ব্রাহ্মণপাড়ায় শিক্ষকদের অবহেলায় স্কুল ছাত্রীর মৃত্যুর অভিযোগ

লেখক: স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১ বছর আগে

Spread the love

কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় সঠিক সময়ে চিকিৎসা না পাওয়ায় বড়ধুশিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের খাদিজা আক্তার (১৪) নামে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার চান্দলা ইউনিয়নের বড়ধুশিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। নিহত খাদিজা উপজেলার বড়ধুশিয়া এলাকার ইসমাইল হোসেনের মেয়ে। নিহতের পরিবারের অভিযোগ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অবহেলার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, খাদিজা স্থানীয় বড়ধুশিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী। প্রতিদিনের মতো বইপত্র নিয়ে সে স্কুলে যায়। দুপুরে টিফিনের বিরতির সময় সে বিদ্যালয়ে অসুস্থ হয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। তার সহযোগীরা তাকে বিদ্যালয়ের বেঞ্চে শুয়িয়ে দেয়। এ সময় বিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক এগিয়ে আসেনি বলেও অভিযোগ তোলে শিক্ষার্থীরা। ঘণ্টা দুয়েক পর খবর পেয়ে তার বাবা ইসমাইল হোসেন গিয়ে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। কর্তব্যরত চিকিৎসক তার শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা প্রদান শেষে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে প্রেরণ করে। পরে পথিমধ্যেই সে মারা যায়। এ ব্যপারে নিহতের সাথে পড়ুয়া শিক্ষার্থী ও চাচাতো বোন জামিলা খাতুন জানায়, টিফিনের সময় প্রতিদিন তারা একসাথে বাড়িতে আসতো। ঘটনার দিনও টিফিনের সময় খাদিজাকে বাড়ি যেতে বললে খাদিজার শরীর ভালো লাগছে না বলে জামিলাকে একা চলে যেতে বলে। জামিলা বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ে ফিরে শুনতে পায় খাদিজা অজ্ঞান হয়ে শ্রেণিকক্ষে পড়ে আছে। এ সময় সে বাড়িতে খবর দিলে খাদিজার বাবা-মা ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। নিহতের চাচা মোঃ মোস্তফা জামান বলেন, ‘আমরা শিক্ষকদের বিচার চাই। শিক্ষকদের অবহেলায় আমার ভাতিজী মারা গেছে। শিক্ষকরা সময়মত আমাদের খবর দেয়নি। তারা আমার অজ্ঞান ভাতিজীকে দেখতেও যায়নি। আমার ভাতিজীর বন্ধুরা তাকে বেঞ্চে শুইয়ে রাখে। আমার ভাই খবর পেয়ে ছুটে গিয়ে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। এ ব্যপারে নিহতের পিতা ইসমাইল হোসেন বলেন, শিক্ষকদের অবহেলায় আমার মেয়ে খাদিজা মারা গেছে। আমার মেয়ে অসুস্থ হওয়ার সাথে সাথে যদি তারা আমাদের খবর দিতো তাহলে আমার মেয়েকে চিকিৎসা করানো যেতো। আমার মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে আছে, অথচ তাকে কোনো শিক্ষক দেখতেও যায়নি, আমাদের খবরও দেয়নি। ডাক্তার বলেছে আমার মেয়েকে অনেক দেরি করে নিয়ে গেছি। এ ব্যপারে বড়ধুশিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হুমায়ুন কবির বলেন, আমি বিদ্যালয় থেকে দুপুর একটায় বের হয়ে উপজেলায় একটি অনুষ্ঠানে ছিলাম, খাদিজা কয়েক দিন যাবত অসুস্থ ছিল, ঘটনার দিন বিদ্যালয়ে সে ভূমি করার পর অজ্ঞান হয়ে যায়, পরে আমাদের শিক্ষকরা তার অভিভাবকদের খবর দিলে তারা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। শুক্রবার সকাল ১০ টায় খাদিজার জানাজার নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এ সময় উপস্থিত শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী জানান, শিক্ষকদের অবহেলা ও চিকিৎসার অভাবে অকাল মৃত্যু হয় খাদিজার। আমরা এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

  • ব্রাহ্মণপাড়া