বুড়িচং- ব্রাহ্মণপাড়ার বাজারে শীতকালীন সবজি উঠতে শুরু করলেও কমেনি দামের উত্তাপ

লেখক: স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১১ মাস আগে

Spread the love

কুমিল্লার বুড়িচং- ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সবজি বাজারগুলোতে উঠতে শুরু করেছে শীতকালীন সবজি। এরপরও দাম কমছে না কোনো সবজির। বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই। তবু আগের মতোই উত্তপ্ত অবস্থায় রয়েছে অধিকাংশ সবজির দাম। ফলে নিম্নআয়ের মানুষেরা বাঁচতে পারছেন না সবজির দামের উত্তাপ থেকে। শনিবার (২৮ অক্টোবর) বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার বিভিন্ন সবজি বাজার ঘুরে ও ক্রেতা বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শীতকালীন আগাম সবজি উঠতে শুরু করেছে উপজেলার বিভিন্ন সবজি বাজারগুলেতে। তারপরও হাতের নাগালে আসেনি নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজির দাম। বাজারে বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়, সিম ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, করলা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, লাউ ৮০ থেকে ১০০ টাকা, ফুলকপি ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, কুমড়া ৫০ টাকা, কাঁচামরিচ ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া শসা কেজি ৪০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, গাজর ১০০ টাকা, বরবটি ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। মুলা ৭০ টাকা, পটল ৭০ টাকা, টমেটো ১০০ থেকে ১৪০ টাকা, লালশাক ৯০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকা ও চিচিঙ্গা ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচাবাজার করতে আসা ক্রেতা দেলোয়ার বলেন, কোনো সবজির দামই কমেনি। বাজারে শীতকালীন সবজি উঠলে ভেবেছিলাম সবজির দাম কমে আসবে, কিন্তু না, সবজির দাম কমেনি। এতে আমাদের মতো স্বল্প আয়ের মানুষরা যে টিকে থাকব, তার অবস্থা নেই। মাছ-মাংসের কথা তো বাদই দিলাম, শাক-সবজির দামও যদি এমন বাড়ে, তাহলে তিন বেলার জায়গায় দু-বেলা খেতে হবে। একই বাজারে সবজি ক্রয় করতে আসা আরেক ক্রেতা শামীম হোসেন বলেন, নিম্ন আয়ের মানুষের প্রধান খাবার হলো শাক সবজি। সেটার দামও যদি এমন নাগালের বাইরে থাকে তাহলে খাবে কি? যে টাকা নিয়ে আসলে আগে ব্যাগ ভরে সবজি নিয়ে বাড়িতে যেতাম, এখন সেই পরিমাণ টাকায় ব্যাগের অর্ধেকও ভরে না। এতে দিন দিন আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষেরা হাঁপিয়ে উঠছি। বুড়িচং বাজারের সবজি ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম জানান, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শীতকালীন সবজি উৎপাদন করতে শুরু হয়েছে। তবে দেশের অস্বাভাবিক পরিস্থিতির কারণে সবজির দাম একটু বেশি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে গেলে দাম কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অস্বাভাবিক পরিস্থিতির কারণে দেশের ভিন্ন এলাকা থেকে সবজি কুমিল্লার বাজারগুলোতে আসতে পারছে না। ব্রাহ্মণপাড়া বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান শীতকালে বাজারে সাধারণত লাউ, মিষ্টি কুমড়া, ফুলকপি, বাঁধাকপি, দেশি পেঁয়াজ, ভারতীয় পিঁয়াজ, বেগুন, মুলা, লালশাক, পালংশাক, পটোল, ঢেঁড়স, বরবটি, ঝিঙা, পেঁপে, আলু, করলা, কচু, শসাসহ বিভিন্ন ধরনের সবজিতে ভরপুর থাকে। তবে এ বছর টানা বৃষ্টির কারণে সবজি উৎপাদন কিছুটা ব্যাহত হয়েছে। ফলে বাজারে সবজি তুলনামূলক কম। তাই সবজির দাম এখনও কমেনি। আমরা পাইকারি বাজার থেকে সবজি দাম দিয়ে কিনে আনি, তাই আমাদেরকেও দামে বিক্রি করতে হয়। বুড়িচং গ্রামের নাজির মাহমুদ নছির ভুইয়া জানান, সবজি বাজারে যেন আগুন লেগে আছে। সঠিক ভাবে বাজার মনিটরিং না থাকায় সবজি বাজারে একটি সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। তারা নিমসার বাজার থেকে সবজি ক্রয় করে আনার পর পুরো বাজার নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখে। যার ফলে শীতকালীন সবজি বাজারে আসতে শুরু করলেও দাম কমছে না। স্যানিটারি ইন্সপেক্টর পারভীন সুলতানা বলেন, বাজারে শীতকালীন আগাম সবজি উঠতে শুরু করেছে, তবে চাহিদার চেয়ে উৎপাদন কম হওয়ায় সবজির দাম এখনও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আশা করছি কিছুদিনের মধ্যেই বাজারে সবজির দাম নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। আমরা সার্বক্ষণিক বাজার মনিটরিং করছি।

  • বুড়িচং
  • ব্রাহ্মণপাড়া