ব্রাহ্মণপাড়ায় ইউপি সদস্যের হামলায় মুক্তিযোদ্ধাসহ আহত-৫

লেখক: স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১ বছর আগে

Spread the love

কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মাধবপুর ইউপি সদস্য মিয়া মোহাম্মদ মিঠুর হামলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. অহিদ উল্লাহ (৭০) সহ একই পরিবারের ৫ জন গুরুতর আহত হয়েছে। গত ১৮মে বৃহস্পতিবার বিকালে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে মাধবপুর গ্রামের মৃত আব্দুল খালেকের নিরীহ পরিবারের উপর হামলা করে একই গ্রামের ইউপি সদস্য মিয়া মোহাম্মদ মিঠু ও তার সহযোগী টিটু ও মিল্টন মিয়া। হামলায় আহত হয় মোসা. ডালিয়া, জাকির হোসেন, সুমা আক্তার, পারভীন আক্তারসহ মোট ৪ জন। এসময় বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. অহিদ উল্লাহ তাদেরকে বাঁচাতে গেলে তার উপরেও হামলা চালায় মিয়া মোহাম্মদ মিঠু মেম্বার। হামলায় আহত সকলে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই ঘটনায় গত ১৮মে বৃহস্পতিবার রাতে ব্রাহ্মণপাড়া থানায় ২টি অভিযোগ করা হয়। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন, মো. টিটু মিয়া, মো. মিল্টন মিয়া, মিয়া মোহাম্মদ মিঠু মেম্বার, মো. রয়েল মিয়া, মো. রুবেল মিয়া, মিয়া মোহাম্মদ শাহাদাত। হামলায় আহত সুমা আক্তার বলেন, গত বৃহস্পতিবার বিকালে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের পাশে আমাদের একটা গাছ তুফানে ভেঙে ফেলে। ভাঙ্গা গাছটি মৃত, ফালু মিয়া দুই ছেলে টিটু এবং মিল্টন মিয়া কেটে নেওয়ার জন্য ভাড়া করে মিঠু মেম্বার ও তাদের সহযোগী আরো কয়েকজনকে নিয়ে আসে। এসময় আমি আর আমার জাল ডালিয়া বাঁধা দেই । বাঁধা দিলে তারা বলে এই জায়গা আমাদের। এই বলে অতর্কিত ভাবে আমাদের উপর হামলা করে। আমাদের কাপড় চোপড় ছিড়ে ফেলে। আমি ভিডিও করার জন্য মোবাইল বাহির করলে মিঠু মেম্বার আমার হাত থেকে জোর করে মোবাইলটা নিয়ে যায় এবং আমার গলায় থাকা ১০আনা ওজনের স্বর্ণের হাড়টি নিয়ে যায়। এসময় আমাদের সাথে আরো অনেক কিছু হয়েছে যা বলতে পারবো না। আমরা জানি সাধারণ মানুষ বিপদে পড়লে এলাকার মেম্বারের কাছে যায়। যদি মেম্বারই হামলার মুল নায়ক হয় তাহলে আমরা নিরীহ মানুষ কার কাছে যাবো। তারা এখানে হামলা করে ক্লান্ত হয় নাই সেখান থেকে এসে আলী আহাম্মদ চেয়ারম্যানের বাড়ির পাশে রাস্তার মোড়ে আবার আমার বাসুর জাকির ভাইয়ের উপরে হামলা করে। ভাইকে বাঁচানো জন্য পারভীন আপা আসলে তার উপরেও হামলা করে তাকে লাথি দিয়ে মাটিতে ফেলে বাঁশ দিয়ে পাছায় আঘাত করে। একই বাঁশ দিয়ে ডালিয়া ভাবির মাথা ফাটায় মিঠু মেম্বার। আমাদেরকে বাঁচানোর জন্য আমার চাচাতো ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা অহিদ উল্লাহ ভাই আসলে তার উপরেও হামলা করে মিঠু মেম্বার। আমরা এখন এই হামলার সঠিক বিচার চাই। হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। বীর মুক্তিযোদ্ধা মো.অহিদ উল্লাহ বলেন, আমি ঘটনার সময় পাশ দিয়ে মসজিদ থেকে বাড়িতে যাচ্ছি । দেখি মিঠু মেম্বার, টিটু, মিল্টনসহ আরো কয়েকজন তাদেরকে পিটতেছে। আমি দৌড়াইয়া তাদের কাছে যাই এবং সেখান থেকে তাদেরকে চলে আসতে বলি, এসময় মিঠু মেম্বার আমার কানের মধ্যে সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে চড় মারে এবং তার সাথে থাকা বাকি লোকজন আমাকে এলোপাতাড়ি পিটাতে থাকে। মিঠু একজন মাদক ব্যবসায়ী এবং সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে মাদকের একাধিক মামলা আছে। সে আবার এই এলাকার মেম্বার। তার মতো লোকে আমার মতো একজন মুক্তিযোদ্ধার গায়ে আঘাত করেছে । আমি প্রশাসনের কাছে এই হামলা বিচার চাই। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়ে যেহেতু এই সন্ত্রাসীর মাইর খাই বুঝতে হবে এই সন্ত্রাসীদের কাছে কেউ নিরাপদ নয়। আহত পারভীন আক্তার বলেন, আমি দেখি আমার ভাইয়ে তারা পিট্টা মাইরা লাইতাছে। আমি দৌড়াইয়া আমার ভাইয়ের কাছে যাই। এসময় তারা আমারে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দেয় এবং বাশঁ দিয়ে আমার উপরে আঘাত করে। আমার মাঝার মধ্যে বাঁশ দিয়া অনেক গুলো পিটা দেয়। মোসা. পাখি আক্তার বলেন, আমি তাদেরকে বাঁচানোর জন্য গেলে মিঠু মেম্বার বলে তুই এখান থেকে যা। নয়তো তুরে এখন গাড়ি দিয়া উঠাইয়া নিয়া জামু। নিয়া আমার রুমে ধর্ষণ করমু। তুর কোন বাপ আছে থাকলে বাচাতে বলিস। এবিষয়ে ব্রাহ্মণপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মাহমুদুল হাসান রুবেল বলেন, এবিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবো।

  • ব্রাহ্মণপাড়া