বুড়িচং উপজেলা সদর থেকে জগতপুর ও সাদকপুর হয়ে শ্যামপুর পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার রাস্তার কাজ প্রায় ২ বছরেও শেষ হয়নি। রাস্তাটি বিগত ২২ বছর ধরে সংস্কার ও মেরামত করা হয়টি। দীর্ঘদিন রাস্তাটি সংস্কার না হওয়ায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে জগতপুর, সাদকপুর, দক্ষিণ শ্যামপুর, উত্তর শ্যামপুর ও মালাপাড়াসহ প্রায় ৭/৮ গ্রামের মানুষ। ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা এবং বাড়ছে ভোগান্তি। বুড়িচং উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বুড়িচং তুলা গাছের নিচ থেকে জগতপুর, সাদকপুর হয়ে দক্ষিণ শ্যামপুর গোমতীর বাঁধ পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার সড়ক/রাস্তা পাকাকরণের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয় ১ কোটি ৮৬ লক্ষ ১৭ হাজার ২২১ টাকা। চুক্তিনুযায়ী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজ শেষ করার কথা ২০ মার্চ ২০২৩ সালে। মিলিনিয়াম ডেভেলপমেন্ট নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রোপাইটর মো. বাহা উদ্দিন আহমেদ কাজ শুরু করে ২০২২ সালের জুন মাসে। গতকাল সরেজমিনে গেলে স্থানীয়রা জানায়, এ রাস্তার কাজটি অনিয়ম দিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। পুরনো গার্ডওয়ালের ভিতর এবং বাহির উভয় পাশ থেকে মাটি কেটে রাস্তাটি বেঁধেছে। রাস্তাটি ১২ ফুট প্রস্থ হওয়ার কথা থাকলেও কোন জায়গা দিয়ে রাস্তার প্রস্থ ১২ ফুট নেই। কোথাও ৯ ফুট কোথাও আবার ৭ থেকে ৮ ফুট। সরেজমিনে দেখা যায় রাস্তার পুরনো পিসগুলো উল্টিয়ে সমান করে ফেলে রেখেছে অনেক দিন ধরে। সড়কে অনেক জায়গায় ইটের খোয়া বিছানোর পর হঠাৎ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। সড়কে ইটের খোয়া দেওয়ায় পথচারী ও যানবাহন চলাচলে বিঘœতা ঘটছে। ব্যাটারিচালিত রিকসা ও থ্রি-হুইলার উল্টে প্রায়ই ছোট ছোট দুর্ঘটনাও ঘটছে। তারই মধ্যে রাস্তার উপরে তৈরি হয়েছে ছোট বড় খানাখন্দ। সাদকপুর গ্রামের বাসিন্দা জি. এম. মহসিন বলেন, এ রাস্তার সমস্যাটা দীর্ঘদিনের। আমি ২০০২ সালে যখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি তখন রাস্তাটি পাকা হয়েছে। তা প্রায় ২২ বছর আগের কথা। এই রাস্তাটি দ্রæত সংস্কার করে এই জনপদের মানুষকে দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্যে দায়িত্বশীল মহলকে অনুরোধ করছি। রেজাউল করিম নামের আরেক পথচারী বলেন, ঠিকাদারসহ সংশ্লিষ্ট কারো এই সড়ক নিয়ে মাথা ব্যথা নেই। সামান্য ৪ কিলোমিটার রাস্তা করতেই ২ বছরের মতো সময় পার করে দিয়েছে। তারপরেও কাজ শেষ হওয়ার নাম গন্ধ নাই। কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের উদাসীনতায় কাজ শেষ না হওয়ায় চরম দুর্ভোগে চলাচলকারীদের। আমরা দীর্ঘদিন এ রাস্তাটির কারণে কষ্ট পাচ্ছি। আমাদের কষ্ট কেউ দেখে না। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মিলিনিয়াম ডেভেলপমেন্টের মো. বাহা উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিল পাচ্ছি না তাই কাজ বন্ধ ছিলো। কাল মাল যাবে দুই এক দিনের মধ্যে কাজ চালু হবে। আমার লস হলেও কিছু করার নাই আমাকে কাজটা করতে হবে। বুড়িচং উপজেলা প্রকৌশলী আলিফ আহমেদ অক্ষর ট্রেনিংয়ে থাকায় তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। বুড়িচং উপজেলা সাব এসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার মঈন উদ্দিন বলেন, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে কয়েকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। সে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী দিয়ে কাজ করায় কাজটি বন্ধ আছে। এখন যদি কাজ না হয় তাহলে সরকারের কোন লস হবে না। উনি জামানত দিয়ে রেখেছে উনারি সব চেয়ে বেশি লস হবে। বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাহিদা আক্তার বলেন, বর্তমানে জিনিসপত্রের দাম অনেক বাড়া ঠিকাদার তার বাজেটের মধ্যে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করতে চাচ্ছে তাই ইঞ্জিনিয়ার রোডের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে।পুনরায় নির্মাণ সামগ্রী স্টিমেইট করে নতুন করে মন্ত্রণালয়ের কাগজপত্র পাঠাবো। এ পর্যন্ত সবাইকে কষ্ট করতে হবে। আমি জেনে শুনে দুই নাম্বার সামগ্রী দিয়ে কাজ করতে দিতে পারি না।