পরকীয়ায় জড়িয়ে চার বছর পলাতক, চেয়ারম্যানের সহায়তায় বাড়ি ফিরিয়ে বিয়ে

লেখক: স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১ বছর আগে

Spread the love

চার বছর আগের কথা। দিনমজুর রেনু মিয়া (৫৫) বিভিন্ন সময়ে প্রতিবেশী রাজমিস্ত্রী শাহজাহান মিয়ার বাড়িতে আসা-যাওয়া ছিল। আসা যাওয়ার এক পর্যায়ে শাহজাহান মিয়ার স্ত্রী শাহনাজ বেগমের (৩৬) সাথে তাঁর পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে উঠে। এভাবে কিছু দিন চলার পর রেনু মিয়া শাহনাজ বেগমকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ফুঁসলিয়ে বাড়ি থেকে ভাগিয়ে নিয়ে যায়। এরপর গত চার বছর আর তাদের হদিস নেই। স¤প্রতি তাঁরা স্থানীয় চেয়ারম্যানের সহায়তায় বাড়ি ফিরেছেন। গতকাল বুধবার স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে দুই পরিবারের সম্মতিতে সামাজিক ভাবে তাদের বিয়ে হয়। বিয়েতে উপস্থিতি ছিলেন বিভিন্ন ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও গ্রামের গন্যমান্য ব্যক্তিরা। ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার গুনাইঘর উত্তর ইউনিয়নের বাঙ্গুরি গ্রামে। রেনু মিয়া দেবিদ্বার উপজেলা গুনাইঘর উত্তর ইউনিয়নের বাঙ্গুরি গ্রামের মৃত দুধ মিয়ার পুত্র। অপরদিকে, শাহনাজ বেগম মুরাদনগর উপজেলার পরমতলা হাজী বাড়ির মৃত শব্দর আলীর মেয়ে। রেনু মিয়ার আগের সংসারে চার ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। তাঁরা সবাই বিয়ে করে আলাদা সংসার করছেন। অপরদিকে, শাহনাজ বেগমের দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। মেয়ে বর্তমানে স্বামীর বাড়িতে আছেন। আর দুই ছেলে লেখাপড়া করছে।স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, একুল অকুল দু-কুলই হারিয়েছেন শাহনাজ বেগম। বাধ্য হয়েই বৃদ্ধ রেনু মিয়ার সাথে পুনরায় বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হয় সে। রেনু মিয়ার আগের স্ত্রী মারা গেছেন। তাদের এমন কর্মে গ্রামের মানুষ লজ্জিত। তাঁদের কারণে কয়েকটি জীবন ধ্বংস হয়ে গেছে। স্ত্রী শাহনাজ বেগম জানান, চার বছর আগে রেনু মিয়া আমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ফুঁসলিয়ে ঘর থেকে বের করে নিয়ে যায়। আমি তাঁর জন্য পাগল হয়ে স্বামী, সংসার ও ছেলে-মেয়ে ফেলে পালিয়ে যাই। আমার আগের স্বামী এত দিনে বিয়ে করে ফেলেছেন। তার নতুন সংসার হয়েছে সে আমাকে আর নিচ্ছে না। আমি একুল-ওকুল-দু-কুল হারিয়ে নিরুপায় হয়ে বিয়ে করেতে বাধ্য হয়েছি। তিনি আরও বলেন, রেনু মিয়া আমাকে ঠিকমত ভরণপোষণ দেয়না, আমি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত সে আমার খোঁজ খবরও নেয় না। পরে বাধ্য হয়ে চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি আমাদের এলাকায় নিয়ে আসেন। আমার বিয়ের কোন বিয়ের কোন বৈধ কাগজপত্র না থাকায় চেয়ারম্যানের সহায়তায় সংসার ছেলে মেয়ে ছেড়ে চলে যাওয়া আমার মস্ত বড় ভুল ছিল।স্বামী রেনু মিয়া জানান, আমার স্ত্রী মারা গেছে অনেক বছর হয়েছে। আমি তাকে জোর করে নিয়ে যায়নি। সে স্বেচ্ছায় আমার সাথে পালিয়েছে। এখন আমার বয়স বেড়েছে আমার গায়ে খাটারও শক্তি সামর্থ নেই। আমার চার ছেলে মেয়ের সবার আলাদা সংসার রয়েছে। তাঁরাও আমাকে কোন আর্থিক সহায়তা করছে না। আমি নতুন সংসার নিয়ে সুখে থাকতে চাই। ইউপি সদস্য মো. আবু হানিফ বলেন, চার বছর আগে তাঁরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। বর্তমানে গ্রামের সকলের উপস্থিতিতে তাদের আবার বিয়ে হয়। তাঁরা পলাতক অবস্থায় বিভিন্ন জায়গায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। তাদের অনেক খোঁজাখোঁজি করে পাওয়া যায়নি। পরে শাজনাজ চেয়ারম্যান অফিসে রেনু মিয়ার বিরুদ্ধ নালিশ করায় তাদের খোঁজ মিলে।গুনাইঘর উত্তর ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, তাঁরা উভয়ে দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন। তাদের কোন খোঁজ খবর পাওয়া যায়নি। স¤প্রতি শাহানাজ বেগম আমার অফিসে রেনু মিয়া সম্পর্কে একটি অভিযোগ দেন। অভিযোগে তিনি লেখেন, তাকে ঠিক মত ভরণপোষণ দেওয়া হয়না। আমি রেনু মিয়ার সাথে যোগাযোগ করে তাকে পরিষদে ডেকে আনি। পরে তাদের বিয়ে কাগজপত্র দেখতে চাইলে তাঁরা বৈধ কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। পরে সামাজিক অবক্ষয় রোধে তাদের দুই পরিবারের লোকজনের সম্মতিতে ছয় লক্ষ টাকা দেন মোহরে বিয়ে দেই।

  • দেবিদ্বার