বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়ার হাট-বাজারগুলোতে অবাধে চলছে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর পলিথিনের ব্যবহার

লেখক: স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১০ মাস আগে

Spread the love

আমরা বুঝতে শেখার পর থেকেই পলিথিন শব্দটার সাথে পরিচিত হয়ে এসেছি। অবাধে এর ব্যবহার দেখছি। পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর জেনেও আমারা তা ব্যবহার করিছি প্রতিদিন। কোন না কোন পন্য দ্রব্য ক্রয় করার সাথে সাথেই পলিথিন হাতে চলে আসে। ক্রেতা ও বিক্রেতা কেউ এর ক্ষতির দিকটি চিন্তা করে দেখি না। পলিথিন এমন একটি পদার্থ যা পচনশীল না। দীর্ঘদিন মাটির নিচে পড়ে থাকলেও যেমনটা তেমনই থাকে। তার কোন রকম পরিবর্তন হয় না। আমরা অনেক সময় পলিথিনকে পুড়িয়ে ফেলি। কিন্ত পলিথিন পোড়ালে এর উপাদান পলিভিনাইল ক্লোরাইড কার্বন মনোঅক্সাইড উৎপন্ন করে বায়ু দূষণ করে। যতই দিন অতিবাহিত হচ্ছে ততই এই পর্দার্থটির ব্যবহার সহজলভ্য হচ্ছে। সকালের নাস্তা থেকে শুরু করে রাতের খাবারের কাজে পলিথিন ব্যবহার করা হচ্ছে। পলিথিনের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে পাটজাত দ্রব্যের ব্যবহার কমে গেছে। এক সময় আমাদের দেশে পাটকে সোনালী আঁশ বলা হতো। পাট ও পাটজাত দ্রব্য বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হতো। কিন্ত কালের বিবর্তনের ফলে পাট ও পাটজাত দ্রব্য এবং পাট চাষ যেন হারিয়ে গেছে। এক সময় প্রত্যেকটি পরিবারে কমপক্ষে একটি করে পাটের উৎপাদিত ব্যাগ থাকতো। যা দিয়ে মানুষ তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্যদ্রব্য হাট-বাজার থেকে ক্রয় করে আনার জন্য ব্যবহার করতো। কিন্ত এখন প্রত্যেকটি মানুষ পলিথিন ব্যবহারের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েছে। সকালের নাস্তা পরটা ও সবজি নেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয় পলিথিন। বুড়িচং- ব্রাহ্মণপাড়ার বিভিন্ন বাজারে ভ্যানের মাধ্যমে আনারস, পেয়ারাসহ অন্যান্য ফল বিক্রয় থেকে সর্বক্ষেত্রে পলিথিনের ব্যাবহার চলছে। বুড়িচংয়ের জরুইন গ্রামের ফল বিক্রেতা মফিজ মিয়া তার বিক্রিত ফল ক্রেতাদেরকে পলিথিনের মাধ্যমে প্রদান করেন। ক্রেতারাও এতে খুশি থাকে। ক্রেতারা কাগজের কাটুনে করে ফল নিতে চান না। ফল বিক্রেতা মফিজ মিয়া জানান, গ্রাহকরা কাগজের কার্টুনের চেয়ে পলিথিনটাকে বেশি পছন্দ করে। তাই পলিথিন ব্যবহার করছি। এতে কি ক্ষতি হয়? বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার হাট-বাজারগুলোতে নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে পলিথিনের ব্যবহার হচ্ছে। সবজি বাজার, মাংসের বাজার, মাছের বাজার, মুদি বাজার থেকে শুরু করে নিত্যদিনের প্রত্যেকটি পন্যদ্রব্যের ক্ষেত্রেই পলিথিনের ব্যবহার হচ্ছে। এতে পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। সচেতন মহল মনে করেন, পরিবেশ আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকায় এবং সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের তদারকীর অভাবে দিনে দিনে বুড়িচং-বিপাড়া উপজেলার সর্বত্রই নিষিদ্ধ পলিথিনের ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে। সংশ্লিষ্ট আইন অনুযায়ী পলিথিনের উৎপাদন,ব্যবহার,বিপণন দ্রæতই বন্ধ করতে হবে। অন্যথায় পরিবেশের বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর বিবেচনা করে বাংলাদেশে ২০০২ সালে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ এর পরিপ্রেক্ষিতে পলিথিনের ব্যাগ উৎপাদন, ব্যবহার, বিপণন এবং পরিবহন নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্ত বর্তমানে পলিথিন ব্যবহার বন্ধের কোন উদ্যোগ নেই। নিরাপদ চিকিৎসা চাই কুমিল্লা জেলা কমিটির সভাপতি কবি ও সংগঠক আলী আশরাফ খান বলেন, বেঁচে থাকার জন্য মানুষ খাদ্য গ্রহন করে। মানুষের নিত্যদিনের চাহিদা মেটাতে দিন রাত পরিশ্রম করে। যেই শরীরটা দিয়ে দিনরাত পরিশ্রম করে সেই শরীরটা যদি ঠিক না থাকে তাহলে কিভাবে পরিশ্রম করবে। নিজের এবং পরিবারে চাহিদা মেটাবে। তাই পরিবেশ ও স্বাস্থ্যর জন্য ক্ষতিকর পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের দৃষ্টি আকর্ষন করছি। তারা যেন প্রত্যেকটি বাজারে মনিটরিং করে এবং নিষিদ্ধ পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে প্রয়োজনীয় ভূমিকা পালন করে। বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মীর হোসেন মিঠু বলেন, পলিথিনে কোন প্রকার খাদ্য দ্রব্য না নেওয়াই ভালো। সর্বদাই পলিথিন বর্জন করে চলা উচিত। পলিথিনের মধ্যে খাবার বেশিক্ষণ রাখলে খাবারের গুণগত মান নষ্ট হয়ে যায়। এই খাবার খেলে ফুড পয়েজিংয়ের সম্ভাবনা থাকে। তাই আমাদের প্রতিদিনের কার্যক্রম থেকে পলিথিনের ব্যবহার কমাতে হবে।

  • বুড়িচং
  • ব্রাহ্মণপাড়া