কুমিল্লায় অসহ্য গরম-খরতাপে অতিষ্ঠ হাঁসফাঁস অবস্থা। দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে জীবনযাত্রা। অসহ্য এই গরমে বিশেষ করে দুপুরের দিকে রোদের তাপমাত্রা বেড়ে যায়,এতে দিশেহারা অবস্থা হয় জনজীবনের। যত দিন যাচ্ছে, রোদের তেজ যেনো ততই বাড়ছে। গ্রীষ্মের তপ্ত রোদের উত্তাপে অস্বস্থিতে রয়েছে নগরীর ও নগরীর বাহিরের মানুষজন। দিনে ঘরে-বাইরে কোথাও নেই স্বস্তি। তারপরেও গরমে খানিকটা স্বস্তি এনে শরীর-মনে প্রশান্তি দেয় ডাব ও তরমুজ। কিন্তু ডাব ও তরমুজের দাম চড়া হওয়ায় নিম্নবিত্তদের একমাত্র ভরসা হয়ে উঠেছে সড়কের পাশের আখের শরবত ও লেবুর শরবত। প্রকৃতির এমন পরিস্থিতে একমাত্র স্বস্তি দিতে পারে বৃষ্টি। জানা গেছে, গত ১০ দিন ধরে রোদের তাপ এতোটাই বেড়েছে যে, দিনের বেলায় ঘর থেকে বের হলেই শরীরে আগুনের ছেঁকা লাগার মতো অবস্থা। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া দুপুরে ঘর থেকে কেউ বের হচ্ছেন না। যারা বের হচ্ছেন তারা ঘেমে রীতিমতো হাঁপিয়ে বাড়ি ফিরছেন। আর রিকশা চালকদের মাথার তালু তপ্ত আগুনের হল্কায় গরম হয়ে যাচ্ছে। কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড়, রাজগঞ্জ, টমসমব্রীজ,চকবাজার, আদালত মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, প্রচন্ড গরমের উত্তাপে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। তপ্ত রোদ মাথায় নিয়েই পেটের টানে রিক্সা, ভ্যান ইজিবাইক ও মাহিন্দ্রা নিয়ে ছুটে চলছেন। খেটে খাওয়া এসব মানুষজন ভাড়ার ফাঁকে সময় পেলেই গাছের ছায়ায় জিরিয়ে নিচ্ছেন। আবার কেউ রিকশায় বসেই ঘুমোচ্ছেন। এমনকি প্রচন্ড গরমের প্রভাবে বাড়তি ভাড়াও হাঁকাচ্ছেন তারা। কাঠফাটা রোদে নিজেদের টেকানোর সাধ্য নেই জানিয়ে একাধিক রিকশা চালক বলেন, ‘সকাল থেকে দু’চারটি ভাড়া টানতেই সূর্যের দাপটে শরীর ক্লান্ত হয়ে গেছে। কোনো মতে একদিন রিকশা চালালে পরেরদিন আর রিকশা নিয়ে বের হওয়ার মতো শরীরের অবস্থা থাকে না। এমন কঠিন অবস্থার মধ্যেও পেটের তাগিদে রিকশা নিয়ে বের হতে হয়। হৃদয় হাসান নামে এক পথিক বলেন, কান্দিরপাড় আইয়া দেখলাম রোদের তাপে মাথা ফাইটা যাইতাছে।এত গরম লাগছে যা বলার বাহিরে। আরেক পথচারী সুফিয়া তার মেয়ের স্কুল ছুটির পর বাসায় নিয়ে যাওয়ার সময় বলেন, এই গরমে কারনে পুরো শরীর ঘামে ভিজে গেছে। ২ বার গোসল করেছি। আমার যদি এত গরম লাগে,তাহলে আমার মেয়ের অবস্থাতো আরও করুন। চিন্তা করছি আগে বাঁচতে হবে, কাল যদি গরম বেশি থাকে তাহলে বাচ্চাকে স্কুলে নিবনা। গ্রীষ্মকালের এই সময়ে তাপমাত্রা একটু বেশি থাকাটাই স্বাভাবিক জানিয়ে কুমিল্লা আবহাওয়া অধিদপ্তরের অফিসার ইনচার্জ ইসমাইল হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রির উপরে উঠলে মাঝারি এবং ৪০ ডিগ্রির উপরে উঠলে তীব্র তাপদহ শুরু হবে। সোমবার কুমিল্লার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ এভাবে তাপদাহ বাড়লে যেকোনো সময় বৃষ্টিসহ কালবৈশাখী ঝড় হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন এই আবহাওয়া অধিদপ্তর। কুমিল্লা জেলা ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. নিসর্গ মেরাজ বলেন, এই গরমের সময় কেহ যদি গরম তাপে বেশিক্ষণ থাকে তাহলে তার মৃত্যু ও হতে পারে। তাই নিয়ম হলো ছায়ায় বেশিক্ষণ থাকা ও বেশি বেশি পানি পান করা।এখন পর্যন্ত কুমিল্লায় গরমে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি।