বুড়িচংয়ে গ্রামীণ সড়কের পাশে পুকুর খনন, ভেঙ্গে যাচ্ছে সড়ক, সরকারের অর্থ অপচয়

লেখক: স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১ বছর আগে

Spread the love

বাংলাদেশের বিভিন্ন উপজেলায় এলজিইডি কর্তৃক নির্মিত সড়কের পাশে পুকুর ও নালা খনন করা হয়েছে। সড়কের ধার ঘেঁষে পুকুর, কূপ, মাটি বা সেচ নালা ইত্যাদি খনন করলে সড়কের পার্শ্ব-ঢাল এবং আড়ি ঢাল ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এতে সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষতিসাধন হয়। নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে গ্রামীণ সড়কের ধার ঘেঁষে পুকুর,সেচ নালা খনন করলে দেশের প্রচলিত আইন অনুসারে স্বাস্থিযোগ্য অপরাধ। কোন ব্যক্তি সড়কের পাশে পুকুর খনন করলে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে নিজ খরছে সুরক্ষা ঢাল নির্মাণ করতে হবে। যদি কেউ এমনভাবে পুকুর বা সেচনালা ইত্যাদি খনন করেন যার ফলে ভূমির বা সড়কের বা পথের ব্যবহার বা ভোগদখলের ক্ষেত্রে কোনরূপ অসংগত অসুবিধার সৃষ্টি করে তাহলে কর্তৃপক্ষ দ্য বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন অ্যাক্ট, ১৯৫২ এর ৩ ধারা (৩) উপধারা অনুযায়ী ১৫ দিনের মধ্যে তা অপসারণ, খনন বা পুনঃখনন বন্ধ বা ভরাট করার আদেশ দিতে পারেন। যদি কেউ কর্তৃপক্ষের আদেশ পালনে ব্যর্থ হন তাহলে ওই আইনের ১২ ধারা অনুযায়ী আদালত দোষী ব্যক্তিকে ২ বছর পর্যন্ত কারাদন্ড বা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত করতে পারেন। কিন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বুড়িচং উপজেলার বিভিন্ন সড়কের পাশে অসংখ্য পুকুর খনন করা হয়েছে বা করা হচ্ছে। এতে সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা ক্ষতিসাধন হয়ে অর্থ অপচয় হচ্ছে। দেখা যায়, পুকুরে মালিকগণ পুকুর খনন করার সময় তিনটি পাড় নিজ খরচে বাঁধলেও একটি পাড় বাঁধে না। পুকুরের পাশ দিয়ে চলে যাওয়া সড়ককে একটি পাড় হিসেবে ব্যবহার করে। এতে পুকুরের পানির ঢেউয়ের কারণে কিংবা অন্য কোন কারণে অথবা পুকুরে মাছ চাষ করার ফলে ক্রমান্বয়ে পুকুরের পাড়গুলো ভেঙ্গে যায়। সেই সাথে পুকুর পাড় হিসেবে ব্যবহৃত সরকারী সড়কগুলো পুকুরের পেটে চলে যায়। সড়ককে ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষা করার জন্য সরকারী দপ্তর থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে রিটানিং ওয়াল নির্মাণ করতে হয় অথবা অন্য কোন উপায়ে সড়ক রক্ষার ব্যবস্থা করতে হয়। সরকারী নিয়ম নীতি মেনে সড়কের পাশে পুকুর খনন করলে সরকারী লক্ষ লক্ষ টাকা ক্ষতিসাধন থেকে রক্ষা পেত। বুড়িচং উপজেলা গ্রামীণ সড়কগুলোর পাশে অসংখ্য পুকুর রয়েছে। সরকারী রাস্তা কিংবা সড়ককে একটি পাড় হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। দিনে দিনে মাছ চাষ লাভজনক হওয়ায় নিয়ত-নীতির তোয়াক্কা না করে সড়কের পাশে পুকুর খনন করা হচ্ছে। বিগত দিনেও অনেক পুকুর খনন করা হয়েছে। যার ফলে সরকারের ব্যাপক ক্ষতিসাধন হচ্ছে। বুড়িচং উপজেলার বুড়িচং থেকে পীরযাত্রাপুর সড়কের পাশে আরাগ আনন্দপুর গ্রামে রয়েছে কয়েকটি পুকুর এবং পীরযাত্রাপুর গ্রামে রয়েছে একটি পুকুর, বুড়িচং থেকে কালীকাপুর সড়কের পাশে হরিপুর পশ্চিমপাড়া বাঘের পুকুর, ফাজিল বাড়ীর পুকুর, বড় দিঘী, হরিপুর যদুপুর সীমান্ত এলাকায় সড়কের পাশে রয়েছে ৩টি পুকুর, যদুপুর বড় মসজিদ সংলগ্ন পুকুর, বাকশীমুল উত্তরপাড়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা মসজিদ সংলগ্ন পুকুর, বাকশীমুল কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন পুকুর,বাকশীমূল গ্রামের ভেতের সড়কের পাশে ৬টি পুকুর রয়েছে। বুড়িচং রাজাপুর সড়কের জরুইন, রাজাপুর গ্রামের সড়কের পাশে অনেকগুলো পুকুর খনন করা হয়েছে। বুড়িচং সাদকপুর সড়কের পাশে জগতপুর ও সাদকপুর গ্রামে রয়েছে কয়েকটি পুকুর। ভরাসার, ষোলনল সড়কের পাশে রয়েছে বেশ কয়েকটি পুকুর। এই ব্যাপারে পীরযাত্রাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আজহারুল ইসলাম বলেন, পুকুর খনন করার আইন প্রয়োগ না থাকায় বিভিন্ন গ্রামীন সড়কের পাশে পুকুর খনন করা হচ্ছে। এই পুকুরগুলো খনন করার ক্ষেত্রে পুকুরের মালিক নিজ খরচে চারটি পাড় বাঁধার নিয়ম থাকলেও নিয়ম নীতিকে তোয়াক্কা না করে তিনপাড় নিজ খরচে বাঁধলেও একটি পাড় সরকারী রাস্তাকে পাড় হিসেবে ব্যবহার করে। যার ফলে রাস্তা ভেঙ্গে পুকুর চলে যায়। এই ভাঙ্গনের কবল থেকে রাস্তাকে রক্ষা করার জন্য সরকারী ভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ রিটানিং ওয়াল নির্মাণ করতে হচ্ছে। এতে সরকারের বিশাল রাজস্বের ক্ষতি হচ্ছে। এলাকার সকল শ্রেণী পেশার লোকজনের দাবি প্রশাসনের কঠোর নজরদারি থাকলে সড়কের পাশে পুকুর খনন বন্ধ হয়ে যাবে।

  • বুড়িচং