কুমিল্লায় ডাকাতি মামলায় চারজনকে ১০বছরের কারাদণ্ড

লেখক: নেকবর হোসেন
প্রকাশ: ১ বছর আগে

Spread the love

যাত্রী বেশে বাসে উঠে ধারালো চা-পাতি ও ছুরি দিয়ে ভয়ভীতি দেখানোসহ গুরুতর আঘাত করে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, মোবাইল সেট ও হাতঘড়ি ডাকাতি করে নিয়ে যাবার অপরাধে চারজনের প্রত্যেককে দু’টি ধারায় ১০বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন কুমিল্লার আদালত। গত বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) কুমিল্লার বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পঞ্চম আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর হোসেন এ রায় দেন। দণ্ড প্রাপ্তরা হলেন- নারায়ণগঞ্জ জেলার হীরাঝিল গ্রামের মৃত মোঃ আজিজ এর ছেলে রাতুল ওরফে কাউছার,একই জেলার (তারার কান্দি) গ্রামের সিরাজ উদ্দিনের ছেলে জামসেদ মোল্লা, (তারাব) গ্রামের সরুফ মিয়ার ছেলে মোঃ সফিকুল ইসলাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর দক্ষিণ পৈরতলার আঃ হাকিম এর ছেলে ইলিয়াস প্রকাশ সুমন প্রকাশ গিয়াস উদ্দিন। মামলার বিবরণে জানাযায়- ২০১০ সালের ২০ জুলাই ঢাকা সায়দাবাদ বাসষ্ট্যান্ড হতে “কর্ডোভা” বাস নং- ঢাকা মেট্রো-ব-১১-০৬০০ ছেড়ে যাওয়ার প্রাক্কালে পুলিশ গাড়ীটি চেক করে নামার পর ডাকাতদল যাত্রীবেশে বাসে উঠে। রাত ১টার সময় মেঘনা ব্রিজ অতিক্রম করার পরপরই ডাকাত দলের কাছে থাকা চা-পাতি ও ছোরা বের করে সবাইকে চুপচাপ বসে থাকতে বলে। এরপর বাসটির চালককে গাড়ীর ষ্টেয়ারিং থেকে উঠিয়ে ডাকাতদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর যাত্রীদের উপর অতর্কিত হামলা শুরু করে। ডাকাতরা যাত্রীদের নিকট থেকে টাকা-পয়সা, মোবাইল স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়া যায়। ডাকাতদল বাসটিতে ডাকাতি করাকালে বাসটি মুন্সিগঞ্জ জেলার ভবেরচর পৌছলে বাসে অন্ধকারের যাত্রীদের শোর চিৎকার করিলে ভবেরচর হাইওয়ের পুলিশ বাসটি পিছু ধাওয়া করে এবং বাসটি ওভারটেক করে দাউদকান্দি আসলে দাউদকান্দি থানা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ গৌরীপুর বাস ষ্ট্যান্ডে পৌঁছামাত্র ডাকাতরা পালানোর সময় পুলিশ ও জনগণ ডাকাতদের ধরে তাদের দেহ তল্লাশি করে লুন্ঠিত মোবাইল, টাকা ও স্বর্ণালংকার এবং ডাকাতি কাজে ব্যবহ্নত চাপাতি ও ছোরা উদ্ধার করে। এ ব্যাপারে ২০১০ সালের ২০ জুলাই চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলাধীন চন্দ্রাকান্দি গ্রামের মৃত হযরত আলীর ছেলে মোঃ কামাল হোসেন (৪০) বাদী হয়ে ধৃত ডাকাত রাতুল ওরফে কাউছার, জামসেদ মোল্লা, মোঃ সফিকুল ইসলাম রফিক ও ইলিয়াস প্রকাশ সুমন প্রকাশ গিয়াস উদ্দিন এবং পলাতক ডাকাত মোঃ ফারুক (২২) ও সোলায়মান (২৫)সহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪/৫ জনকে আসামি করে দাউদকান্দি থানায় একটি ডাকাতি মামলা করলে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সালাহ উদ্দীন ঘটনার তদন্তপূর্বক আসামীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষে আনীত অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ২০১১ সালের ১৫ এপ্রিল বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরবর্তীতে মামলাটি বিচারে আসলে ২০১২ সালের ১২ নভেম্বর আসামীদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট ধারায় বিধানমতে চার্জ গঠন করলে রাষ্ট্রপক্ষে আনীত ১৭জন সাক্ষীর মধ্যে ১০জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানীর পর উল্লেখিত আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আসামি রাতুল ওরফে কাউছার,জামসেদ মোল্লা, মোঃ সফিকুল ইসলাম রফিক, ইলিয়াস প্রকাশ সুমন প্রকাশ গিয়াস উদ্দিনের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩৯৫/৩৯৭ ধারার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় দণ্ডবিধির ৩৯৫ ধারায় তাদের প্রত্যেককে দোষী সাব্যস্তক্রমে সাত বৎসরের সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা অর্থ দণ্ড, অনাদায়ে ৬ (ছয়) মাসের কারাদণ্ড এবং দণ্ড বিধির ৩৯৭ ধারায় প্রত্যেককে তিন বৎসরের সশ্রম কারাদণ্ড ও তিন হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং আসামি সোলাইমান এর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে অভিযোগের দায় হতে খালাস প্রদান করেন আদালত। রায় ঘোষণা কালে আসামিরা কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অতিরিক্ত পিপি ও এডভোকেট মোঃ রফিকুল ইসলাম এবং আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এডভোকেট মোঃ তৌহিদুল ইসলাম বাবু।

  • কুমিল্লা