নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ব্রাহ্মণপাড়ায় যত্রতত্র লাইসেন্সবিহীন ও মেয়াদোত্তীর্ণ গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি

লেখক: স্টা রিপোর্টার
প্রকাশ: ১ বছর আগে

Spread the love

যুগের চাহিদার কারণে গ্রাম-গঞ্জে,পাড়া-মহল্লায় গ্যাসের ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে। শহরের সাথে পাল্লা দিয়ে থেমে নেই গ্রামের মানুষরাও। তারা শহরের মানুষের মতো নিত্যদিনের রান্না বান্নায় গ্যাসের ব্যবহার করছে। গৃহিনীরা এখন আর লাকরীর চুলায় রান্না করতে চায় না, হাত ময়লা হয়ে যাওয়ার ভয়ে। তাছাড়া আধূনিকতার ছোঁয়ায় গৃামের মহিলারাও গ্যাসের চুলার ব্যবহার শিখে ফেলেছে। তাই আগের মতো কেউ আর লাকরীর ব্যবহার করতে চায় না। ফলে দিন দিন গ্যাসের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে ধনী গরিব প্রায় সকল পরিবারেই গ্যাসের চুলার ব্যবহার শুরু হয়েছে। মানুষের মনে শৌখিনতার আবির্ভাব ঘটেছে। তাই কেউ এখন আদি যুগের অবস্থানে থাকতে চায় না। সবাই আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করতে চায়। মানুষের চাহিদা বৃদ্ধির সাথে সাথে চাহিদা পূরণের জন্য দোকান পাটের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে প্রত্যেকটি পাড়া-মহল্লায় নতুন নতুন দোকান পাটের সৃষ্টি হচ্ছে। এসব দোকান পাটে নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় মালামালের সাথে গ্যাসের সিলিন্ডার বিক্রয় করা হচ্ছে। কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মপাড়ার উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার এবং গ্রাম-মহল্লার মুদি দোকান, হার্ডওয়্যার দোকান, ক্রোকারিজ দোকানে লাইসেন্সবিহীন ও মেয়াদোত্তীর্ণ বিপজ্জনক গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি চলছে। লাইসেন্সবিহীন এসব দোকানে জবাবদিহিতার আওতায় না থাকায় মুড়ি মুড়কির মতো গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করছে। এসব দোকানে পুরাতন ও মেয়াদোত্তীর্ণ গ্যাস সিলিন্ডার রয়েছে। যা যেকোনো সময় বিস্ফোরণ হয়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সূত্রে জানা যায়, গ্যাস সিলিন্ডার ক্রয়-বিক্রয় করতে হলে বিস্ফোরক অধিদপ্তরের আওতায় লাইসেন্স নিতে হয়। তবে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার ও পাড়া মহল্লার মুদি দোকানগুলোতে অহরহ বিপদজনক গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রয় করা হলেও নেই কোনো তদারকি এবং লাইসেন্স। ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার কান্দুঘর, চান্দলা, দুলালপুর, ধান্যদৌল, বাগড়া, ব্রাহ্মণপাড়া সদর, মাধবপুর, মালাপাড়া, রামনগর, শিদলাই, ষাইটশালা, সাহেবাবাদ, সেনের বাজারে প্রায় ২৫০টি দোকানে গ্যাসের সিলিন্ডার বিক্রয় করা হলেও এর মধ্যে ২/৩টির লাইসেন্স রয়েছে। বিস্ফোরক অধিদপ্তরের নিবন্ধনসহ অগ্নিনির্বাপন সক্ষমতা থাকা বাধ্যতামূলক হলেও এসব দোকানে সরকারী নিয়ম নীতির কোনো তোয়াক্কা নেই। দেদারসে বিক্রয় হচ্ছে এসব দাহ্য পদার্থ। যে কেউ চাইলে অন্যান্য মালামালের সাথে ৫/৭টি সিলিন্ডার বিক্রিয়ের স্টক করে রাখে এবং ক্রয়-বিক্রয় করে। লাইসেন্স না থাকায় এই দোকানদের গ্যাসের সিলিন্ডার বিক্রয় করার জন্য উপযুক্ত জায়গার প্রয়োজন হয় না এবং তারা কারো কাছে জবাবদিহি করতে হয় না। ফলে দিনে দিনে এর সংখ্যা বেড়েই চলছে। লাইসেন্স না নিয়ে দাহ্য পর্দাথের ব্যবসা করায় একদিকে যেমন বড় ধরনের দুর্ঘটনার ঝুঁকি রয়েছে অপর দিকে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের অবহেলা আর তদারকি না করার ফলে ঝুঁকিপূর্ণ এই ব্যবসার প্রতি অনেকেই ঝুকে পড়ছে। এসব সিলিন্ডার গুলোর মধ্যে কোনটির মেয়াদ রয়েছে আর কোনটির মেয়াদ নেই; তা দেখার মতো কেউ নেই। পুরাতন মেয়াদোর্ত্তীন সিলিন্ডার যে কোন সময় বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। এতে সাধারণ মানুষের জীবনের ঝুঁকি রয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সহ-সভাপতি ও সিদলাই আমীর হোসেন জোবেদা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, যেখানে সেখানে গ্যাসের সিলিন্ডার বিক্রয় করা খুবই বিপদজনক। সেজন্য মনিটরিং করা প্রয়োজন। ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা সদরের মুদি দোকানদার জহির উদ্দিন বলেন,নিয়ম কানুন মেনেই মুদি মালের পাশাপাশি গ্যাসের সিলিন্ডার বিক্রয় করছি। এলাকার সচেতন মহল মনে করেন, প্রশাসন সু-দৃষ্টি দিলে ও বাজার মনিটরিং করলে ঝুকিপূর্ণ এ গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যাবসা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

  • ব্রাহ্মণপাড়া