ব্রাহ্মণপাড়ায় শীতকালীন পিঠা বেচাকেনার ধুম

লেখক: স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ৯ মাস আগে

Spread the love

প্রতিবছর শীত এলেই হাট-বাজারে ও লোকসমাগম হয় এমন স্থানে বিক্রি হয় শীতকালীন নানারকম পিঠা। এসব পিঠার মধ্যে রয়েছে ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, পাটিসাপটা পিঠা, গুলগুলি ও পুলিপিঠা। কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার বিভিন্ন হাটবাজার ঘুরে দেখা গেছে শীতকালীন এসব পিঠার স্বাদ নিতে ভিড় করছেন বিভিন্ন বয়সি শ্রেণী-পেশার মানুষ। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার সদর বাজারের সিএনজি স্ট্যান্ড, একই বাজারের রশীদ মার্কেটের সামনের ফুটপাতে, বড়ধুশিয়া বাজারের ফুটপাতে, চান্দলা বাজারের মধ্য বাজার ফুটপাতসহ উপজেলার বিভিন্ন বাজার ও বিভিন্ন রাস্তার ফুটপাতে ও মোড়ে মোড়ে চলছে পিঠা বিক্রির ধুম। ভাপা পিঠার পাশাপাশি এসব ভ্রাম্যমাণ পিঠা বিক্রেতারা বিক্রি করছেন চিতই পিঠা, পাটিসাপটা, গুলগুলি ও পুলিপিঠা। বিকেল থেকে পিঠা বিক্রি শুরু হলেও সন্ধ্যার পরেই জমে ওঠে এসব পিঠা বিক্রি। বেশিভাগ দোকানেই পিঠা বিক্রি করছেন নিম্নবিত্ত পরিবারের পুরুষ ও মহিলারা। অন্য পেশার পাশাপাশি বাড়তি আয়ের উদ্দেশ্যে বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এ পিঠা বিক্রি করছেন তারা। উপজেলার সদর বাজারের পিঠা বিক্রেতা মো. কামাল হোসেন বলেন, সারাদিন সাংসারিক বিভিন্ন কাজ শেষে বাড়তি আয়ের আশায় বিকেল থেকে এই বাজারে বসে পিঠা বিক্রি করতে। এতে অভাবের সংসারটা একটু ভালোমতো চলে। প্রতিদিন ভালোই পিঠা বিক্রি হয়। অনেকেই আসেন পিঠা নিতে। কেউ কেউ এখানে দাঁড়িয়েই গরম গরম পিঠা খান। আবার কেউ কেউ পিঠা কিনে বাড়ি নিয়ে যান। প্রতিদিন গড়ে দুই হাজার টাকার মতো উপার্জন করি। উপজেলার বড়ধুশিয়া বাজারের পিঠা বিক্রেতা কেশু মিয়া বলেন, আমি প্রতিবছরই শীতকালে পিঠা বিক্রি করি। এ বছরও ভাপা ও চিতই পিঠা বিক্রি করছি। খেটে-খাওয়া মানুষ আমরা একটু বাড়তি আয়ের আশায় পিঠা বিক্রি করছি। এই বাজারে পিঠার চাহিদাও রয়েছে। এই কাজে আমার স্ত্রী আমাকে সাহায্য করছে। প্রতিদিন বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দেড় দুই হাজার টাকার পিঠা বিক্রি হয়। পিঠা কিনতে আসা শামীম হোসেন বলেন, শীতকালে একসময় ঘরে ঘরে এসব পিঠাপুলি তৈরি করা হতো, সময়ের পরিক্রমায় আজ তা আর তেমন একটা দেখা যায় না। এখনকার মহিলারাও বাড়িতে পিঠা তৈরি করতে ঝামেলা মনে করেন। তাই এসেছি বাজার থেকে পিঠা কিনে নিয়ে পরিবারের সবাই মিলেমিশে খাব। এতে শীতকালীন পিঠার স্বাদও পেয়ে যাই। পিঠা কিনতে আসা আরেক ক্রেতা ওবায়দুর রহমান বলেন, বাচ্চারা ভাপা পিঠা খেতে চেয়েছে তাই এখানে এসেছি পিঠা নিতে। আমি প্রায়ই এখান থেকে পিঠা কিনে বাসায় নিয়ে যাই। শীত মৌসুমে সকালে ও সন্ধ্যায় পিঠা খেতে ভালোই লাগে। পিঠা খেতে আসা তানভীর আলম বলেন, প্রায়ই বন্ধুবান্ধবসহ এখানে পিঠা খেতে আসি। শীতকালে সন্ধ্যার পর পিঠা খেতে ভালো লাগে। এসব পিঠা খাওয়ার সময় নিজেকে প্রকৃত বাঙালি বাঙালি মনে হয়। চান্দলা মডেল হাই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক মোঃ অপু খান চৌধুরী বলেন, শীতকালে বিভিন্ন রকমের পিঠা তৈরি আবহমান বাংলার একটা ঐতিহ্য। এ ঐতিহ্যে অনেকটা ভাটা পড়লেও উপজেলার বিভিন্ন বাজারে নানারকম পিঠা বিক্রিতে নবান্নের চিত্র উঠে আসছে। এতে অনেকেই এসব পিঠা খাওয়ার মাধ্যমে নবান্নের স্বাদ পায়।

  • ব্রাহ্মণপাড়া