বুড়িচংয়ে স্কুল ছাত্রার হত্যার চাঞ্চল্যকর তথ্য, ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা

লেখক:
প্রকাশ: ২ years ago

Spread the love

নিজস্ব প্রতিবেদক।।
কুমিল্লার বুড়িচংয়ে রায়হান খান (১৫) নামে এক স্কুল ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে রায়হানের মা রোজিনা আক্তার বাদী হয়ে ৪জনকে নামীয় আসামি করে অজ্ঞাত ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে বুড়িচং থানাতে মামলা দায়ের করে। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন বুড়িচং থানার ওসি মারুফ রহমান। জানা যায়, (৮ জানুয়ারি ২০২৩) রোববার দুপুরে উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের শংকুচাইল গ্রামে কয়েকজন যুবক লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে রায়হানকে পিটিয়ে পাশের নদীতে ফেলে যায়। তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ঢাকার পথে যাত্রাবাড়ী এলাকায় রায়হানের মৃত্যু হয়। ওই কিশোর শংকুচাইল গ্রামের হাফিজ মেম্বারের বাড়ির সৌদি প্রবাসী গিয়াস খানের ছেলে এবং শংকুচাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, রায়হান তার সহপাঠীদের সঙ্গে পূর্ণমতি সড়ক এলাকায় সেচ পাম্পে গোসল করছিল। এ সময় দুটি মোটরসাইকেলে করে অজ্ঞাত কয়েকজন দুই মেয়েকে নিয়ে ওই সড়কে আসেন। একপর্যায়ে ওই যুবকরা তাদের সঙ্গে থাকা মেয়েদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতায় জড়ায়। এ দৃশ্য দেখে রায়হান ও তার সহপাঠীরা হাসাহাসি করে। পরে ওই যুবকরা এসে রায়হানদের কাছে হাসাহাসির কারণ জানতে চায়। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে রায়হানদের বাকবিতন্ডা হয়। তখন ওই যুবকরা স্থানীয় এক ট্রাক্টর চালকের মাধ্যমে মিমাংসা করে দিবে এমন খবর দিয়ে সহযোগীদের ডেকে এনে লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে রায়হানকে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে পাশের ঘুংগুর নদীতে ফেলে দেয়। এ সময় রায়হানের সহপাঠীরাও মারধরের শিকার হন, তবে তারা সেখান থেকে পালিয়ে আসতে সক্ষম হন। খবর পেয়ে স্থানীয়রা আহত রায়হানকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় নিতে বলেন। ঢাকা নেয়ার পথে রায়হান মারা যান।সোমবার বিকেলে নিহত রায়হানের লাশ জানাযা শেষে তাদের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। রায়হানের মা রোজিনা আক্তার বলেন, ‘তুচ্ছ ঘটনায় আমার ছেলেকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।রবিবার আমার ছেলে শংকুচাইল উচ্চ বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেনীর বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল পেয়ে আমাকে জানায় ‘মা আমি পাশ করেছি,আমার জন্য দোয়া করিয়েন’দুপুরে ছেলে আমার তার বন্ধুদের সাথে সেচ পাম্পে গোসল করবে বলে আমার কাছে বলে যায়, ‘মা আমি গোসল করতে যাই’। আমি কি জানি আমার ছেলে যে জীবনের শেষ গোসল করতে যায়! এই কথা বলেই মা রোজিনা আক্তার হাউমাউ করে কান্না শুরু করে দেয়।আমার ছেলে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত জগতপুর গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে হাসান(২৫),অজ্ঞাত পিতার ছেলে রুহুল আমিন (২৪), রাজা মিয়ার ছেলে হৃদয় (২৫), আবুল হাসেমের ছেলে আব্দুল্লাহ অজ্ঞাত ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। আমি আমার ছেলের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়,নিহত রায়হানের চাচাসহ একাধিক ব্যক্তি (নাম বলতে অনিচ্ছুক) তাদের ভাষ্যমতে, রায়হানকে পিটিয়ে জঘম করে আহত অবস্থায় নাদীতে ফেলে ঘাতকরা ও দুই কিশোরীসহ আরেক ঘাতক রাসেলের পূর্ণমতি তার বোনের স্বামী জাহাঙ্গীরের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। ঘাতকের বোনের শাশুড়ী জাহেদা খাতুন নিহতের পরিবারকে নিশ্চিত করে। আশ্রয়দাতা বোন ও স্বামী পলাতক রয়েছে। একাধিক ব্যক্তি জানান আশ্রয়দাতা জাহাঙ্গীর একজন মাদক ব্যবসায়ী। মাদক ব্যবসায়ীর বাড়িতেই আশ্রয় নিয়ে ছিল ঘাতকরা। বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মারুফ রহমান বলেন, রাতেই ময়নাতদন্ত শেষে রায়হানের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। একটি মামলা দায়ের করা হচ্ছে। অভিযুক্তদের আটকে অভিযান চলছে।

  • বুড়িচং