ব্রাহ্মণপাড়ায় ৯ মাসে ১০৪ জন নিয়েছে জলাতঙ্কের টিকা

লেখক: আতাউর রহমান
প্রকাশ: ১১ মাস আগে

Spread the love

কুকুর, বিড়াল ও শিয়াল জাতীয় প্রাণির কামড় খেয়ে ৯ মাসে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে জলাতঙ্কের টিকা নিয়েছে ১০৪ জন। এদের মধ্যে কুকুর ও বিড়ালের কামড়ের রোগীই বেশি। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তর জানায়, কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত ৯ মাসে ( জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) কুকুর, বিড়াল, শিয়াল, বানর, চিকা ও ইঁদুরের কামড় খেয়ে জলাতঙ্কের টিকা নিয়েছে ১০৪ জন রোগী। এদের মধ্যে কুকুরের কামড়ে ৬৩ জন, বিড়ালের কামড়ে ৩৪ জন, শিয়ালের কামড়ে ৩ জন, চিকার কামড়ে ২ জন ও বানরের কামড়ে ১ জনকে দেওয়া হয়েছে জলাতঙ্কের টিকা। ভুলভাল চিকিৎসা না নিয়ে এসব প্রাণির কামড় খাওয়া রোগীদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লে­ক্সে এসে জলাতঙ্কের টিকা নেওয়ার আহ্বান জানান সংশ্লিষ্ট দপ্তর। সূত্র জানায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জলাতঙ্কের টিকা সর্বরাহ করা আছে। জরুরি সেবার জন্য জরুরি বিভাগ সার্বক্ষণিক খোলা থাকে। জানা গেছে, জলাতঙ্ক একটি মারাত্মক রোগ, যা একবার হলে রোগীকে বাঁচানো বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। র‌্যাবিস ভাইরাস দ্বারা কোনো মানুষ বা প্রাণী আক্রান্ত হলে যে রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায় তাকে বলা হয় জলাতঙ্ক রোগ। কুকুর, বিড়াল, বানর, বাদুড়, বেজি ইত্যাদি প্রাণী র‌্যাবিস ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হলে এবং এরা মানুষকে কামড়ালে এই রোগ হয়। এটি এক প্রাণী থেকে আরেক প্রাণীর দেহে স্থানান্তরিত হতে পারে তার লালা বা রক্তের দ্বারা। এদের মুখের লালায় র‌্যাবিস ভাইরাসের জীবাণু থাকে। কোনোভাবে তা সুস্থ প্রাণীর রক্তের সংস্পর্শে এলে, রক্তের মাধ্যমে তা সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং জলাতঙ্ক রোগ সৃষ্টি হয়। এই ভাইরাস প্রায় সব স্তন্যপায়ী প্রাণীকেই আক্রান্ত করতে পারে। মানুষ সাধারণত কুকুরের কামড়ে জলাতঙ্কে বেশি আক্রান্ত হন। যে কুকুর র‌্যাবিস ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত সেই কুকুর কাউকে কামড়ালেই জলাতঙ্ক রোগ হয়। দেশে বেশির ভাগ জলাতঙ্ক রোগই হয় কুকুর কামড়ালে। এই রোগ মস্তিষ্ক এবং মেরুদন্ডকে প্রভাবিত করে। চিকিৎসকরা জানান, এই রোগে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই রোগী মারা যায়। কোনো অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করতে পারে না। তবে উপশমমূলক চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হয়। তবে এই রোগের টিকা আছে। র‌্যাবিস প্রাণী কামড় দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে টিকা নিলে এই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু হাসনাত মোঃ মহিউদ্দিন মুবিন কালবেলাকে বলেন, জলাতঙ্ক একটি মারাত্মক রোগ। জলাতঙ্ক আক্রান্ত কোনো প্রাণির রক্ত, লালা বা কামড়ে এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। এ রোগে আক্রান্ত অধিকাংশ রোগীই মারা যায়। জলাতঙ্ক রোগী শুন্যে নামানোর লক্ষ্যে সারাদেশের ন্যায় ব্রাহ্মণপাড়ায়ও জলাতঙ্কের প্রধান উৎস কুকুরের মধ্যে ব্যাপকহারে জলাতঙ্ক প্রতিরোধী ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়েছে। কুকুর, শিয়াল, বিড়াল, বাদুড়, বেজি, বানর জাতীয় প্রাণীর কামড় খাওয়ার পর যত দ্রæত সম্ভব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে জলাতঙ্কের টিকা নিতে হবে। সরকার বিনামূল্যে এই টিকা দিচ্ছেন। এক্ষেত্রে কোনোভাবেই ঝাড়ফুঁক ও কবিরাজি চিকিৎসা নেওয়া যাবে না।

  • ব্রাহ্মণপাড়া