কুসিক উপনির্বাচনে প্রতীক পেয়ে চার মেয়র প্রার্থীর প্রচারণায় উৎসবমুখর নগরী

লেখক: নেকবর হোসেন
প্রকাশ: ৭ মাস আগে

Spread the love

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) মেয়র পদে উপনির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দের মধ্য দিয়ে ভোটের মাঠে প্রার্থীদের লড়াইয়ের দিনক্ষণ গণনা শুরু হয়ে গেছে। প্রতীক হাতে পেয়েই নির্বাচনি প্রচারণায় মাঠে নেমেছেন প্রার্থীরা। দুপুর ২টার পর থেকে প্রার্থীদের পক্ষে নগর এলাকায় মাইকে প্রচার-প্রচারণা শুরু হয়েছে। প্রার্থীদের প্রচারণার প্রথম দিনেই উৎসবমুখর হয়ে ওঠে নগরী। শুক্রবার (২৩ ফেব্রæয়ারি) কুমিল্লার আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে সকাল ৯টা থেকে মেয়রপদে চার প্রার্থীর মাঝে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া শুরু করেন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন। নির্বাচনে চার মেয়র প্রার্থীর মধ্যে মনিরুল হক সাক্কু টেবিল ঘড়ি, ডা. তাহসিন বাহার সূচনা বাস, নিজাম উদ্দিন কায়সার ঘোড়া ও নুর উর রহমান মাহমুদ তানিম হাতি প্রতীক পেয়েছেন। মেয়র পদে এ উপনির্বাচনে মনিরুল হক সাক্কু ও নিজাম উদ্দিন কায়সার বিএনপির রাজনীতি করেন। ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত কুসিকের নির্বাচনে সাক্কু ও কায়সার বেশ আলোচনায় ছিলেন। এবারও গতবারের একই প্রতীকে এই দুই প্রার্থী অংশ নেওয়ায় আবারো আলোচনায় ওঠে এসেছেন। ২০২২ সালের ১৫ জুনের কুসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আরফানুল হক রিফাতের কাছে মাত্র ৩৪৩ ভোটে পরাজিত হন মনিরুল হক সাক্কু। ওই নির্বাচনে ঘোড়া প্রতীকে প্রায় ৩০ হাজার ভোট পেয়ে তুমুল আলোচনায় স্থান করে নেন নিজাম উদ্দিন কায়সার। এছাড়া এবারে প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ডা. তাহসীন বাহার সূচনা ও নুর উর রহমান মাহমুদ তানিম। একই ঘরণার রাজনীতিতে যুক্ত এই দুই প্রার্থীর মধ্যে ভোটের লড়াইয়ে নতুন মুখ তাহসীন বাহার সূচনা কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং দ্বিতীয় বারের মতো কুসিক নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধীতা করা নুর উর রহমান মাহমুদ তানিম কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা। এদিকে শুক্রবার ঘোড়া প্রতীক পেয়ে নিজাম উদ্দিন কায়সার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে বের হয়ে প্রচারণা শুরু করেন। তিনি নেতাকর্মীদের নিয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে আসেন। কায়সার বলেন, যারা সাংবিধানিক নিয়ম অনুযায়ী দায়িত্বে আছেন, তারা নির্বাচনে আসতে পারেন না, তারা যেন প্রচার-প্রচারণায়ও না আসেন। আমি নির্বাচন কমিশনকে বিষয়টি জানিয়েছি। গত বছর সারা দেশে একটা ডামি নির্বাচন হয়েছে। এই নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে যায়নি। কুমিল্লার মানুষও তাই জিম্মিদশায় আছে। কুমিল্লার নাগরিকরা এ থেকে মুক্ত হতে চায়। আর মুক্তির একটিই উপায় আছে, তা হলো ভোট দিয়ে পরিবর্তন করা। কুমিল্লার মানুষ জিম্মিদশা থেকে মুক্ত হতে নির্বাচনে আসবেন এটি আমি বিশ্বাস করি। আর পরিবর্তনের অঙ্গীকার নিয়ে আমি মেয়র পদে নির্বাচন করছি। আমি বিশ্বাস করি লুটপাটের এই নগরীকে বাঁচাতে নগরবাসী এবার ঘোড়া প্রতীককেই বেছে নেবে। অপরদিকে নির্বাচন কার্যালয় থেকে বাস প্রতীক নিয়ে ফিরে নগরীর পুলিশ লাইনস হয়ে কান্দিরপাড় সড়কে প্রচারণা চালিয়েছেন মেয়র প্রার্থী তাহসিন বাহার সূচনা। তিনি বলেন, আমি রাজনৈতিক পরিবারের মেয়ে। এবার আমাকে মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সমর্থন দিয়েছে। আমি দীর্ঘদিন থেকেই সামাজিক ও মানবিক কাজ করে আসছি। কুমিল্লা নগরীকে একটি পরিকল্পিত ও স্মার্ট নগরীতে গড়ে তুলতে চাই। আমি বিশ্বাস করি, নগরবাসি তাদের ভোটের রায়ে বাস প্রতীকে বিজয় এনে দেবে। এরপর নির্বাচন কার্যালয় থেকে হাতি প্রতীক নিয়ে বের হন নূর-উর রহমান মাহমুদ তানিম। তিনি নগরীর ফৌজদারি মোড়ে এসে নেতাকর্মীদের নিয়ে দীর্ঘক্ষণ অবস্থান করেন এবং প্রচারণা চালান। সবশেষে মনিরুল হক সাক্কুর পক্ষে তার প্রতিনিধি টেবিল ঘড়ি প্রতীক নিয়ে নির্বাচন কার্যালয় থেকে বের হয়ে সমর্থকদের নিয়ে মিছিল করে প্রচারণা চালান। এছাড়াও কালিয়াজুড়ি মাজার সংলগ্ন মসজিদে জুমার নামাজ শেষে টমসমব্রীজ কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবর জিয়ারত শেষে প্রচারণায় নামেন টেবির ঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু। প্রসঙ্গত, কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাত ২০২৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর মারা যান। তার মৃত্যুতে শূন্য হওয়া মেয়র পদে আগামী ৯ মার্চ ইভিএমে ভোট গ্রহণের মাধ্যমে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে

  • কুমিল্লা