আধূনিক যন্ত্রপাতির ছোঁয়ায় বিলিন হয়ে যাচ্ছে কামার শিল্প

লেখক: স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ৯ মাস আগে

Spread the love

“বছরে একবারই বংশপরম্পরায় পাওয়া আমাদের ব্যবসায় জোয়ার আসলেও পুরো বছর জুড়েই চলে আমাদের ব্যবসায় ভাটা। আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে বানানো লৌহ সরঞ্জাম বাজারে সয়লাব হওয়ার কারণে আমাদের ব্যবসা অত্যন্ত খারাপ। আমরা কেউ ভালো নেই।” আক্ষেপ করে এ কথাগুলো বলেছেন কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার কামার শিল্পী প্রমোদ কর্মকার ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার চান্দলা বাজারের কামার শিল্পী কালীপদ কর্মকার। সরেজমিনে গিয়ে বিভিন্ন উপজেলায় দেখা গেছে, কুমিল্লায় কামার পল্লীতে তেমন নেই টুংটাং শব্দের সঙ্গীত। কামার পল্লীতে যেনো নেমে এসেছে চিরকালীন শীতকাল। যতেœর অভাবে যন্ত্রপাতি ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এদিক ওদিক। এ ব্যপারে বুড়িচং উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের শংকুচাইল বাজারের প্রমোদ কর্মকার জানান, আগের মতো এই ব্যবসায় কর্মকাররা টিকে থাকতে পারছেন না। কয়লাও তেমন পাওয়া যায় না, আর কয়লা পেলেও দাম অত্যধিক বেশি। এ ব্যবসায় থেকে পরিবার পরিজন নিয়ে খেয়ে বেঁচে থাকা সম্ভব হচ্ছে না, তাই দিন দিনই বাপ দাদা থেকে বংশপরম্পরায় পাওয়া এই ব্যবসা থেকে সরে যাচ্ছেন অনেকেই। খুঁজে নিচ্ছেন অন্য পেশা। এভাবে সময়ের পরিক্রমায় হারাতে বসেছে আদিকাল থেকে চলে আসা কামার শিল্প। ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার চান্দলা বাজারের কালীপদ কর্মকার বলেন, “আমার দুই ভাই মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার রামচন্দ্রপুরে পারিবারিক ঐতিহ্য ধরে রখার জন্য বংশপরম্পরায় পাওয়া এই ব্যবসা ধরে রেখেছে। আমার তিন ছেলে আমার মতো এ ব্যবসায় জড়িত হয়নি। এরা নিজেরা পরিস্থিতির কারণে ভিন্ন ভিন্ন পেশায় জড়িয়ে পড়েছে। এ ব্যপারে কুমিল্লা সদর চকবাজার আরেক কামার শিল্পী রতন কর্মকার বলেন, “বাপ দাদার সম্মান ধরে রাখতে গিয়ে আমরা এ পেশা থেকে সরতে পারিনি। আমাদের মধ্যে অনেকেই এ পেশা থেকে সরে পড়েছে।” অন্য এক কামার শিল্পী উত্তম কর্মকার বলেন, ” দিন দিন আমরা এ পেশায় জড়িতরা কোনঠাসা হয়ে পড়ছি। আধুনিক যন্ত্রপাতির কারণে আমরা কেউ ভালো নেই। “

  • কুমিল্লা