আমরা এমন নেতা চাই না যিনি বিভিন্ন ওয়ার্ডের সভাপতি সেক্রেটারি কে চিনেন না- অধ্যক্ষ মোঃ নজরুল ইসলাম

লেখক: স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১২ মাস আগে

Spread the love

সম্প্রতি দৈনিক ব্রাহ্মনপাড়া বুড়িচং সংবাদ পত্রিকার আয়োজনে ফেইস টু ফেইস অনুষ্ঠানের সাথে একান্ত আলাপকালে সিদলাই আমির হোসেন জোবেদা ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা দূর্নীতি দমন কমিটির সভাপতি এবং ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা কলেজ শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোঃ নজরুল ইসলাম ব্রাহ্মণপাড়া- বুড়িচং উপজেলার বিভিন্ন সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, আমরা যখন লেখা-পড়া করি তখন আমাদের দেশের ছাত্ররাজনীতিতে অচলাবস্থা ছিল।১৯৮৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখা-পড়া করার সময় অর্থাৎ আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২য় বর্ষের ছাত্র তখন বড় ভাইদের হাত ধরে রাজনীতিতে চলে আসি।পড়া লেখা শেষ করে আসার পর আমি আমির হোসেন জোবেদা ডিগ্রী কলেজে যোগদান করি। কলেজে চাকুরীকালীন সময় প্রয়াত জননেতা এডভোকেট আবদুল মতিন খসরু এমপি সাহেবের আন্তরিকতায় ও ভালোবাসায় মুগ্ধ হয়ে আমি ব্রাহ্মণপাড়া রাজনীতিতে যোগদান করি। পরবর্তীতে আমি যুবলীগের দায়িত্ব পালন করি, তারপর আমি আওয়ামীলীগে যোগদান করে দলীয় কার্যক্রমের সাথে আজও সক্রিয় ভাবে কাজ করছি। খসরু ভাই ছিলেন একটি পরশ পাথরের মতো। তার কাছে যে কেউ গেলেই খাঁটি সোনায় পরিণত হয়ে যেত। আমি শিক্ষক পরিবারের সন্তান। আমার বাবা হাবিবুল্লাহ প্রধান শিক্ষক ছিলেন। আমি শিক্ষকতায় আসার আগেই রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হয়ে যাই। তবে শিক্ষকতা পেশায় আসার পর আমি আমার কলেজের শিক্ষার্থীদের কাছে শিক্ষক হিসেবেই থাকতে চেয়েছি। শিক্ষকতাই আমার আসল পরিচয়-এটাই আমি চাই। শ্রেণী কক্ষে কিংবা আমার কলেজ ক্যাম্পাসে আমাকে সবসময় রাজনীতি মুক্ত রাখতে চেয়েছি। আমাদের দুই উপজেলার দুই নক্ষত্র ছিলেন অধ্যাপক মোঃ ইউনুস এমপি ও এডভোকেট আবদুল মতিন খসরু এমপি। তাদেরকে দুই উপজেলার মানুষ মন থেকে ভালোবাসতো। তাই তারা প্রায় ৫০ বছর দুই উপজেলার নেতৃত্বে ছিলেন। অধ্যাপক মোঃ ইউনুস একজন ভালো মানুষ ছিলেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধে গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তাকে আমরা বিভিন্ন সময় এম.পি হিসেবে দেখেছি। কখনো আওয়ামীলীগের এমপি আবার কখনো বিএনপির এমপি ছিলেন। তিনি একজন স্বচ্ছ রাজনীতিবিদ ছিলেন। এছাড়া তিনি একজন শিক্ষক ছিলেন। নিজের উদ্যোগে একটি কলেজ করেছেন। এক কথায় তিনি মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন। তাই মানুষ তাকে ভালোবাসতো। অপর দিকে এডভোকেট আবদুল মতিন খসরু ছিলেন আরেক দিকপাল। তিনি একাধারে একজন মুক্তিযোদ্ধা, একজন আইনজীবি ও রাজনীতিবিদ। তারা দুইজনেই ছিলেন শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব। আবদুল মতিন খসরু সাহেব বুড়িচং ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে রাস্তা ঘাট, ব্রীজ-কালভাট সবকিছুতে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগিয়ে গেছেন। তাদের শূন্যতা আমারা কোন ভাবেই পূরণ করতে পারবো না। তাদের আচরণে মানুষ মুগ্ধ হতেন। এছাড়া এডভোকেট মফিজ উদ্দিন, এডভোকেট আমির হোসেন ও মেজর গণিসহ যারাই আমাদের বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়াকে দেশ ও জাতির সামনে তুলে ধরেছেন, বিভিন্ন সময় নেতৃত্ব দিয়েছেন, তারা সবাই ছিলেন ভালো মানুষ ও ভালো গুণের অধিকারী। তারা প্রত্যেকে নিজস্ব কিছু গুণাবলির অধিকারী ছিলেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে মানুষ তাদেরকে আজও স্বরণ করে। ভালোর কোন বিকল্প নেই। বুড়িচং ব্রাহ্মণপাড়া মেজর গণি থেকে শুরু করে মতিন খসরু পর্যন্ত যারাই আসছে সবাই ভালো মানুষ ছিলেন। আমরা আশাবাদী আগামী দিনে বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়ায় তাদের মতো কাউকে পেয়ে যাব। সারা বাংলাদেশেই গ্রæপিং হচ্ছে। যারা দীর্ঘদিন ধরে দলীয় দায়িত্ব পালন করেছে এবং নেতৃত্বকে নিজের হাতে ধরে রেখেছে, তারা চাইবে তাদের হাতেই নেতৃত্বটা থাকুক, আবার যারা নতুন এসেছে তারা চাইবে তাদের একটি নতুন স্থান তৈরি হোক। এই নিয়েই মূলতঃ গ্রæপিংয়ের সৃষ্টি হয়। দলের মধ্যে যদি গণতন্ত্র থাকতো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নেতা নির্বাচন করা হতো-তাহলে গ্রুপিং বলতে কোন শব্দ থাকতো না। নেতাদের অবশ্যই দায়িত্ব সকলকে ম্যানেজ করে নেতা হওয়ার। আমাদের যারা পূর্ববর্তী নেতা ছিলেন তারা সকলের কথা শুনতেন এবং তাদেরকে ম্যানেজ করেই রাজনীতি করেছেন। আমরা এ রকম একটা নেতা চাই যারা সকলের নেতা হওয়ার য্যেগ্যাতা আছে। আজকে দেখবেন অনেক নেতার জন্ম হয়েছে। তাদেরকে আমি যদি প্রশ্ন করি ৮ ইউনিয়নের সভাপতি ও সেক্রেটারী এবং ৭২টি ওয়ার্ডের সভাপতি ও সেক্রেটারীর নাম তারা বলতে পারবে না। আমি নিজেকে দেখতে চাই মানুষের কাতারে। আমি এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যান হতে চাই না। আমি ভালো মানুষদের সাথে থাকতে চাই। আমাদের প্রয়াত নেতা আবদুল মতিন খসরু চলে যাওয়ার পর তার শুন্যতা পূরণ করার জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনা অনেক প্রার্থীদের মধ্য থেকে আবদুল মতিন খসরু দীর্ঘদিনের সহচর এডভোকেট আবুল হাসেম খানকে মনোনীত করেছিলেন। তাকে মনোনীত করার পর বুড়িচং ব্রাহ্মণপাড়ার সকল গ্রæপ মেনে নিয়েছিল । তিনি একজন ভালো মানুষ ও একজন ভালো আইনজীবি। এই মাঠে দীর্ঘদিন শ্রম ঘাম দিয়ে গেছেন। তবে তিনি যদি সাংগঠনিক কাজগুলোকে আরো ভালো ভাবে হাল ধরতেন তাহলে সংগঠন আরো মজবুত হতো ও শক্তিশালী হতো। আমি চাই আগামীতে একজন ভালোমানুষ আমাদের নেতৃত্বে আসুক। তবে যে জনগনের কল্যাণে ও এলাকার উন্নয়নে কাজ করবে তাকেই আমরা চাই।

  • ব্রাহ্মণপাড়া