বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়ায় জনবসতির পাশে পোল্ট্রি ফার্ম, বেশিরভাগেরই নেই পরিবেশ চাড়পত্র

লেখক: স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১১ মাস আগে

Spread the love

কুমিল্লার বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের পাড়া মহল্লায় পরিবেশের ছাড়পত্র বিহীন শতাধিক প্লোট্টি ফার্ম জনবসতির পাশে অবাধে গড়ে উঠেছে। এতে ফার্মের পাশে বসবাসরত সাধারণ মানুষের জীবন যাত্রা দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে ডিম উৎপাদন করা ফার্মগুলোতে দুর্গন্ধ ছড়ায় বেশি। নিয়ম অনুযায়ী জনবসতি এলাকার ৫শত গজ দূরে মুরগি ও ডিম উৎপাদন করার ফার্ম করতে হবে। কিন্ত বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় কেউ মানছে না এ নিয়ম। স্কুল কলেজ মাদ্রাসা কিংবা জনবসতির পাশে এবং কোথাও কোথাও জনবসতির মধ্যেই গড়ে উঠেছে অসংখ্য প্লোট্টি ফার্ম। যার বেশির ভাগেরই নেই পরিবেশ ছাড়পত্র এবং প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের রেজিষ্ট্রেশন। মুরগি উৎপাদনকারী ফার্ম থেকে ডিম উৎপাদনকারী ফার্মের দুর্গন্ধ ছড়ায় বেশি। অনেক ডিম উৎপাদনকারী প্লোট্টি ফার্মের মালিকগণ পরিবেশ দুর্গন্ধমুক্ত রাখার জন্য মুরগীর মল থেকে গ্যাস উৎপাদন করার জন্য বায়োগ্যাসের ব্যবস্থা করেছে। কিছু কিছু মালিকগণ বায়োগ্যাসের প্রক্রিয়া করলেও বায়োগ্যাসের মুখগুলো উম্মোক্ত থাকায় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। এতে আশে পাশের বসবাসরত সাধারণ মানুষের বসবাস করা কষ্ট সাধ্য ব্যাপার হয়ে যায়। বেশিরভাগ পোল্ট্রি ফার্ম পরিবেশ বান্ধব না হওয়ায় পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে এবং রোগ জীবাণু ছড়িয়ে পড়ছে। শনিবার সকালে সরেজমিন বুড়িচং উপজেলার মডেলপাড়া এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, বাবুল আলম নামে এক ব্যক্তি মডেল পাড়ার জনবসতির মধ্যেই ডিম উৎপাদনকারী পোল্ট্রি ফার্ম গড়ে তুলেছেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি পরিবেশ ছাড়পত্র বিহিনী এবং পরিবেশ বান্ধব না করে ফার্মটি পরিচালনা করে আসছেন। এতে ফার্মের দুর্গন্ধে আশ পাশে বসবাসরত সাধারণ মানুষ খুবই দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। তাছাড়া ফার্মের ৫০ গজের মধ্যে বুড়িচং মডেল একাডেমী অবস্থিত। ফার্মের দুর্গন্ধের কারণে ছাত্র-ছাত্রীরা অতিষ্ঠ হয়ে আছে এবং তাদের লেখাপড়ায় বিঘ্নতা ঘটছে। নাম প্রকাশে অনু্িচ্ছক ফার্মের পার্শবর্তি এক প্রতিবেশি বলেন, এই ফার্মের বিষয়ে অনেক অভিযোগ দিয়েছি। কিন্ত অদৃশ্য কারণে কোন কিছুই হচ্ছে না। মুরগীর বিষ্টার দুর্গন্ধে বসবাস করাই মুশকিল হয়ে গেছে। কিন্ত জীবনের সব সঞ্চয় ব্যয় করে মডেল পাড়ায় বাড়ি করেছি তাই একান্ত বাধ্য হয়েই মানবেতর জীবন যাপন করছি।বাবুল আলম কারো কথাই কর্ণপাত করছে না। স্থানীয় প্রশাসনের নিকট কয়েকবার অভিযোগ করেও কোন ফলাফল পাই নাই। তাই এ বিষয় নিয়ে আর কিছু বলতে চাই না। পোল্ট্রি ফার্মের মালিক বাবুল আলম বলেন, আমি যখন এখানে ফার্মটি স্থাপন করি, তখন এখানে কোন জনবসতি ছিল না। এখন যেহেতু দিনে দিনে ফার্মের চারদিকে জনবসতি গড়ে উঠেছে। আমি সুবিধা মতো সময় নিয়ে অন্য জায়গায় ফার্মটি সরিয়ে ফেলবো। পরিবেশ ছাড়পত্রের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরিবেশ ছাড়পত্র নেই। তবে দুর্গন্ধ যেন না ছড়ায় তার জন্য বায়োগ্যাসের ব্যবস্থা করেছি। উপজেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর বায়োগ্যাস করার জন্য অর্থনৈতিক ভাবে সহযোগীতা করেছে। এরকম দুই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে অনেক পোল্ট্রি ফার্ম। বুড়িচং উপজেলা সেনেটারী ইন্সপেক্টর নাছিমা আক্তার বলেন, জনবসতির ৫শত গজের মধ্যে পরিবেশ বিঘœতা সৃষ্টিকারী কোন প্রতিষ্ঠান স্থাপন করার নিয়ম নেই। যদি কেউ জনবসতির ৫শত গজের মধ্যে এই ধরনের প্রতিষ্ঠান করে থাকে তাহলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট অভিযোগ করতে বলেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশনা পেলে সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। বুড়িচং উপজেলা প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, জনগণের বসবাসের বিঘœতা ঘটবে এমন কোন কাজ করা যাবে না। দুর্গন্ধ ছড়ায় কিংবা পরিবেশর ক্ষতিসাধন করে এমন প্রতিষ্ঠানগুলো জনবসতি থেকে দূরে স্থাপন করতে হবে। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

  • বুড়িচং
  • ব্রাহ্মণপাড়া