিন্তু মীমাংসা করে দেয়ার পরেও হীরার সমর্থনে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেলতলী বিশ্বরোড-সংলগ্ন আনসার ক্যাম্পের সামনে আরমানকে আবারো মারধর করেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজা-ই-এলাহি সমর্থিত শাহাদাত তানভীর রাফি, নওশীন আল ইসলাম, সাইফ আদনান, ফয়সাল, সজীব, আরিয়ান অঞ্জন ও তন্ময়সহ ১০ থেকে ১২জন ছাত্রলীগ কর্মী। রেজা-ই-এলাহি ২০১৭ সালে কুবি শাখা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক। এরপর তিনি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। স¤প্রতি তিনি কুবি শাখার নতুন কমিটিতে সভাপতি পদপ্রার্থী বলে ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তার নেতৃত্বে সা¤প্রতিক সময়ে ক্যাম্পাসে বহিরাগতদেরকে দিয়ে ফাঁকাগুলি ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো ও মারধরের অভিযোগ রয়েছে। তিনিই বিভিন্ন সময়ে ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির নেপথ্যে রয়েছেন বলে অভিযোগ আছে। ঘটনায় সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে দৈনিক ওই সাংবাদিককে হেনস্তা করেন রেজা সমর্থিত আসিফ এন্তাজ রাব্বি, অমিত সরকার ও সাদ্দামসহ অন্য।একই ঘটনার জের ধরে বিকেল ৪টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে প্রক্টরিয়াল বডির উপস্থিতিতেই ফের সাংবাদিকদেরকে হেনস্তা করেন রেজা-ই-এলাহি ও তার অনুসারীরা। এসময় উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের দিকে তেড়ে আসতেও দেখা যায় তাদেরকে। এদের মধ্যে রেজা-ই-এলাহি ও তার অনুসারীদের অনেকেরই নিয়মিত ছাত্রত্ব নেই। সাংবাদিকদেরকে উদ্দেশে করে রেজা-ই-এলাহি বলেন, ‘সাংবাদিকরা এখনো আমাকে চিনে না, আমি কে। এই ক্যাম্পাস কারো বাপের না। সাংবাদিকরা আমাদের কী করবে, দেখে নেব। গুন্ডামির কী দেখছো’ এ ঘটনার পর রেজা সমর্থিত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসে মিছিল দেন। ভুক্তভোগী সাংবাদিক রুদ্র ইকবাল বলেন, ‘আমি আমার পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়েছিলাম। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা বিনা উস্কানিতেই আমার ওপর হামলে পড়ে। ’রেজা-ই-এলাহী বলেন, ‘আমি সাংবাদিকদের হেনস্তা করিনি। তারা আমাদের সাথে উচ্চবাচ্য করেছে। বিশৃঙ্খলাকারী কেউ আমার কর্মী নয়।’নিয়মিত ছাত্র না হয়েও আপনি ক্যাম্পাসে মিছিল করতে পারেন কি না-এমন প্রশ্নে রেজা-ই-এলাহি বলেন, ‘এটা প্রশাসনকে জিজ্ঞেস করেন। আমাকে কেন? আমি সবকিছুই করতে পারি। প্রশাসন এই বিষয়ে অবগত আছে। ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, ‘রেজা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইভিনিং এমবিএ করছে। তবে ক্যাম্পাসে কেউ কিছু করতে চাইলে অবশ্যই প্রশাসনের অনুমতি নিতে হবে।’তিনি আরো বলেন, ‘যে দু’জন শিক্ষার্থী বিশৃঙ্খলা করেছে, তাদের কাছ থেকে কোনো অভিযোগ পাইনি। তারা বলছে তারা মিউচুয়াল হয়ে গেছে। আমরা প্রক্টরিয়াল বডি এখানে মধ্যস্থতা করেছি।’ তবে সাংবাদিক হেনস্তার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি প্রক্টর।কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান বলেন, ‘এই মুহূর্তে কুবি ছাত্রলীগের কোনো সাংগঠনিক কমিটি নেই। কেউ ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে কোনো অপকর্ম করলে, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ তার দায়ভার নেবে না। পদ প্রত্যাশীর কথা বলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদেরকে পদে আনার কোনো প্রশ্নই আসে না।ইনান আরো বলেন, সাংবাদিক হেনস্তার ঘটনায় আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একইসাথে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অনুরোধ করব তারা যেন এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করে।

  • কুমিল্লা