‘সফলতার ৪ বছর’ ব্রাহ্মণপাড়ার কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ মাহবুবুল হাছান

লেখক: স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১ বছর আগে

Spread the love

কৃষিই সমৃদ্ধি, কৃষিই মুক্তি। একটি দেশ উন্নত হয় কৃষির মাধ্যমে। সরকার করোনার পর থেকে কৃষিকে উন্নয়নের অন্যতম হাতিয়ার ঘোষণা করেছে। সেজন্য সরকার কৃষির উপর ভর্তুকি দিয়েও কৃষকের পাশে কাজ করছে। কুমিল্লা জেলার অন্যতম একটি উপজেলা ব্রাহ্মণপাড়া। এই এলাকায় কৃষি ভিত্তিক অনেক কাজ হয়। গ্রামাঞ্চলে কৃষকেরা দিনরাত পরিশ্রম করে ফসল ফলায়। কিন্তু অনেক সময় পরামর্শের অভাবে কৃষকেরা সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। সেই সময় ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হিসাবে যোগদান করেন কৃষিবিদ মো. মাহবুবুল হাছান। যোগদানের পর থেকেই পাল্টে যায়) উপজেলা কৃষির চিত্র। যোগদানের পর থেকে অদ্যাবদি সফলতা ও সুনামের সাথে চার বছর পার করছেন তিনি। উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের ২০ জন উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা দিয়ে কৃষকের পাশে দাড়িয়েছে। সঠিক সময় সঠিক পরামর্শ, বিনামূল্যে সার বীজ বিতরণ, কৃষকদের নিয়ে মাঠ দিবস, পোকা দমনে কার্যকর ভূমিকাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন উপজেলা কৃষি অফিস। বিগত ৪ বছরে বিভিন্ন সফলতা অর্জন করেছে কৃষকের পাশে দাড়িয়ে কৃষি অফিসটি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সফলতাগুলো হচ্ছে- পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা মেটাতে সরকার পারিবারিক সবজি পুষ্টি বাগানের উপর গুরুত্বারোপ করেছে। সেজন্য উপজেলায় কৃষকের পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা মেটাতে তাদের বসতবাড়ির আঙিনায় ২০২১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ৫২০ টি পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন করা হয়েছে। মকিমপুর আশ্রয়ন প্রকল্পে বসবাসরত জনগোষ্ঠীর পুষ্টির চাহিদা মেটাতে শাকসবজি চাষাবাদের জন্য ৩৫ টি বেড তৈরী করা হয়েছে। এছাড়া আরো ৫০ টি বেড তৈরী প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বেড তৈরী, শাকসবজির বীজ সার নেট ও ঝাজারিসহ সকল উপকরণ সামগ্রী উপজেলা কৃষি অফিস সরবরাহ করেছে। কৃষি সেবা- উপজেলার কৃষকগন কোন প্রকার হয়রানি ছাড়াই কৃষি পরামর্শ ও সেবা পেয়ে থাকেন। সরকারি সম্পত্তি উদ্ধার- উপজেলার সদর ইউনিয়ন ও চান্দলা ইউনিয়নের দুটি এসএএও কোয়াটার উদ্ধার করে তার চারপাশে বাউন্ডারি তৈরী করা হয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ১০ কোটি টাকা এবং সেখানে অফিসের কর্মকর্তারা থাকেন। সরিষা- ২০১৯-২০ অর্থবছরে সরিষা আবাদ ছিল ৫২ হেক্টর, কিন্তু বর্তমানে তা গিয়ে ১৯০ হেক্টরে দাড়িয়েছে। এতে করে তেলে উৎপাদন বেড়েছে এবং ভোজ্য তেলের চাহিদা মেটানোসহ জাতীয় অর্থনীতিতে যথেষ্ট ভূমিকা রেখে চলছে। আউশ- ২০১৯-২০ অর্থবছরে আউশের আবাদ ছিল ৩হাজার ৮শত হেক্টর কিন্তু এখন তা গিয়ে প্রায় ৫ হাজার হেক্টরে দাড়িয়েছে। এতে করে ধানের উৎপাদন বেড়েছে। ২০১৯ সালে উৎপাদন ছিল ১৬ হাজার ৫শত মেট্রিক টন এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে উৎপাদন বেড়ে দাড়ায় ২০ হাজার মেট্রিক টন। যা এলাকার চাহিদা মিটিয়ে জাতীয় অর্থনীতিতে যথেষ্ট ভূমিকা রাখছে। আমন- ২০১৯-২০ অর্থবছরে আমন আবাদ ছিল ৪ হাজার ৯শত হেক্টর বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ৫ হাজার ৫শত হেক্টর। এতে করে ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৯ সালে উৎপাদন ছিল ১৯ হাজার মেট্রিক টন এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে উৎপাদন বেড়ে দাড়ায় ২৪ হাজার মেট্রিক টন। যা এলাকার চাহিদা মিটিয়ে জাতীয় অর্থনীতিতে যথেষ্ট ভূমিকা রাখছে। বোরো- ২০১৯-২০ অর্থবছরে বোরো আবাদ ছিল ৮ হাজার ৪শত হেক্টর বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ৮ হাজার ৬শত হেক্টর। এতে করে ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৯ সালে উৎপাদন ছিল ৫৪ হাজার মেট্রিক টন এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে উৎপাদন বেড়ে দাড়ায় ৫৫ হাজার মেট্রিক টন। যা এলাকার চাহিদা মিটিয়ে জাতীয় অর্থনীতিতে যথেষ্ট ভূমিকা রাখছে। কৃষক প্রশিক্ষণ- কৃষি বিভাগ সর্বদাই কৃষকদেরকে আধুনিক প্রযুক্তি, ফসলের জাত, রোগবালাই, কীটনাশকের ব্যবহারসহ নানা প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে। এছাড়া সরকারি ভর্তুকিতে হারভেষ্টার, পিকআপ ভ্যান, রাইস প্লান্টারসহ বিভিন্ন আধুনিক যন্ত্রপাতি কৃষকদের মাঝে বিতরণ করছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মাহবুবুল হাছানের নির্দেশনায় কৃষি বিভাগের সকল কর্মকর্তারা মাঠে সর্বদা কৃষকদের পাশে থেকে পরামর্শ দিয়ে আসছে। এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মাহবুবুল হাছান বলেন, কৃষি প্রধান দেশে সরকার কৃষকের পাশে থেকে উন্নত বাংলাদেশ করার জন্য কৃষিকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষকের পাশে থেকে কাজ করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছে। তার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার জন্য কাজ করছি। একটি দেশ কৃষির উপর বেঁচে থাকে। কৃষকের পাশে থেকে কাজ করে একটি উন্নত রাষ্ট্র গঠন করার জন্য কাজ করে যাবো। ৪ বছরে উপজেলায় আমূল পরিবর্তন এসেছে। এখানে কৃষকরা এখন বিভিন্ন পরামর্শ নিয়ে সফলতা অর্জন করছে। তাদের সাথে আরেকটু সফলতা অর্জন করতে চাই।

  • ব্রাহ্মণপাড়া