“বুড়িচং সদর বাজারে ১২ লক্ষ টাকার ৭৯টি সিসি ক্যামেরা অচল, বাড়ছে চুরি

লেখক: স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১২ মাস আগে

Spread the love

কুমিল্লা জেলার ঐতিহ্যবাহী বুড়িচং সদর বাজারের ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে এবং চুরি বন্ধের লক্ষে পুরো বাজারে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। বুড়িচং বাজারের ছোট বড় সকল ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বিভিন্ন পরিমানে চাঁদা উঠিয়ে ৭৯টি সিসি ক্যামেরা সংযোগ করা হয়। বুড়িচং বাজার পরিচালনা কমিটি ও বুড়িচং থানার তৎকালীন অফিসার ইনচার্জ মোজাম্মেল হকের যৌথ উদ্যোগে সিসি ক্যামেরা সংযোগের কাজ করা হয়। স্থানীয়দের অর্থায়নে সংযোজিত সিসি ক্যামেরার মনিটর স্থাপন করা হয় বুড়িচং থানার ডিওটি অফিসারের রুমে। পুরো বাজারটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থানায় বসে মনিটরিং করতে পারতো। কিন্ত দুঃখের বিষয় বর্তমানে সঠিক তদারকি আর সার্ভিসিং এর অভাবে ১২ লক্ষ টাকার সিসি ক্যামেরা বাজারের ব্যবসায়ীদের কোন কাজেই আসছে না। বিগত কয়েক মাস ধরে অধিকাংশ ক্যামেরা অকেজো হয়ে আছে। এই সুযোগে বিভিন্ন দোকানে চুরির ঘটনা ঘটছে। জানা যায়, ভিশন টেক বিডি কোম্পানীকে ট্রেন্ডার প্রদান করা হয় সিসি ক্যামেরাগুলো ক্রয় করা, বাজারের বিভিন্ন স্থানে স্থাপন করা এবং সার্ভিসিং এর দায়িত্বে থাকার জন্য। ভিশন টেক বিডি কোম্পানী ১২ লক্ষ টাকায় হিকভিশন কোম্পানীর ৭৯টি সিসি ক্যামেরা বাজারের বিভিন্ন পয়েন্টে স্থাপন করে এবং তদারকি ও সার্ভিসিং করতে থাকে। কিন্ত তাদের সার্ভিসিং এর টাকা সঠিক ভাবে প্রদান না করায় ১ বছর পূর্বে সার্ভিসিং বন্ধ করে দেয়। এতে অনেক ক্যামেরা অচল হয়ে আছে। ভিশন টেক বিডি কোম্পানীর মালিক বিল্লাল হোসেন বলেন, আমি বাজারের সিসি ক্যামেরাগুলো ট্রেন্ডারের মাধ্যমে সংয়োগ দিয়েছি এবং যথা নিয়মে সার্ভিসিং করে আসছি। কিন্ত আমার সার্ভিসিং এর টাকা পরিশোধ না করায় সেবা প্রদান বন্ধ করে দেই। আমি প্রায় ১লক্ষ ২০ হাজার টাকা পাওনা রয়েছি। বুড়িচং বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, আমরা পকেটের লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদা দিয়েছি সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তার জন্য, কিন্ত আজ সেই ক্যামেরাগুলো অচল হয়ে আছে, এ কারনে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দোকানে চুরি হচ্ছে। কি লাভ হলো লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে। বুড়িচং বাজারের ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোঃ আরিফুর রহমান ভুইয়া বলেন, আমি নিজেও সিসি ক্যামেরার দুর্ভোগের শিকার। সিসি ক্যামেরার টাকা সংগ্রেহের পর এই বিষয় নিয়ে আর কোন মিটিং হয় নাই। কত টাকা খরচ হলো ফান্ডে কোন টাকা আছে কিনা। কাকে তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হলো। তার কিছুই মিটিং করে জানানো হয় নি। শুধু মাত্র তদারকির অভাবে আজকের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বাজার কমিটির সেক্রেটারি মিজানুর রহমান খান বলেন, ওয়াই ফাই তার ও ডিসের ব্যবসায়িরা তাদের তার মনে করে সিসি ক্যামেরার তার কেটে ফেলে। এগুলো আবার সংযোগ দিতে অনেক টাকা লাগে। বাজার কমিটির ফান্ডে কোন টাকা পয়সা নেই। আমি একা অনেক চেষ্টা করেছি। যেন বুড়িচংয়ের মানুষ শান্তিতে থাকে। অতি দ্রæত মিটিং ডাকার ব্যবস্থা করছি। মুলত সার্ভিসিং এর কারনে ক্যামেরাগুলো বন্ধ আছে। বাজার কমিটির সভাপতি ছাফর আলী মেম্বার বলেন, বিভিন্ন সময় তার কেটে যায়। তাই এগুলো বন্ধ। একজন লোক রাখা প্রয়োজন। গত মিটিংয়ে আমি বলেছি, এত লাখ টাকা খরচ করে কি লাভ হলো। যদি এগুলো নষ্টই হয়। আগামী মিটিংয়ে আবার আলোচনা করবো। সেক্রেটারীকে বলেছি একজন লোক রাখার জন্য। বুড়িচং থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল হাসানাত খন্দকার বলেন, বিষয়টি বাজার কমিটির দায়িত্বে রয়েছে। আমাদের দায়িত্ব শুধু মনিটরিং করা। আমি এই থানায় যোগদানের পর বাজার কমিটির সেক্রেটারির সাথে আলোচনা করেছি। আসলে সবগুলো ক্যামেরা নষ্ট না। কিছু ক্যামেরার বেলুন নষ্ট আবার কিছু ক্যামেরার ক্যাবল নষ্ট। এগুলো ঠিক করার দায়িত্ব বাজার কমিটির।

  • বুড়িচং